You dont have javascript enabled! Please enable it!

রাজধানী রাজনীতি প্রধানমন্ত্রী ফিরে না এলে তাঁর মন বােঝা ভার

–রণজিৎ রায়

দীর্ঘ বিদেশ সফরের প্রাক্কালে এক বেতার ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশ যে “বিপদের সম্মুখীন” সে কথা উল্লেখ করে দেশের মানুসকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেনও, এখন সচেতন থাকার সময় শুধু আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকেই নয়, দেশের সব মানুষকেই সজাগ থাকতে হবে। সরকারের সঙ্গে সহযােগিতা করার জন্য তিন সকল রাজনীতিক দলের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন, শ্রমিক, কৃষক, কারখানার মালিকদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন সর্বশক্তি দিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির। | দেশ যুদ্ধকালীন অবস্থার সম্মুখীন হলেই কোন প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের আহ্বান জানান। শ্রীমতী গান্ধী বিদেশ যাত্রা করার আগে প্রশ্নও উঠেছিল যে, এ সময় তিন সপ্তাহ প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকা ঠিক হবে কিনা, কারণ ওই সময়ের মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ বেধে যেতে পারে। এর উত্তরে বলা হয়েছে—পাকিস্তান যদি সত্যি সত্যিই যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর সংক্ষেপ করে সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফিরে আসবেন। শ্রীমতী গান্ধী যে সব দেশ সফর করেছেন তার মধ্যে প্রধান হল গ্রেট ব্রিটেন, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রানস। নব কংগ্রেসের মুখপত্র-সােস্যালিস ইন্ডিয়া পত্রিকায় এই সফরকে (‘শান্তির জন্য তীর্থযাত্রা’) বলে আখ্যাও করা হয়েছিল। এই সব দেশের নেতাদের সঙ্গে প্রধান মন্ত্রীর আলােচনাকে নিঃসন্দেহে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সােভিয়েত ইউনিয়নের মন তিনি নিশ্চয়ই জানেন, কারণ ওদেশের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত আলােচনা চলছে। কয়েক সপ্তাহ আগে শ্রীমতী গান্ধী চীনকে যে চিঠি লিখেছেন তার জবাব এখনাে আসেনি। তাছাড়া, এখন পর্যন্ত শ্রীমতী গান্ধীর পিকিং সফরের মত কোন সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়নি। | প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর শুরু হওয়ার আগে এবং পরে পূর্ব খণ্ডে পাকিস্তানী এবং ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে বেশ কয়েকবার গােলাগুলি বিনিময় হয়ে গিয়েছে। কয়েক ক্ষেত্রে দূরপাল্লার শেলিং পর্যন্ত হয়েছে।

