You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.26 | যশােরে কয়েকজন পাকসৈন্য বন্দী - সংগ্রামের নোটবুক

যশােরে কয়েকজন পাকসৈন্য বন্দী : খুলনায় চীনা অস্ত্র হস্তগত শ্রীমঙ্গলে সামরিক জীপ ধ্বংস : রংপুরে ৬৭জন পাক সেনা খতম :

বরিশালে অস্ত্র ও সেনা বােঝাই লঞ্চ নিমজ্জিত “শ্যামলী লঞ্চ নিমজ্জিত বরিশাল বরিশালের প্রতিটি থানায় মুক্তিবাহিনী সক্রিয়। অনেকগুলাে থানা বর্তমানে মুক্তি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। পাক। সেনারা বারবার হামলা করেও এই সব থানাগুলাে দখল করতে পারেনি বলে জানা গেছে। আরাে জানা। গেছে যে, এখানের পাক সৈন্যরা আরাে সৈন্য পাঠাবার অনুরােধ জানিয়েছে। বিলম্বে পাওয়া এক খবরে জানা গেছে, কাউখালীতে ২টি অস্ত্র বােঝাই লঞ্চ মুক্তি বাহিনী ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। একটি লঞ্চের নাম “শ্যামলী”, অপরটির নাম জানা যায়নি। যশাের। মুক্তিবাহিনী কলারােয়া থানার কাকডাঙ্গা নামক স্থানে পাক হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমণ চালিয়ে বহু সৈন্য খতম করে এবং ৬ জন পাক সৈন্য ও ৭ জন রাজাকার সহ মােট ১৩ জনকে আটক করে এবং প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ময়মনসিংহ-সিলেট ১৯শে সেপ্টেম্বর তারিখে মুক্তিফৌজ মণিপুর ও লক্ষ্মীপুর এলাকায় পাক-ফেীজকে আক্রমণ করে। তাতে ৩ জন পাকসৈন্য নিহত হয়। ঐ দিনেই মুক্তিফৌজ বেরিগাও ও বাদিপতেকে পাক সৈন্যের আক্রমণ প্রতিহত করেন। ফলে ৫ জন পাকসৈন্যের মৃত্যু হয়।

একই দিনে মুক্তিফৌজ বড়গঞ্জে পাকসৈন্যের ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়ে ৪ জন পাকসৈন্য খতম করেন। ১৮ তারিখে মুক্তিফৌজ জয়ন্তীপুর এলাকায় পাকসৈন্য ও রাজাকারদের উপর গুলি বর্ষণ করে। তাতে ৪ জন পাকসৈন্য ও বহু রাজাকার খতম হয়। ঐ দিনেই রাজকী চা বাগানে আক্রমণ চালিয়ে উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। ১৩ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মুক্তিফৌজ শাহাবাজপুর চা বাগানে আক্রমণ চালিয়ে ৮ জন পাকসৈন্য খতম করে। শ্রীমঙ্গল অঞ্চলে মুক্তি বাহিনী পাক সেনাদের একখানা জীপ গাড়ি মাইন দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে। কুমিল্লা মুক্তিযােদ্ধারা বুরেন্সং এলাকায় দু’টি সড়ক সেতু ধ্বংস করে দিয়েছে। এতে রাজাপুর, ব্রাহ্মণপাড়া, হরিমঙ্গল ও বুড়িচর এলাকার সঙ্গে যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম মুক্তি যােদ্ধারা খেজুরীয়া অঞ্চলে পাক সেনাদের শিবিরে আক্রমণ চালিয়ে ৬ জন পাক সেনা ও ২ জন রাজাকার খতম করেছে। আর এক সংবাদে জানা গেছে চট্টগ্রামের উপকণ্ঠে অসম সাহসী গেরিলারা একদল পাক সৈন্যের উপর আক্রমণ করে ৪ জন পাক সেনা খতম ও ৪ জনকে আহত করেছে। রংপুর খাসিপুর ধানুয়া এলাকায় মুক্তি বাহিনীর আক্রমণে ৬৬ জন পাক সেনা নিহত হয়েছে। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ, ১৫০ জন পাক সৈন্য যখন একটি খাল অতিক্রম করেছিল তখন মুক্তি সেনারা পিছন থেকে আক্রমণ চালিয়ে এই সাফল্য অর্জন করে। ফরিদপুর (বিলম্বে প্রাপ্ত) সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মুন্সি আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে একদল মুক্তি বাহিনী গােপালগঞ্জ মহকুমার মােল্লারহাটে এক আক্রমণ চালিয়ে ২৫ জন পাকসেনা খতম করে এবং চল্লিশটি রাইফেল সহ প্রচুর গােলাবারুদ উদ্ধার করে। জানা গেছে যে কয়েকটি সামরিক ট্রাক থেকে নামার সময় মুক্তিযােদ্ধাদের মেসিন গানের গুলীতে ১৩০  জন পাক সেনা নিহত হয়েছে। ঘটনায় প্রকাশ মাটির নীচে মাইন পােতা থাকায় ট্রাকগুলিতে আগুন লেগে যায়। তখন পাকসেনারা প্রাণ বাঁচাতে চেষ্টা করে, সেই সময় মুক্তিযােদ্ধারা মেসিনগান থেকে গুলি চালায়।

বিপ্লবী বাংলাদেশ । ১ : ৭

২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