ধামরাই বধ্যভূমি
আতাউর রহমান স্কুল সংলগ্ন, কালামপুর বাজার, ধামরাই, ঢাকা। ঢাকা জেলার ধামরাই থেকে মাইল কয়েক দূরে কালামপুর বাজার। এই বাজারের পাশেই আতাউর রহমান হাই স্কুলের মাঠ সংলগ্ন একটি খাল রয়েছে। এই খালের উপর যে কাল্ভার্ট সেখানে দাঁড় করিয়ে প্রায় ১৪ জনকে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী। যুদ্ধের সময় স্থানটিকে পাকিস্তানি সেনারা বধ্যভূমি হিসাবে বেছে নিয়েছিল। (মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগৃহীত তথ্য সূত্রঃ দৈনিক সংবাদ, ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২; একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর-সুকুমার বিশ্বাস, পৃ.-৩৫-৩৬; বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ দলিলপত্র, অষ্টম খন্ড-হাসান হাফিজুর রহমান সম্পাদিত, পৃ.-৪৩৯)
তবে আমাদের সহকর্মীকে কালু মিয়া নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের সংখ্যা ১৭ বলে জানিয়েছেন। ধামরাইয়ের কালামপুর বাজারের পাশে ভালুম আতাউর রহমান স্কুল এন্ড কলেজের পিছন দিকে প্রায় ৩/৪শ’ গজ এগুলেই এই বধ্যভূমিটি।
প্রত্যক্ষদর্শী কালু মিয়ার (৬০) জানান, তখন তিনি তরুণ। ঘটনাস্থলের খুব কাছেই বিকালের দিকে আউস ধানের ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করছিলেন। হঠাত গুলির শব্দ। শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে দেখার জন্য দৌড়ে আসেন তিনি। তিনি দেখতে পান ১৮টি দেহ পড়ে রয়েছে। তবে এঁদের মধ্যে একজন মরেননি। সে গুলির সময় আগেই পড়ে গিয়ে মরার ভান কয়ে শুয়ে ছিলেন। তার বাড়ি ঢাকার ধামরাইয়ে। আর নিহত ১৭জনের বাড়িও ধামরাইতেই। তাঁদের ধরে নিয়ে এসে হত্যা করা হয়। পরে লাশগুলো সে সাথে থেকে কালামপুর বাজারের পরিচ্ছন্নকর্মী নন্দ নামের এক খ্রিষ্টান ব্যক্তি নদীর পাড়ে এক সঙ্গে কবর দিয়েছিলেন।
তখন এই নদীতে কোনো সেতু ছিল না। নদীটি বংশাই, ধলেশ্বরীর শাখা নদি। এখন পুরো শুকনো। বর্ষা এলেই পানিতে ভরে যায়। (ধামরাই বধ্যভুমির ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করেছেন সেলিম উদ্দিন এবং ঢাকার অন্যান্য ছবি তুলেছেন মুস্তাফিজ মামুন, নাসিরুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামান প্রামানিক)