ইসলামাবাদের হাবভাবে মনে হয় ঃ ওরা ত্রিপুরা এবং উত্তরবঙ্গের সীমান্তেই গােলযােগ পাকিয়ে তুলতে চায়। আসামের সঙ্গে ক্ষণি যোগিকে সূত্র করে ভারতের অন্য এলাকার সঙ্গে এই এলাকার বা কিছু সংযােগ। তবু, ভারত এই এলাকার ঘটনাকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখবে না বলে আশা করা যায়। গােলাগুলি বিনিময় এখনাে চলছে। পাশাপাশি মুক্তি বাহিনী পাকিস্তানী সৈন্যদের নাস্তানাবুদ করার প্রয়াস জোরদার করে তুলেছে। পাকিস্তান ক্রমশই বেশি করে গুপ্তচর পাঠিয়ে ভারতের সীমান্তে এলাকার যান চলাচল বিচ্ছিন্ন করা এবং ত্রাস সঞ্চার করার চেষ্টা করে তুলেছে। | সীমান্তে উত্তেজনা যে প্রায় চরমে উঠেছে তাতে সন্দেহ নেই। তবু দু-তিন সপ্তাহ আগে যুদ্ধ এসে গিয়েছে বলে যে সব কথা শােনা যাচ্ছিল, এখন আর ততটা শােনা যাচ্ছে না। এর একটা কারণ বােধ হয় ভারতের প্রস্তুতি দেখে পাকিস্তানের পিছিয়ে যাওয়া। তাছাড়া আমাদের প্রধান মন্ত্রী এখনাে বিদেশে। তিনি ফিরে না আসা পর্যন্ত সরকারের মন বােঝা যাচ্ছে না। তিনি ফিরে এলে তার বিদেশ সফরের ফল বিচার করা যাবে: এই উপমহাদেশের ঘটনাবলীর পর্যালােচনা হবে। ভারত কতদিন উদ্বাস্তুদের ভার বহন করবে? কত দিনই বা পাক প্ররােচনা সে মুখ বুঝে সহ্য করবে তা এই পর্যালােচনার উপরেই নির্ভর করছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং সীমান্তে পাকিস্তান সৃষ্ট উত্তেজনাকে ভারত কী নজরে দেখছে তা বুঝিয়ে বলা  এবং এ ব্যাপারে বিদেশীরা কে কী ভাবছেন তা বুঝবার চেষ্টা করার জন্যই শ্রীমতী গান্ধীর এই সফর। তিনি স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ সমস্যার রাজনীতিক সমাধান অপরিহার্য। শেখ মুজিবুর এবং আওয়ামী লিগের অংশ গ্রহণ ব্যাতীত কোন সমাধানই সম্ভব নয়। আলাপ আলােচনার মাধ্যমে মিটমাট হলে ভারত থেকে ৯৬ লাখ উদ্বাস্তু যদি নিরাপদে এবং সসম্মানে স্বগৃহে ফিরে যেতে পারেন, তাহলে সেই মিটমাটকে ভারত সানন্দে স্বাগত জানাবে। | তিনি আরও বলেছেন- পাকিস্তান লক্ষ লক্ষ মানুষকে ভারতে ঠেলে দিয়ে কার্যত ভারতের উপর আক্রমণই চালিয়েছে; ভারত এ অবস্থার কাছে কখনই নতিস্বীকার করবে না। ইয়াহিয়া এবং মুজিবরের মধ্যে আলােচনার ব্যবস্থা করে গতবছর নির্বাচনে বিজয়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠনর ব্যবস্থা করানাের দায়িত্ব। বিশ্বের প্রধান দেশগুলিকে নিতে হবে। আর তা করতে হলে প্রথমেই ইসলামাবাদকে অস্ত্র দেওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ ইয়াহিয়া অস্ত্র পেলে বাংলাদেশে নির্যাতন চালানাে এবং ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুমকি দেওয়া কোনটাই বন্ধ করবে না।

 শ্রীমতী গান্ধীর ব্রিটেন সফর শেষ হওয়ার পর অফিসাররা বােঝাতে চেয়েছিলেন যে, নড়ন ভারত। দৃষ্টিকোণ উপলব্ধি করেছে। তার অর্থ হলাে শ্রীমতী গান্ধী ব্রিটিশ সরকারের মনােভাবে পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছেন। কিন্তু বেলুন চুপসে যেতে সময় লাগেনি। শ্রীমতী গান্ধী লনডন ছেড়ে যেতে না যেতে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার অ্যালেক এমন সুরে কথা বললেন, যার ফলে ভারতীয় সাংবাদিকরা সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য। হলেন যে, ব্রিটেন এখনাে ‘ভারত আর পাকিস্তানকে তুল্যমূল্য দিচ্ছে।’ তিনি অবশ্য উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য রাজনীতিক বােঝাপড়ার কথাও বলেছেন। কিন্তু পূর্ববঙ্গে একজন অসামরিক গভর্ণর। নিয়ােগ করে এবং ২৭ ডিসেম্বরে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডেকে জেনারেল ইয়াহিয়া ঠিক পথে এগিয়েছে বলেই তিনি মনে করেন, স্যার অ্যালেকের কথা থেকে এমন ইঙ্গিতই পাওয়া গিয়েছে। তিনি এই উপমহাদেশে শান্তি বজায় রাখার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেছেন, কারণ ‘যুদ্ধের দ্বারা বর্তমান দুঃখের তীব্রতা বাড়ানাের অর্থ বিপর্যয় ডেকে আনা।’ ফরাসি এবং পশ্চিম জারমানিও রাজনীতিক সমাধানের পক্ষপাতী। কিন্তু রাজনীতিক সমাধান বলতে ভারত যা বােঝে ওই দুই দেশের ব্যাখ্যা’ তার ধারে কাছে যাবে কিনা সন্দেহ।  আমেরিকানরা অবশ্য এতদূরে এগুতেও রাজি নয়। শ্ৰীমতী গান্ধীর আমেরিকা পরিদর্শনের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তােলার জন্যই নাকি আগে থেকে ওয়াশিংটন নয়াদিল্লিকে জানিয়ে দিয়েছিল যে, আমেরিকা। পাকিস্তানকে আর অস্ত্র কিংবা সামরিক সম্ভার দেবে না। মজার কথা হল পাকিস্তানের সম্মতি পাবার পরেই নাকি আমেরিকা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত জুন মাসে শ্রী স্বর্ণ সিং আমেরিকা সফরে গেলে, তাকেও অনুরূপ আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যে দিন তিনি পালাম বিমান বন্দরে এসে নামলেন; সেদিনই আমেরিকার সংবাদপত্রে খবর বের হল যে, তিনি আমেরিকায় থাকার সময়েই সে দেশ পাকিস্তানের জন্য অস্ত্র জাহাজ বােঝাই করেছে। বিদেশী সাংবাদিকদের কল্যাণে জেনারেল ইয়াহিয়া ভারতের পক্ষে যে কী বিপুল উদ্বাস্তু সমস্যা সৃষ্টি করে দিয়েছেন, তা আজ আর বিশ্ববাসীর অজানা নেই ।

