You dont have javascript enabled! Please enable it! মুদাফফরগঞ্জের নগরীপাড়ার গণকবর - সংগ্রামের নোটবুক

মুদাফফরগঞ্জের নগরীপাড়ার গণকবর

৭১ এর নভেম্বর লাক্সাম থানার মুদাফফরগঞ্জের নগরীপাড়ার কর্মকার বাড়িতে থাকতেন পেয়ারী মোহন স্বাধীনতার পর প্রকাশিত আঞ্চলিক পত্রিকাসাপ্তাহিক আমোদ’ – এক প্রত্যক্ষদর্শী উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, পেয়ারী মোহনের চতুর্দশী মেয়ে আরতি বালাকে অপহরণ করার জন্য একদিন রাজাকার পাকসেনারা বাড়িতে হামলা করে সেদিন কিছু টাকার বিনিময়ে তাড়া রক্ষা পান দিন পর ২৮ নভেম্বর রাত ১১টায় মাওলানা আরিফ, সত্তর এবং আলী আজম নামক তিন রাজাকারের নেতৃত্বে / জন রাজাকার এক পাকসেনা কর্মকার বাড়িতে ঢুকে ফাঁকা গুলির আওয়াজ করে 

গুলির আওয়াজ শুনে উমেশ চন্দ্র কর্মকারের স্ত্রী ঊষা রাণী ঘরের দরজা একটু ফাঁক করে দেখেন যে, কয়েকজন লোক উঠানে দাঁড়িয়ে আছে সময় অন্যান্য ঘর থেকে উমেশ চন্দ্রের বাবা যাদব কর্মকার (৭২) ভাই ভুবন চন্দ্র কর্মকার (৩৫), ক্ষেত্র মোহন কর্মকার (৩১), রাধাকৃষ্ণ কর্মকার (৬০), নিত্যানন্দ কর্মকার (২৮), অমূল্য কর্মকার (১৮) অটল বিহারী কর্মকার (৩০) কে বের করে রাইফেলের বাট দিয়ে পেটাতে থাকে হানাদাররা কয়েকজন রাজাকার বাড়ির নারীদের মারধর শুরু করে এবং আরতি বালাকে ধরে নিয়ে যায় পাঁচ পরিবারের দশজন পুরুষকে রাজাকাররা ৫শগজ দূরে একটি বট গাছের কাছে হাত বেঁধে লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে

পরদিন সকালে গ্রামের লোকজন সেখানে গিয়ে লাশগুলোর মধ্যে ভুবন চন্দ্র কর্মকারকে জীবিত অবস্থায় দেখতে পায় ভুবন চন্দ্র তার / বছরের ছেলে মানিককে জল খাওয়ানোর জন্য বলে ছেলেটি জল আনতে বাড়িতে গেলেও পার্শব্বর্তী পুলের উপর থেকে পাকসেনারা গুলি করে মানিক আর পানি আনার সুযোগ পায়নি নরপশুরা রাস্তার উপরেই গর্ত করে লাশগুলোর সঙ্গে জীবিত অবস্থায় ভুবন চন্দ্রকে মাটি চাপা দেয় (সূত্রঃ আবুল কাশেম হৃদয়, একটি গণহত্যা, বিধবার মানবেতর জীবন, দৈণিক রূপসী বাংলা, ডিসেম্বর ১৯৯৮)