You dont have javascript enabled! Please enable it!

বন্দর গণহত্যা

১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল ভোরে বন্দর উপজেলার সিরাজদৌল্লাহ ক্লাব মাঠে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ৫৪ জন নারি-পুরুষকে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। হত্যার পর লাশগুলো গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে তারা। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় বাড়িঘর।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী ও যুদ্ধকালীন সময়ে বন্দর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাজী গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জানান, ১৯৭১ সালের ৪ঠা এপ্রিল ভোরে নৌপথে এসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে বন্দরে আক্রমণ চালায়। তারা বন্দর সিরাজদৌল্লাহ ক্লাব মাঠে সাধারণ ৫৪ জন নারী-পুরুষকে ধরে এনে এক সারিতে দাঁড় করিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে। হত্যার পর লাশের উপর মুলি বাশের বেড়ার দিয়ে গান পাউডার দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বন্দর আমিনপুর, সোনাকান্দা ডকইয়ার্ড, র‍্যালিবাগান, সিএসডি, ইস্পাহানিসহ বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্প করে। তারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ চালাতো। ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে নবীগঞ্জ থেকে বন্দর স্টেশন পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তাঁদের যুদ্ধ হয়। পাকিস্তানিরা বাংকার থেকে বেরিয়ে এসে আক্রমণ করে। ব্রাশফায়ারে মিত্র বাহিনীর ৮ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়। ২ মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়। ঐ দিন বিকেল থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পালিয়ে যায়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা নবীগঞ্জে ১৫ রাজাকারকে ধরে হত্যা করে।

সেদিনের ঘটনায় শহিদ হওয়া ৫৪ জনের ২৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এঁরা হচ্ছে, ছমিরউদ্দিন সরদার, মন্তাজ উদ্দিন মাস্টার, আলী আকবর, রেজাউল ইসলাম, বাবুল, আমির হোসেন, নায়েব আলী, আলী হোসেন, ইউসুফ আলী, সুরুজ চন্দ্র, যবুনা চন্দ্র কানু, লছমন চন্দ্র কানু, কানাই লাল কানু, গোপাল চন্দ্র, ভগবত দাস, দুগচিরন প্রসাদ, নারায়ণচন্দ্র প্রসাদ, ইন্দ্রচন্দ্র দাস, সুরেশ চন্দ্র দাস, দিগেন্দ্র চন্দ্র বর্মন, বনেল চৌধুরী, মোবারক, হারাধন মাস্টার, নারায়ণ চৌধুরী, বাদশা খান, পরেশ খান।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!