প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে প্রধান আলােচ্য হবে বাংলাদেশ ও চীন
— শংকর ঘােষ
শ্ৰীমতী ইন্দিরা গান্ধীর আসন্ন বিদেশ সফরে শরণার্থী সমস্যাই যে প্রধান আলােচ্য হবে, তাতে সন্দেহ নেই। শরণার্থী সমস্যার মূলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বলেছেন, শরণার্থী সমস্যা বাংলাদেশের ফুটন্ত রাজনৈতিক কটাহ থেকে উথলে-পড়া অংশ ছাড়া আর কিছুই নয়। কাজেই শরণার্থী সমস্যা সংক্রান্ত আলােচনায় মূল সমস্যার আলােচনাও অবধারিত। প্রধানমন্ত্রী যে সব দেশে যাবেন বাংলাদেশ সমস্যা সম্পর্কে সে সব রাষ্ট্রনায়কদের অভিমত ইতিমধ্যেই জানা গেছে। তারা কেউই বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে নন এবং ইয়াহিয়া খান যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম দমন সক্ষম হন, তাহলে তাদের কেউই দুঃখিত হবেন না। তাঁরা যে রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলছেন তার মূল উদ্দেশ্য হল পাকিস্তানের বর্তমান কাঠামাে বজায় রাখা। এই কাঠামাের মধ্যেই বাংলাদেশকে প্রয়ােজন অনুসারে প্রশস্ততর স্থান দেওয়ার জন্য তারা ইয়াহিয়া খানের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। শ্রীমতী গান্ধীর অভিমত ভিন্ন। তিনিও রাজনৈতিক সমাধান চান; তবে তাঁর মতে এই সমাধানের হদিশ। একমাত্র ইয়াহিয়া খান ও বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে আলােচনার দ্বারাই পাওয়া যেতে পারে। এবং এই আলােচনা যাতে সম্ভব হয় তার জন্য তিনি মুজিবের অবিলম্বে মুক্তির দাবিও করেছেন। শ্রীমতী গান্ধীর সঙ্গে অন্য রাষ্ট্র নেতাদের মত পার্থক্য এই যে, অন্যরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নটি বাতিল করে দিয়েছেন, কিন্তু তিনি মনে করছেন বাতিল করার অধিকার একমাত্র বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরই আছে এবং তারা যে মীমাংসায় সম্মত হবেন অন্য সব রাষ্ট্রকে তাই মেনে নিতে হবে। অন্য রাষ্ট্রগুলি অবশ্য বাংলাদেশ সমস্যার সমাধানে খুব ব্যগ্র নন। তাঁদের কাছে তার চেয়েও অনেক জরুরী প্রশ্ন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা। তারা আপাতত দুই দেশের একটি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। মরুব্বীদের খুশি করার জন্যই হােক বা অন্য কোন কারণেই হােক, ইয়াহিয়া খান ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে একটি জবর ডিগবাজি খেয়েছেন। মাত্র মাস দুই আগে তিনি ফরাসী দেশের প্রধান রক্ষণশীল কাগজ “ল্য ফিগারাে”র সংবাদদাতার কাছে সদম্ভে ঘােষণা করেছিলেন, শ্রীমতী গান্ধীর সঙ্গে তাঁর।
কোন আলােচনা হতে পারে না। যদি কোথাও শ্রীমতী গান্ধীর সঙ্গে তার দেখা হয়ে যায় তাহলে তিনি বলবেন, “ভদ্রে, আমার সমস্যা আমাকেই সমাধান করতে দিন এবং আমার দেশের শরণার্থীদের ফিরে আসতে দিন।” যে ভাষা তিনি ব্যবহার করেছিলেন তা অবশ্য এত ভদ্র ছিল না। তিনি যে সেনাবাহিনীর লােক তা প্রমাণ করার জন্যই সম্ভবত ব্যারাক-এর অমার্জিত অশালীন, পুরুষ ভাষা তিনি ব্যবহার করেছিলেন। কয়কদিন আগে ফরাসী দেশের আরেকটি বিখ্যাত কাগজে লা মেদি” এর সংবাদদাতার কাছে ইয়াহিয়া খান সম্পূর্ণ উলটো কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন- বাংলাদেশ সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি যে কোন লােকের সঙ্গে, যে কোন সময়, যে কোন স্থানে আলােচনার জন্য প্রস্তুত। বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনসাধারণের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের এই নায়কটি যাদের হাতের পুতুল তারাই এই হঠাৎ সুর বদলের পিছনে আছেন। তাঁরা চান কোনরকমে একটি ভারত-পাকিস্তান শীর্ষ সম্মেলন, যাতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধাশঙ্কার আপাতত নিরসন হয়। তাতে যদি শরণার্থী সমস্যার সমাধান না হয় তার জন্য তারা উদ্বিগ্ন নন। ভারতের পক্ষে নানা কারণেই এ প্রস্তাবে রাজী হওয়া সম্ভব নয় এবং শ্রীমতী গান্ধী তা স্পষ্টই ঘােষণাও করেছেন। শ্রীমতী গান্ধীকে বিদেশ সফরের সময় এই প্রস্তাবের সম্মুখীন হতে হবে। তার উপর নানাভাবে চাপ। দেওয়ার চেষ্টাও হবে। বিদেশী রাষ্ট্রনায়করা যতদিন পর্যন্ত না সাক্ষাৎ আলােচনার ফলে বুঝতে পারছেন যে, শ্রীমতী গান্ধী কোনক্রমেই ভারত-পাকিস্তান শীর্ষ সম্মেলনে সম্মত হবেন না ততদিন পর্যন্ত তারা নিশ্চয়ই ইয়াহিয়া খানকে অস্ত্র সংবরণের জন্য পরামর্শ দেবেন। কাজেই শ্রীমতী গান্ধীর বিদেশ সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের ভারত আক্রমণের কোন সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয় না। বাংলাদেশ ছাড়া আরেক গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় নিয়ে শ্রীমতী গান্ধী বিদেশী রাষ্ট্রনায়কদের সঙ্গে আলােচনা করতে পারেন সেটি চীন। চীনে সত্যই কী ঘটছে তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই; অন্ত নেই মতভেদেরও। তবে একটি বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই- চীনে একটি বিরাট পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে, সাংস্কৃতিক বিপ্লবের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য চীন প্রস্তুত। | চীনের সাম্প্রতিকতম অবস্থা সম্পর্কে আমেরিকার প্রত্যক্ষ জ্ঞান সম্ভবত সকলের চেয়ে বেশী। শ্রীমতী গান্ধী যখন আমরিকা পৌছবেন তখন প্রেসিডেন্ট নিকসনের ব্যক্তিগণ প্রতিনিধি ডঃ কিসিংগার তার বর্তামন চীন সফর শেষে দেশে ফিরে যাবেন। প্রেসিডেন্ট নিকসনের সঙ্গে আলােচনায় শ্রীমতী গান্ধী চীনের মনােভাব সম্পর্কে নির্ভরযােগ্য সংবাদ সংগ্রহের সুযােগ পাবেন।
বাংলাদেশ সমস্যার সঙ্গে এই বিষয়টি একেবারে সম্পর্ক রহিত নয়। সমস্ত আন্তর্জাতিক রীতিনীতি উপেক্ষা করে পাকিস্তান যদি ভারত আক্রমণ করে তাহলে সে চীনের সমর্থন পাবে কিনা তা ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। অবশ্য চীন পাকিস্তানকে সাহায্যের জন্য যুগপৎ ভারতকে আক্রমণ করবে না এমন কোন খবর পেলে হিমালয় সীমান্তের রক্ষাব্যবস্থা নিষ্প্রয়ােজনীয় তবে তা নয়। দেশ রক্ষার ব্যাপারে কোন শিথিলতা বুদ্ধিমানের কাজ নয় এ-শিক্ষা ভারত সরকার পেয়েছেন। তবে যুদ্ধের সম্ভাবনায় যে সতর্কতার প্রয়ােজন সেসতর্কতা অন্য অবস্থায় অনাবশ্যক। প্রধানমন্ত্রী যদি জানতে পারেন, পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করলে সঙ্গে সঙ্গে চীন আক্রমণের কোন সম্ভাবনা নেই, তাহলে পাকিস্তানী আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা দৃঢ়তর করা সম্ভব। বাংলাদেশ সংগ্রাম শুরু হওয়ার সময় চীন সরকার