You dont have javascript enabled! Please enable it! চান্দ্রাকান্দি গ্রামের গণকবর - সংগ্রামের নোটবুক

চান্দ্রাকান্দি গ্রামের গণকবর

১৯৭১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধে মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্যাহপুর ইউনিয়নের চান্দ্রাকান্দি গ্রামের চার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এঁরা হলেন – সিরাজুল হক, আবদুল আওয়াল, সাইজুদ্দিন ভূঁইয়া ও দুধ মিয়া ব্যাপারী। দেশকে পাক হানাদার মুক্ত করার জন্য ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসার পথে কোতোয়ালি থানার পাকিস্তানি সেনাদের হাতে গুলিবদ্ধ হয়ে নিহত হন এই চার জন।

মতলব উত্তর উপজেলার চান্দ্রাকান্দি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী ইসমাইল হোসেন বলেন, “দেশ মাতৃকা রক্ষার জন্য গ্রামের চার মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। আমরা তাঁদের লাশ না আনতে পারলেও নিহতদের খুলি ও হাড়গোড় এনে গণকবর দিয়েছি। কিন্তু স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পার হতে চললেও তাঁদের গণকবরের কেউ খোজ নিচ্ছে না। এই জন্যই কি তারা জীবন দিয়েছিল?”

নিহত মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হকের বড় ভাই মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ১৯৬৮ সালে সিরাজুল হক এসএসসি পাশ করার পর টঙ্গীতে অলিম্পিয়া কোম্পানিতে চাকুরী নেয়। এ সময় যুদ্ধ শুরু হলে তিনি চাকুরী ছেড়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের জন্য মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। এরপর তারা প্রশিক্ষনের জন্য ভারতে যায়। প্রশিক্ষণ শেষে ভারত থেকে ফেরার পথে পাক হানাদার বাহিনীর হাতে আমার ভাই সিরাজসহ ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে যান মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মতিন। যুদ্ধচলাকালীন তিনি ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবদুল মতিন দেশে এসে আমার ভাই মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক নিহত হয়েছেন বলে সংবাদ দেন। অপরদিকে শহীদ হওয়া মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আওয়াল এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফর্ম ফিলাপ করেন, এরই মধ্যে শুরু হয়ে যায় যুদ্ধ। তিনি পরীক্ষা বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। আরেক মুক্তিযোদ্ধা সাইজুদ্দিন ভূঁইয়া নবম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করে। আর ওই যুদ্ধে তিনিও নিহত হন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দুধ মিয়া ব্যাপারী বিয়ের ১০ মাসের মাথায় যুদ্ধে অংশগ্রহন করেন।