রণাঙ্গন থেকে বলছি
(নিজস্ব প্রতিনিধি)। মুজিবনগর ১৪ই জুলাই । এবার পাল্টা মারের পালা। মুক্তিফৌজ এখন বাংলাদেশের নানা অঞ্চলে খানসেনাদের জোর মার দিচ্ছে। এ মারের চোটে পাক সৈন্যরা যশাের অঞ্চলে নাভারণ ও ঝিকরগাছা ছেড়ে চলে গেছে। এই এলাকা এখন মুক্তি সেনাদের কজায়। ওদিকে মুক্তিফৌজ পশ্চিম পাক বাহিনীকে ফঁাড়ি থেকে সরে যেতে বাধ্য করে। সংবাদে প্রকাশ বাংলাদেশের সর্বত্রই মুক্তিফৌজের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে তারা আক্রমণ চালিয়ে পাকসৈন্যদের নাস্তানাবুদ করছেন। নাভারণ, ঝিকরগাছা ও অন্য অনেক জায়গা মুক্তি ফৌজের দখলে।
পশ্চিম পাক বাহিনীর পরিত্যক্ত প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিফৌজের দখলে আসে।
৫৬ জন পাক সেনা খতম
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর এলাকায় মুক্তিফেীজের বহুমুখী আক্রমণে অন্তত ৫৬ জন পাক সেনা নিহত হয়েছে। আজ এখানে পাওয়া সংবাদে জানা গেছে মেহেরপুর শহরের ২০ মাইলের মধ্যে মহিষকুণ্ডি, প্রাগপুর, কাঠলি, গােপালপুর, শৈবনগর, ইছাকালি, কামদেবপুর, কোলা, নাতুধা, দর্শনা, শ্যামপুরে মুক্তিফৌজের গেরিলারা পাক বাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। পলাতক সৈন্যরা পরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায় যে মুক্তিফৌজের হাতে তাদের অফিসার নিহত হওয়ায় তাদের নির্দেশ দেবার কেউ ছিল না সেজন্য তারা পিছু হটেছে। বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে বালুচ ও পাঠান সৈন্যরা পাক সেনাবাহিনী ছেড়ে চলে যাচ্ছে। কুমিল্লা জেলায় সাতজন পাঠান ও বালুচ সৈন্য তাদের ইউনিট ছেড়ে চলে এসেছে। তারা জানিয়েছে যে, পাঞ্জাবী অফিসার ও সৈন্যরা নিরস্ত্র লােককে হত্যা করছে। তারা একাজের সামিল হতে অনিচ্ছুক। তারা মুক্তিফৌজে যােগদানের সিদ্ধান্ত করেছে। কুমিল্লা-ত্রাস ক্যাপ্টেন বুখারী নিহত কুমিল্লা থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন যে, কুমিল্লার বহু হত্যা ও ধ্বংসের নায়ক ক্যাপ্টেন বুখারী আমাদের ফৌজের হাতে নিহত হয়েছে। জানা গেছে কুমিল্লায় নাকি এজন্য শােক সভা ও হয়েছে।
বাংলাদেশ (১) ১; ৯
১৯ জুলাই ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯ –বাংলাদেশ