কামানটিলা বধ্যভূমি
৫ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে পতেঙ্গায় নতুন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের রানওয়ে নির্মাণের জন্য মাটি খননকালে এর উত্তর-পূর্ব পাশে আবিষ্কৃত হয় একটি বধ্যভূমি। এই বধ্যভূমিটি ছিল এরোড্রামের বেশ কাছে। ’৯৯-এর ৬ ও ৭ ডিসেম্বর এটি খনন করে উদ্ধার করা হয় শহীদদের মাথার খুলি, হাড়গোড় ও কাপড়চোপড়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকবাহিনী পতেঙ্গা, হালিশহর, চৌধুরী পাড়া, শীলপাড়া, জেলেপাড়াসহ আশে পাশের এলাকার নিরাপরাধ বাঙালিদের নানা অজুহাতে ধরে পতেঙ্গার কামানটিলা নামক স্থানে জড়ো করে রাতের আঁধারে গুলি করে হত্যা করতো। স্বাধীনতার কিছু দিন পর তিন চার ফুট মাটি খুড়তেই এখান থেকে বেরিয়ে আসে হাড়, মাথার খুলি, কাপড়, চশমা, পরিচয়পত্রসহ নিহতদের বিভিন্ন নিদর্শন। পরে এই বধ্যভূমিতে নিহতদের পরিবারের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, কামানটিলার নিকটবর্তী শীলপাড়ার লোকদেরকে এখানে এনে হত্যা করা হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল সিভিল এভিয়েশন অফিসে কর্মরত এক বিহারি পরিবারের তিন ছেলে ও পাকবাহিনী। যুদ্ধের সমুয় এঁরা ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। গ্রামে গঞ্জে ঘুরে মেয়েদের ধরে আনাও এদের কাজ ছিল। এদের সহয়তায় পাকবাহিনী একাত্তরে শীল সম্প্রদায়ের ৩৮ জন নিরীহ মানুষকে ধরে এনে এখানে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হতো। (মুক্তিযুদ্ধ সংগৃহীত তথ্য সূত্র: যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ – ডা. এম এ হাসান, পৃ.-৩৭৯; মুক্তিযুদ্ধ কোষ, দ্বিতীয় খণ্ড – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত, পৃ.-২৭)