মুক্তিবাহিনীর মান্দ্রা দখল
গত সোমবার সকালে খুলনা জেলার সাতক্ষিরা মহকুমার কলারােয়া থানায় পাকিস্তানী হানাদারদের একটি প্রধান ঘাটি মান্দ্রা মুক্তিবাহিনীর বীর যােদ্ধারা দখল করিয়া নিয়াছে। মান্দ্রার এই ঘাটিটি শত্রু কবলিত বাঙলা দেশের অনেকগুলি সীমান্ত চৌকির কেন্দ্রস্থল ছিল। রবিবার সারারাত ধরিয়া উভয় পক্ষে প্রচন্ড সংঘর্ষে দুই শতাধিক হানাদার সৈন্য হতাহত হয়। শত্রুপক্ষের একজন ব্রিগেডিয়ার খতম হইয়াছে এবং বেশ কিছু সংখ্যক পাক সৈন্য ও রাজাকার মুক্তিবাহিনীর হাতে ধরা পড়িয়াছে। এই সকল সংঘর্ষে মুক্তি বাহিনী ২টি চীনা স্বয়ংক্রিয় ও ৪টি বৃটেনের তৈরী লাইট মেশিনগান, গােটা দশেক ৩০০ রাইফেল ও বেশ কিছু তিন ইঞ্চি মর্টার পাইয়াছে। মান্দ্রা হইতে পিছু হটিয়া পাক সৈন্যরা কলারােয়া, ঝাউডাঙ্গা ও বাগাচারায় সংগঠিত হইয়াছে। তাহাদের শক্তিবৃদ্ধির জন্য যশাের ক্যান্টনমেন্ট হইতে আরও হাজার খানেক সৈন্য আনা হইয়াছে বলিয়া খবর পাওয়া গিয়াছে। মুক্তি বাহিনীও মান্দ্রায় নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করিতেছেন। কাকডাঙ্গায় সাফল্য গত ১৮ই সেপ্টেম্বর মান্দ্রার কাছেই কাকডাঙ্গায় আরও একটি তুমুল লড়াইয়ে শত্রুসৈন্যদের ৩৫ জন খতম হয়। সঙ্গে ৬০/৭০ জন রাজাকারও খতম হয় । হানাদার সৈন্যরা নিকটবর্তী গােয়ালচার গ্রামে তাহাদের ঘাটি হইতে কাকডাঙ্গায় আসিয়া মুক্তি বাহিনীর সহিত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। মুক্তিবাহিনী তাহাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিয়া দিয়াছে। সংঘর্ষ শেষে মুক্তিবাহিনী ১১ জন শত্রুসৈন্য ১১ জন রাজাকার ও ১ জন চৌকিদারকে বন্দী করিয়া মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্পে লইয়া আসিয়াছে।
মুক্তিযুদ্ধ ১ : ১২ ০
২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