হাড়াতলি গণকবর
২১ নভেম্বর কুমিল্লার লাকসাম থানার হাড়াতলিতে ৩৪ জন মুক্তিযোদ্ধা অসীম সাহসিকতায় প্রতিহত করে অত্যাধুনিক অস্ত্র সজ্জিত এক বিশাল পাকিস্তানি কনভয়। খবর আসে পাকবাহিনীর ২’শ সেনার এক কনভয় গৈয়ারভাঙা যাবে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিরোধের সকল প্রস্তুতি নেয়। পার্শ্ববর্তী গ্রামের দুই প্লাটুন যোদ্ধাসহ অবস্থানরত ক্যাপ্টেন মাহাবুবের সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করেন। তিনি পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ করার নির্দেশ দেন এবং পরবর্তীতে তিনি প্লাটুন দিয়ে কভার করবেন বলে আশ্বাস দেন। তার নির্দেশ অনুযায়ী জহিরুল ইসলামের নেতৃতাধীন ৩৪ জন মুক্তিযোদ্ধা দুই দলে ভাগ হয়ে যায়। এক দল হাড়াতলি গ্রামের রাস্তার বাঁকে অবস্থান গ্রহণ করে। পাকবাহিনীর দল হাড়াতলি গ্রামের রাস্তার মোড় পর্যন্ত আসলে মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিত আক্রমণ চালায়। সঙ্গে সঙ্গে পাক সেনারাও বিপরীত দিকে চানমইল্লা নদীর এবং রাস্তার পুব্দিকের ধান ক্ষেতের মধ্যে অবস্থান নেয়। শুরু হয় যুদ্ধ। দুপুর একটা থেকে একটানা সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত চলে যুদ্ধ। এ যুদ্ধে মোখলেছুর রহমান, হারুনুর রশীদ, দেলোয়ার হোসেন, মনোরঞ্জন সিংহ, ইজ্জত আলী নামে ৫জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। তাদেরকে হাড়াতলিতে সমাহিত করা হয়। (সূত্রঃ আবুল কাশেম হৃদয় – মুক্তি সংগ্রামে কুমিল্লা; জহিরুল ইসলাম সম্পাদিত–দাবানল, কুমিল্লা, ১৯৮৩)