You dont have javascript enabled! Please enable it!

১২ আশ্বিন ১৩৭৮ বুধবার ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

-মুক্তিযোদ্ধাদের আচমকা কম্যাণ্ডো হামলায় অবরুদ্ধ বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ও সিলেট সেক্টর থকে ১৬০ জন পাকসেনা নিহত হয়।

-জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি এম আর সিদ্দিকীর জাতিসংঘের অঙ্গনে প্রবেশ নিষিদ্ধ জন্য সেক্রেটারী জেনারেল উথান্টের কাছে পাকিস্তান আবেদন জানায়।

-স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারতি বিবৃতি স্কুটিনি আব্দুল মান্নান, প্রোগ্রাম অর্গানাইজার জনাব সামসুল হুদা চৌধুরী এ দায়িত্ব দেন। (৩খঃ পৃঃ১৬০) উল্লেখ্য, নীতিনির্ধারণী বক্তব্য প্রচারের পূর্বে এই বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

-ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মস্কো শীর্ষ বৈঠকের যুক্ত ইস্তেহার প্রকাশিত হয়। সোভিয়েত-ভারত যুক্ত ইস্তেহার বলা হয়ঃ-এশিয়া পরিস্থিতি গতি প্রকৃতির, সেখানে বিদ্যমান উত্তেজনার ও সামরিক সংঘর্ষের ক্ষেত্রগুলির আগ্রাসনের কার্যকলাপ বন্ধ ও রোধ করার এবং এশিয়া মহাদেশে শান্তির ভিত্তি সুদৃঢ় করার উপায় নিয়ে আলোচনার প্রতিই পক্ষদ্বয় তাদের প্রধান  মনযোগ নিবন্ধ করেছে।

-ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী সোভিয়েত পক্ষকে জানিয়েছে যে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে আগত ৯০ লক্ষাধিক শরণার্থী ভারতে গুরুতর সামাজিক ও রাজনৈতিক উত্তেজনের এবং অর্থনৈতিক চাপের সৃষ্টি করেছে।

-২৫ মার্চের পর থেকে পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনা বিকাশের বিষয় খেয়াল রেখে উভয় পক্ষই মনে করছে, শান্তি বজায় রাখার স্বার্থেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের ইচ্ছা, অলংঘনীয় অধিকার ও আইনসঙ্গত স্বার্থের প্রতি মর্যাদা দিয়ে সেখানে উদ্ভুত সমস্যাবলীর এক রাজনৈতিক মীমাংসা উপনীত হওয়ার জন্য শরণার্থীদের সমসান ও সরুক্ষিত থাকার মত অবস্থায় তাদের দ্রুত নিরাপদে নিজের দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য জরুরী ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা প্রয়োজন।

-বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীসভা যুক্ত ইশতেহারকে সর্বসম্মতভাবে স্বাগত জানায়। যুক্তবিবৃতিতে বলা হয় যে, এই দুই দেশেই বাংলাদেশের ঘটনাবলী থেকে উদ্ভুট ভারতীয় উপমহাদেহসের পরিস্থিতি সম্বন্ধে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

-আজ দুর্গোৎসবের মহাবিজয়া দশমী। গৃহহারা সর্বহারা নিঃস্ব শরণার্থীদের এ বিজয়া যেন নিশ্চিত এক মহাবিজয়ের পূর্বভাস।

-শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী মস্কোতে বলেন, বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের সংখ্যা এখন ৯০,০০,০০০ জন।

-ঢাকার পত্রিকায় শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অস্ত্র-শস্ত্র উদ্ধার করে কয়েকজনকে গ্রেফতার সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই দিনেই “আমাদের ভায়ের রক্তে রাঙানো ২১ শে ফেব্রুয়ারী” অমর বায়ন্নর শহীদ সংগীতের সুরকার আলতাফ মাহমুদ পাক বাহিনীর হাতে অমানবিকভাবে অত্যাচারের শিকার হন এবং শহীদ হন।

-প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আইনগত কাঠামো (তৃতীয় সংশোধনী) আদেশ ’৭১ জারী করেন। জারীকৃত আদেশে কোন ব্যক্তি গভর্ণর কর্তৃক মন্ত্রীপরিষদের সদস্য পদে নিযুক্ত রয়েছেন বলে তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য কিংবা কোণ প্রদেশের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হতে বা সদস্যপদ বহাল রাখতে অযোগ্য ঘোষিত হবেন না।  (দৈঃপাঃ)

-পাক হানাদার বাহিনী সুনামগঞ্জ সদর থানার মুসলিমপুর উড়াকান্দা ও রামপুর গ্রাম থেকে বালাট সাব সেক্টরভূক্ত মুক্তিবাহিনীর সৈয়দপুর গ্রামের নদীর পারের অবস্থানের উপর ত্রিমুখী হামলা চালায়। মুক্তিযোদ্ধাদের এসকল অবস্থানে তখন বি কোম্পানীর সহকারী অধিনায়ক আব্দুল মজিদ দল নেতার দায়িত্ব পালন করছিলেন। হতাহতের কোন সংবাদ পাওয়া যায় নাই। (মুঃ খুঃ সুঃ ৪৭)

Reference:

একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!