মুক্তি বাহিনীর ভয়ে পাক সৈন্যরা পিছু হটছে
বরিশাল, ২৮শে জুলাই—গত জুন মাসের বিভিন্ন তারিখ বরিশাল জেলার গৌরনদী, গৈলা, বারণী, মেদাকুল, ঘােষের হাট, চেতনার বিল কুড়িয়ানা প্রভৃতি অঞ্চলে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তি ফৌজের সংঘর্ষ ঘটে এবং প্রত্যেকটি সংঘর্ষে মুক্তিফৌজ সাফল্যের সাথে হানাদারদের হটিয়ে দেয়। এই সকল সংঘর্ষে শতাধিক পাক সৈন্য খতম হয় এবং বহু সৈন্য জখম অবস্থায় পালিয়ে যায়। অন্য এক খবরে জানা গেছে যে বরিশাল টারমিনালে জুন মাসের প্রথম দিকে গান বােট ধ্বংস করা হয়। ২৫শে জুন হতে বরিশাল সহরের সদর গার্লস স্কুল ও চৈতন্য স্কুল, পলিটেকনিক ও সদর রােড গ্রেনেট ও হালকা মেশিন গান ব্যবহার করে মুক্তি বাহিনী বিপুল তৎপরতার সৃষ্টি করেছে। গত জুন মাসের প্রথম দিকে মুক্তি বাহিনী নলহাটি থানা আক্রমণ করে ২০ জন পাক পুলিশ ও ৮ জন পাক সেনা খতম করেছে বলে জানা গেছে। বাংলা দেশের উত্তর রণাঙ্গনের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে মুক্তি বাহিনীর প্রবল তৎপরতায় পাক সৈন্যরা কাবু হয়ে পড়েছে। এই সপ্তাহে এখানে মুক্তিবাহিনী বহুসংখ্যক পাক সেনাকে খতম করেছে। একটি বড় সেতু ধ্বংস করে দিয়েছে ফলে পাক সেনাদের যােগাযােগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত ২১শে জুলাই রংপুর জেলার জয়দারা নামক স্থানে মাইন বিস্ফোরণের ফলে একটি সাজোয়া। গাড়ী বিধ্বস্ত এবং প্রায় ১৫ জন পাকসেনা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। এছাড়া বিভিন্ন থানার উপর আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিফৌজের গেরিলা বাহিনী গত সপ্তাহে শুধু রংপুর জেলাতেই ৩২ জন পুলিশকে হত্যা করে। গত ২৫শে জুলাই সিলেটের পূর্ব লাটুতে অবস্থিত পাক সামরিক শিবির আক্রমণ করে মুক্তিসেনারা প্রায় পঁচিশ জন পাক সেনাকে খতম করে। অবশিষ্ট পাক সেনারা শিবির ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। গত ২৩শে জুলাই মুক্তি সেনারা বিলােনিয়া সেতুর উপর একটি পাক সাজেয়া গাড়ী আক্রমণ করে ফলে কয়েকজন পাক সেনা খতম হয়।
বিপ্লবী বাংলাদেশ ১:
১৪ আগস্ট ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯ –বিপ্লবী বাংলাদেশ