ভোটাভুটিতে সৃষ্ট “পাকিস্তান”
[pdf-embedder url=”https://songramernotebook.com/wp-content/uploads/securepdfs/2021/02/pak.pdf”]
১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের সম্মতিতেই উপমহাদেশ বিভক্ত হয় যার প্রক্রিয়া আগেই শুরু হয়েছিল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আপাতত দ্বিজাতি তত্ত্ব জয়ী। পাকিস্তান রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য ছিল ভৌগােলিক আকৃতি। ভারতের দু’দিকে ছিল এর সীমানা। অর্থাৎ একদিকে ছিল পূর্ব পাকিস্তান অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তান, মাঝখানে ১২০০ মাইলের ব্যবধান। এ ধরনের রাষ্ট্রগঠন ছিল বিরল। পাকিস্তানের এই দুই অংশের মানুষজনের মধ্যে ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক কোন মিল ছিল না। সেই সময় কংগ্রেস নেতা মওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন, এ রাষ্ট্র ২৫ বছরের মধ্যে ভেঙ্গে যাবে। তার ভবিষ্যতবাণী সফল হয়েছিল। এখানে অখণ্ড বাংলা কীভাবে ভাগ করা হয়েছিল এবং তার সীমানা কী ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল তা বিস্তারিত আলােচনা করা হয়েছে। মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনানুযায়ী বাংলার হিন্দু ও মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাসমূহের সংসদ-সদস্যগণ ১৯৪৭ সালের ২০ জুন পৃথক পৃথক বৈঠকে বসেন। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাসমূহের প্রতিনিধিবর্গ ১০৬: ৩৫ ভােটে অখণ্ড বাংলার প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন। অপরপক্ষে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাসমূহের প্রতিনিধিবর্গ বর্ধমানের মহারাজার সভাপতিত্বে মিলিত হয়ে ৫৮ : ২১ ভােটে বাংলার বিভক্তির পক্ষে মত ব্যক্ত করেন। ফলে বাংলা পূর্ববাংলা ও পশ্চিম বাংলা এই দুই অংশে বিভক্ত হয়। পূর্ববাংলার প্রতিনিধিবর্গ ১০৭: ৩৪ ভােটে পাকিস্তানে যােগদানের পক্ষে এবং পশ্চিম বাংলার প্রতিনিধিবর্গ ৫৮: ২১ ভােটে ভারতবর্ষে যােগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। পূর্ববাংলার যে ৩৪ জন বাংলা বিভক্তির পক্ষে এবং পাকিস্তানে যােগদানের বিপক্ষে কিন্তু ভারতে যােগদানের পক্ষে ভােট দেন তারা সকলেই ছিলেন কংগ্রেস দলীয় সদস্য। এদের মধ্যে কিরণশঙ্কর রায় অন্যতম। অপরপক্ষে পশ্চিম বাংলার যে ২১ জন বাংলা বিভক্তির বিপক্ষে ভােট দেন তারা সকলেই ছিলেন মুসলিম লীগ দলীয় সদস্য। হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী এই দলভুক্ত ছিলেন। এখানে উল্লেখ্য যে, এ. কে. ফজলুল হক ভােটাভুটিতে অংশ নেননি।
Reference:
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস | মুনতাসীর মামুন, মো. মাহবুবুর রহমান