মাতবর বাড়ির বধ্যভূমি
সর্ব প্রথম একাত্তরের ২৬ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনীর ছত্রীসেনারা পটুয়াখালী দখল করে। পটুয়াখালী শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিন-পশ্চিমে মাতবর বাড়ির ছেলে এবং ৬৭-৬৮ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম মাতবর বলেন, “আমাদের বাড়ির (মাতবর) পশ্চিম পাশে পাকিস্তানি ২টি বিমান থেকে ছত্রী সেনা নেমে জঙ্গলে আশ্রয় নেওয়া বাড়ির শিশু-নারী-পুরুষদের ওপর গুলি চালায়। এতে ১৯ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১৮জনই আমার ৪ চাচা, ২ বোনসহ স্বজন। ১ জন ছিলেন রাজমিস্ত্রি”।
“যখন আমার স্বজনদেরকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে তখন বেলা সাড়ে ১১টা। আমি ছিলাম শহরে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। এ ঘটনা শুনে যখন আমি নিউমার্কেট আসলাম তখন আমাদের বাড়ির প্রতিটি ঘরে আগুন জ্বলছে। প্রাণ ভয়ে আমি আর সামনে এগুইনি”।
“যখন পাকসেনারা অন্য এলাকায় চলে যায় ততক্ষনে লাশ পচে গলে একাকার। ওই অবস্থায়ই তাঁদের মাটিচাপা দেওয়া হয়”।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্যে বলা হয়েছে, যুদ্ধের আট মাসে পাক হানাদাররা ও তাঁদের দালালরা এখানে শতশত বাঙালিকে নির্বিচারে হত্যা করে। এ সমস্ত শহীদদের লাশ কিছু তাঁদের আত্মীয়-স্বজন নিয়ে গিয়ে দাফন করে। অন্যদের লাশ মাতব্বর বাড়ীর গণকবরে দাফন করা হয়। (সূত্র: একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর – সুকুমার বিশ্বাস, পৃ.-১১৫, ৪৫৩; যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ- ডা. এম এ হাসান, পৃ.-৪২৭; মুক্তিযুদ্ধ কোষ, দ্বিতীয় খণ্ড- মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত, পৃ.-৩৪০; দৈনিক সংবাদ, ১৯ ডিসেম্বর ১৯৯৩)