সৈয়দপুর গোলাহাট বধ্যভূমি
অপরদিকে সৈয়দপুর শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রামেশ্বর লাল আগরওয়ালা, মুরলিধর আগরওয়ালা, দুর্গাপ্রসাদ আগরওয়ালা, বিমল আগরওয়ালা, তিলক কেডিয়াসহ ৩৩৭ জনকে ৭ এপ্রিল তাঁদের বাড়ি থেকে সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্টে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা দুই মাস ছয়দিন তাঁদেরকে সেনানিবাসে আটকে রেখে চালানো হয় বর্বর নির্যাতন। অবশেষে ১৩ জুন বিকেলে সেনানিবাস থেকে বের করে নিয়ে আসা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে। ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে ট্রেনে তুলে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে গোলারহাটে ট্রেন থামিয়ে তাঁদেরকে নামানো হয়। ট্রেনের চারদিকে পুলিশ পাহারা দিয়ে ছিল। পাকসেনা ও তাঁদের দোসর বিহারিরা ট্রেনে ছিলো। এ সব নিরীহ মানুষকে গুলি করে ও তরবারি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। স্বাধীনতার পর এই বধ্যভূমি থেকে শহীদদের ব্যবহার্য অনেক সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। সেই শহীদদের স্মরণে ২০১১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্থানীয় বাসিন্দারা গোলাহাটে কলাগাছ দিয়ে শহিদ মিনার বানিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পন করে।
অন্যসূত্রে বলা হয়েছে, সৈয়দপুর রেল স্টেশনের অদূরে গোলাহাটে ১৩ জুন সৈয়দপুর বসবাসরত মাড়োয়াড়ী সম্প্রদায়ের প্রায় সাড়ে চারশত মানুষকে ভারতে পৌছে দেয়ার নাম করে পাকবাহিনী ও তাঁদের সহযোগী স্থানীয় বিহারিরা সৈয়দপুর রেল স্টেশনে জড়ো করে এবং ট্রেনে করে তাঁদের দুই মাইল উত্তরে গোলাহাটের কাছে নিয়ে যায়। এরপর সেখানকার কালভার্টের ওপর ট্রেনটি থামিয়ে তাঁদের নির্মমভাবে হত্যা করে। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্য সূত্র: দৈনিক সংবাদ, ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৮; মুক্তিযুদ্ধ কোষ, দ্বিতীয় খণ্ড – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত, পৃ.-৯৬; যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ- ডাঃ এম এ হাসান, পৃ.-৪০৯; একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর – সুকুমার বিশ্বাস, পৃ.-৭৯, ৮০, ৫১০-৫১১)