সর্বত্র বর্গীরা খতম হচ্ছে
(স্টাফ রিপাের্টার) বরিশালে মুক্তিবাহিনীর শক্তি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে খান সেনারা চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। সম্প্রতি মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে পযুদস্ত খান সেনাদের একটি দল নৌবাহিনীর সাহায্য নিতে বাধ্য হয়। রংপুর জেলার চিলমারীতে মুক্তিবাহিনী পাক টহলদার বাহিনীর একটি নৌযানের উপর হামলা চালিয়ে ছয়জন দস্যুসেনাসহ বহু সংখ্যক রাজাকারকে খতম করে। সম্প্রতি রাজশাহীর চাঁপাই নবাবগঞ্জ শহরের উপর বীর গেরিলারা মর্টার ও মেশিনগান নিয়ে হামলা চালান। সংঘর্ষে বহু রাজাকারসহ বেশ কিছু খানসেনা নিহত হয় এবং মুক্তিযােদ্ধারা হানাদার বাহিনীর বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্রও দখল করে নেন। এই ছাড়াও রাজশাহী ও নবাবগঞ্জ সহরের সড়ক সংযোেগ রক্ষাকারী হরিপুর ব্রিজটিও ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দেন। পাঁচগড় ও বাণী সাকাইলে প্রহরারত সৈন্যদের উপর আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিবাহিনী সম্প্রতি বেশ কিছুসংখ্যক পাকসৈন্যকে হত্যা করেন। সিলেটের মানিকখালি এবং সারাচর ষ্টেশনের মধ্যবর্তী একটি রেলসেতু গত এগারই সেপ্টেম্বর মুক্তি যােদ্ধারা ডিনামাইট বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি দিনাজপুরের মােগলঘাটে মুক্তিবাহিনী ও পাক সেনাদের মধ্যে সংঘটিত এক সংঘর্ষের ফলে পঞ্চাশজন খানসেনা নিহত হয়। কুমিল্লা জেলার মনিপুরে স্বাধীনতা সংগ্রামী ও দখলদার বাহিনীর সঙ্গে এক সংঘর্ষে সম্প্রতি খানসেনা নিহত হয়। কুষ্টিয়ার জটাশাহী এবং বাজমারা গ্রামে সম্প্রতি বিমান থেকে বােমা বর্ষণ করে। হানাদার বাহিনী পঞ্চাশজন শিশু ও নারী-পুরুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে গত সােমবার রাজশাহীতে মুক্তি সেনাদের সঙ্গে খান দস্যুদের এক তীব্র সংঘর্ষ ঘটে। জঙ্গীশাহীর তাবেদার বেতারকেন্দ্র পরােক্ষভাবে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে প্রচার করেছে যে, এই সংঘর্ষ ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে সংঘটিত হয়েছিল। বেতারে আরও বলা হয় যে, এই অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা ছিল আনুমানিক তিনশ জনের মত। গত ১১ই সেপ্টেম্বর সিলেট সেক্টরে মুক্তিযােদ্ধারা খান দস্যুদের উপর এক অতর্কিত হামলা চালিয়ে এগারজন খানসেনাকে বন্দী করেন।
সাপ্তাহিক বাংলা ১:১
১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯ –সাপ্তাহিক বাংলা