মুক্তি বাহিনীর গােড়ার কথা
অধিনায়ক আফসার উদ্দিন আহমেদ ময়মনসিংহ জেলার সদর দক্ষিণ সেক্টরের মুক্তি বাহিনীর জয় যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। ভালুকাও গফরগাঁও অঞ্চলের বিভিন্নস্থানে বর্বর পশ্চিমা পশু হানাদার বাহিনীকে মুক্তি বাহিনী আঘাতের পর আঘাত হেনে তাদের কোণঠাসা করে রেখেছে। মুক্তি বাহিনীর প্রচন্ড আঘাতে তারা দিক বিদিক জ্ঞান শুন্য হয়ে পড়েছে। পশু ইয়াহিয়ার বর্বর দল এ সেক্টর থেকে এক পা আর এগুতে পারছেনা। মুক্তি বাহিনীর বিভিন্ন কৌশলের মারের চোটে পশু বর্বর দস্যু বাহিনী আজ অহরহ মৃত্যুর ক্ষণ গুণছে। এ অঞ্চলের মুক্তিবাহিনী তাদের ঘাটিকে সুদৃঢ় করে বিপুল বিক্রমে জয়ের পথে এগিয়ে চলেছে। অভুতপূর্ব দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে। দেশমাতৃকাকে পশু ইয়াহিয়ার পদলেহী হানাদার কুকুরের হাত থেকে মুক্ত করার বক্স শপথ নিয়ে। আমাদের মুক্তি পাগল জোয়ানরা একের পর এক, কখনাে গেরিলা কৌশলে কখনাে সম্মুখ সমরে, কখনাে আচমকা আক্রমণে অবতীর্ণ হয়ে ৬০ জন জংলী শত্রু সেনাকে খতম করতে সক্ষম হয়েছে। বীর দেশ প্রেমিক মুক্তি বাহিনীর ভয়াবহ আক্রমণের ফলে বহুসংখ্যক নরপিশাচ শত্রু সেনা আহত হয়ে ময়মনসিংহ ঢাকা এবং ক্যানটনমেন্টের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের অনেকেই আবার ওখানেই পটল তুলেছে। আমাদের সাহসী বীর মুক্তি বাহিনীর প্রচন্ড আক্রমণের সামনে কুলিয়ে উঠতে না পেরে পশ্চিমা হানাদার বাহিনী পৈচাশিক ভাবে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর অকথ্য নির্যাতন চালাচ্ছে এবং তাদের ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের ময়মনসিংহ সেক্টরের বীর জোয়ানগন টাঙ্গাইলের বল্লাতে পশু হানাদার বাহিনীর সাথে একসংঘবদ্ধ যুদ্ধে প্রচুর সুনাম অর্জন করেছেন। তাছাড়া আমাদের বীর। জোয়ানগণ তাদের বিপুল উদ্যম, সাহস ও তেজস্বিতার জন্য সদাই সর্বস্থানে অজস্র বাহবা ও দোয়া। পাচ্ছেন। টাঙ্গাইলের বাসাইল আক্রমণে আমাদের মুক্তি জোয়ানরা সক্রিয় অংশ নেন। বল্লার সফল। যুদ্ধের পর আমাদের মুক্তি জোয়ানগণ স্মৃতি ও প্রীতির নিদর্শন স্বরূপ শত্রুসেনাদের উদ্ধারকৃত দুটি রাইফেল, হেলমিট ও গােলাবারুদ পান। পােশাইল ডিফেন্সএ শত্রুসেনা টিকতে না পেরে চাইনিজ আর্মি প্রির গােলাবারুদ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে জীবন বাচায়। আমাদের প্রতিনিধী জানিয়েছেন, ভালুকাতে খান হানাদার সৈন্যদের মধ্যে দারুণ ভয় ভীতির সঞ্চার হয়েছে এবং তারা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার জন্য। বাড়ী ফেরার আবেদন জানিয়ে ছুটির দরখাস্ত করেছে। এদিকে মুক্তিসেনার গব্বার মার অপরদিকে কলেরা জ্বর ও চক্ষুরােগে আক্রান্ত হলে পাক সেনারা কেবল ফুপিয়ে ফুঁপিয়ে কেদেছে। এমনিক তারা বলছে হামলােগ মুক্তিবাহিনী কো বহুত মার খায়া, মগর কাভি মুক্তিবাহিনী কো কই আদমী আভি নাহি দেখতা। পশু বিশ্বাসঘাতক ইয়াহিয়ার বর্বর কুকুর দস্যু…
জাগ্রত বাংলা ১:
২১ আগস্ট ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯ –জাগ্রত বাংলা