মুন্সিগঞ্জ মহকুমার একাংশ মুক্ত
(নিজস্ব সংবাদদাতা) ঢাকা জেলার মুন্সিগঞ্জ সাবডিভিশনের বিভিন্ন থানাতে গত জুন মাসের প্রথম দিকে ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনী প্রবেশ করে এবং শুধুমাত্র নবাবগঞ্জ ও দোহার থানাতেই অন্ততপক্ষে আড়াই শত লােককে হত্যা করে এবং নির্বিচারে বাড়িঘরে অগ্নিসংযােগ করে ও নারী নির্যাতন চালায়। সিরাজদিঘা-কেরানীগঞ্জ-জিঞ্জিরা-গজারিয়া শুভাড্যা-কালিগঞ্জ-লৌহজ প্রভৃতি থানাতে ব্যাপক গণ-হত্যা, লুটতরাজ অগ্নি সংযােগ ও নির্যাতন চালায়। জুলাই মাসের শেষের দিকে এই অঞ্চলে মুক্তি বাহিনীর প্রথম তৎপরতা শুরু হয়। মুক্তি বাহিনীর বীর যােদ্ধারা দোহার থানার ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, থানা এবং দুইটি ওয়ারলেস স্টেশনের উপর আক্রমণ চালাইয়া এইগুলি ধ্বংস করিয়া দেয়। অগস্ট মাসের প্রথম দিকে মুক্তি বাহিনীর বীর যােদ্ধারা শ্রীনগর থানায় ব্যাঙ্ক, থানা এবং পােস্ট অফিসের উপর আক্রমণ চালাইয়া অগ্নিসংযােগ করে এবং অস্ত্র শস্ত্র দখল করিয়া নেয়।
মুক্তি বাহিনীর বীর যােদ্ধারা বাড়ৈখালী, শ্রীনগর ও ষােলঘর অঞ্চলের তিন জন কুখ্যাত দালালকে হত্যা করে এবং তালতলার মিলিটারি ক্যাম্পটি জ্বালাইয়া দিয়া ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনীকে উক্ত অঞ্চল হইতে বিতাড়িত করে। সিরাজদিঘা থানায় এক আক্রমণ চালাইয়া মুক্তি বাহিনী থানা ও ব্যাঙ্ক দখল করিয়া নেয়। ইহার পর ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনী কয়েকবার উক্ত অঞ্চলে হানা দেয় কিন্তু মুক্তি বাহিনীর হাতে প্রচণ্ড মার খাইয়া প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি সহ পালাইতে বাধ্য হয়। বর্তমানে উক্ত অঞ্চল প্রকৃত পক্ষে মুক্তাঞ্চল । দালাল এবং রাজাকার বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে উৎখাত করা হইয়াছে।
মুক্তিযুদ্ধ ৪১; ৯
৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯ –মুক্তিযুদ্ধ