শ্রীমতী গান্ধীর বক্তব্যের মূল বিষয় হল- এই সব হতভাগ্য উদ্বাস্তুদের ভবিষ্যৎ এবং অনির্দিষ্ট কালের জন্য তাদের দায় বহনে ভারতের অক্ষমতা। কিন্তু শ্রী নিকসন উদ্বাস্তু সমস্যার কাছে ধারেও যেতে রাজি নন। তার পরিবর্তে তিনি সাইক্লোনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহানুভূতি জানিয়েছেন। কিন্তু ওয়াশিংটনস্থিত জনৈক ভারতীয় সাংবাদিক ঠিকই বলেছেন যে, শ্রী নিকসন গত বছরের পূর্ববঙ্গের সাইক্লোনের কথা বলেছেন, নাকি এবারের ওড়িশার সাইক্লোনের কথা বলতে চেয়েছেন, তা অনুমান করা শিবের পিতা ঠাকুরেরও অসাধ্য। পাকিস্তানের ব্যাপারে আমেরিকানদের বিস্ময়ের অন্ত নেই। ইসলামাবাদ। নাকি ওদের উপদেশ কান দিতেই চায় না। বাংলাদেশ সমস্যা এবং ভারত-পাক সীমান্তে উত্তেজনা সম্পর্কে ভারত সরকার ব্রিটেন এবং আমেরিকার মনােভাবে সুক্ষ পার্থক্য আবিষ্কার করেছেন। কিন্তু স্যার আলেক হাউস অব কমনসেস যা বলেছেন এবং শ্ৰীনিকসনের সঙ্গে শ্রীমতী গান্ধীর আলােচনার যে বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হয় ওই দেশ মিলেমিশেই। ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। শ্রীমতী গান্ধী শান্তি বজায় রাখার উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। তাঁর এই বক্তব্যের সুযােগ নিয়ে আমেরিকা এবং ব্রিটেন বলতে শুরু করেছে যে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়কেই সামরিক সংঘর্ষ এড়িয়ে চলার। চেষ্টা করতে হবে। ফ্রান্স এবং জার্মানির দৃষ্টিকোণও খুব একটা ভিন্ন বলে মনে হয় না। সােভিয়েট ইউনিয়ন, চীন-সকলেই একই পথের পথিক। সত্যি বলতে কী, আজকের দুনিয়ায় যুদ্ধের দ্বারা কোন সমস্যার সমাধান। সম্ভব- এমন কথা কোন দেশ বলতে চাইবে? ( ঠিক সময় বুঝে ইসলামাবাদ পিকিং এ প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল। তার ফলে সকলের দৃষ্টি শ্ৰীমতী গান্ধীকে ছেড়ে পিকিং-এর দিকেই আকৃষ্ট হয়। চীনা নেতাদের বিবৃতিতে পাকিস্তান হয়ত খুশী হতে পারেনি। কিন্তু এই সফরের ফলে পাকিস্তানে যে উদ্দীপনা বেড়েছে তাতে সন্দেহ নেই। পিকিং বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তিসঙ্গত সমাধান খুঁজতে বলেছে। জেনারেল ইয়াহিয়া হয়ত এ সুপারিশ পচ্ছন্দ করবেন না, কারণ তিন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিলেন যে, ভারতই পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টির জন্য দায়ী।

চীন কিন্তু এ কথাও বলেছে যে, পাকিস্তানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গভীর। পাকিস্তানে বিদেশী আক্রমণ হলে । চীন তাকে ‘সুদৃঢ় সমর্থন জানাবে। এই সমর্থন বলতে কী বােঝানাে হচ্ছে বলা কঠিন। ভারত পাকপ্রতিনিধিদের এই সফরকে তাচ্ছিল্য করছে না; কিন্তু উপমহাদেশে যুদ্ধ বাধলে চীন তার সৈন্যদের এগিয়ে। দেবে না বলেই আশা করছে। | বর্তমান বিশ্বজনমত বা তাতে ভারত বা পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া কঠিন। কিন্তু অবস্থা। গতিকে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়তে পারে। জেনারেল ইয়াহিয়া শেখ মুজিবরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এবং আওয়ামী লিগের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে রাজি হবেন—এমন প্রত্যাশা করলে বােধ হয় বাড়াবাড়ি করা হবে। যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশে দীর্ঘকাল ধরে গেরিলা তৎপরতা চলবে; উদ্বাস্তুদের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা অনেক। বিলম্বিত হয়ে পড়বে। কয়েকমাস আগে শােনা যাচ্ছিল যে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম দিকের জেলাগুলিতে এবং অন্যান্য রাজ্যে আট। লাগ উদ্বাস্তুকে সরিয়ে নেওয়া হবে। তার ফলে পশ্চিম বঙ্গ, ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং আসামের বােঝা যে খুব। একটা কমত তা নয়। লক্ষ্যে পৌঁছানাের অনেক আগেই উদ্বাস্তুদের স্থানান্তর বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু উদ্বাস্তুদের মধ্যে আগের তুলনায় এখন অসন্তোষ কম হওয়ার একটা প্রধান কারণ হল, নেতাদের কথাবার্তা। শুনে তারা শীঘ্রই বাংলাদেশে ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা পােষণ করতে শুরু করেছেন।  ভারতের অর্থনীতিতে নিঃসন্দেহে খুবই চাপ পড়বে; তবু ভারত দীর্ঘকাল ছিন্নমূল শরণার্থীদের যে বহন। করতে পারে, তা সন্দেহ নেই। গত জুন মাসে যখন উদ্বাস্তুর সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ লাখে দাঁড়িয়েছিল; তখন। শ্রীস্বর্ণ সিং মন্তব্য করেছিলেন বছরে ভারতে এর চেয়ে বেশি লােক জন্মায়; তাদের যদি আমরা মেনে নিতে পারি, তাহলে পঞ্চাশ লাখ উদ্বাস্তুর ভারও বইতে পারবে। | কিন্তু উস্তুরা দীর্ঘকাল থেকে গেলে ভারতের বিভিন্নরাজ্যের আর্থিক ও সামাজিক সংস্থিতি কি সরাসরি । ক্ষতিগ্রস্ত হবে না পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ২৫ লাখ উদ্বাস্তু বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা। জীবিকা অর্জনের জন্য স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে প্রতিযােগিতায় নামতে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশের নিকটবর্তী চারিটি রাজ্যের সীমান্তের কাছাকাছি উদ্বাস্তু শিবিরগুলি অবস্থিত। উদ্বাস্তুদের ঘরে। ফেরার স্বপ্ন সফল না হলে অসন্তোষ কুশ্রী ভঙ্গিতে ফেটে পড়তে পারে। অবস্থা আয়ত্তের বাইরে চলে যাওয়াও। অস্বাভাবিক নয়। এ অবস্থায় আমাদের সামনে দুটি উপায় খােলা রয়েছে। হয় উদ্বাস্তুদের বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের অবস্থা গড়ে তুলতে হবে; আর না হয় পশ্চিম বঙ্গ এবং সম্ভবত ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে বিস্ফোরক । পরিস্থিতির জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে।

১১ নভেম্বর, ১৯৭১ 

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৮, আনন্দবাজার পত্রিকা

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!