যে-নীতি ঘােষণা করেছিলেন এখন তার কোন পরিবর্তন হয়েছে কিনা ত নিয়ে কিছু জল্পনা চলেছে। তার কারণ চীনা সরকার গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব আছেন। প্রখ্যাত আমেরিকান সাংবাদিক জেমস রেসটন যখন চীন সফরে যান তখন চীনা প্রধানমন্ত্রী শ্রী চু এন লাই-এর সঙ্গে এই প্রসঙ্গে তাঁর আলােচনা হয়েছিল। চীনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে রেসটন এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেননি। কিন্তু তাকে যে নীরবতার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তার থেকেই অনুমান করা যায়, শ্রী চু এন লাই তাঁকে যা বলেছেন তা চীন সরকারের প্রকাশিত অভিমত থেকে কিছু আলাদা। না হলে এই প্রতিশ্রুতি আদায়ের কোন প্রশ্ন উঠত না। রেসটন সাক্ষাৎকারের যে-বিবরণ প্রকাশ করতেন তা চীনের ইতিপূর্বে প্রকাশিত অভিমতের প্রতিধ্বনি হত না।
এই অনুমানের সমর্থন মিলবে এদেশের সংবাদপত্রে প্রকশিত একটি প্রবন্ধে। লেখিক শ্রীমতী হ্যান সুঈন ইংরেজি ভাষায় একজন খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক চীনের অনুরাগী বলেও তিনি পরিচিত। শ্রীমতী সুঈন বৎসরে একবার চীন সফরে যান; চীনের উপর মহলে তার যথেষ্ট দহরম মহরম। তিনি লিখেছেন, চীন চায় ভারত ঐক্যবদ্ধ ও স্বাধীন থাকুক, চীনের মতে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ছাড়া আর কেউ ভারতের বহুধা বিভক্তিতে উৎসাহী নয়। এতদিন এদেশের বিভেদপন্থী শক্তিগুলিকে প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ মদত দেওয়ার পর চীনের পক্ষে এই অভিমতও প্রকাশ করা অভিনব বইকি। সত্যই চীন ভারতীয় ঐক্য চায় কিনা তা অবশ্য বােঝা যাবে যদি বিদ্রোহী নাগা ও মিজোদের অতঃপর চীন সরকার সাহায্য বন্ধ করেন। বাংলাদেশ সমস্যার শুরুতে ইয়াহিয়া খান সরকারের সমর্থনে চীন যে দুটি বিবৃতি দিয়েছিল তার একটি ব্যাখ্যাও চীনা মুখপাত্ররা শ্রীমতী সুঈনকে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, ভারতের কোন কোন বিশিষ্ট ব্যক্তি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিষেদগার করেছিলেন। যদি এই বাকযুদ্ধ ভারতের পাকিস্তান আক্রমণে পর্যবসিত হয় তাহলে পাকিস্তান হত একটি আক্রান্ত দেশ। সেই জন্যই চীন সরকার ঘােষণা করেছিলেন, সেক্ষেত্রে তারা পাকিস্তানকে সমর্থন করবেন। নিঃসন্দেহে এই ঘােষণায় স্বাভাবিক অর্থ পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করলে চীন তাকে সমর্থন করবে না। তবে আক্রমণকারীকে আক্রান্ত ঘােষণা করে তার সাহায্যে নেমে পড়ার দৃষ্টান্ত। ইতিহাসে বিরল নয়। শ্ৰীমতী সুঈনের প্রবন্ধে এ বিষয়েও পরিষ্কার যে চীনা মুখপাত্রের মতে যেসব দেশ চীনকে আক্রমণ করতে পারে ভারত তাদের অন্যতম। তারা বলেছেন আমেরিকা, সােভিয়েট ইউনিয়ন, জাপান ও ভারত যদি একযােগে চীন আক্রমণ করে তাহলে সে আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতা চীন রাখে। ইতিপূর্বে চীন সফরকারী পঞ্চাশ জন আমেরিকানকেও চীনা প্রধানমন্ত্রী ঠিক এই কথাই বলেছেন। কাজেই ভারত সরকার ও ভারতীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থার চীনা মূল্যায়নে যে কোন পরিবর্তন হয়নি তা স্পষ্ট। তবে চীনা মুখপাত্ররা শ্রীমতী সুঈনকে জানিয়েছেন রাষ্ট্র ব্যবস্থা যাই হােক না কেন, রাষ্ট্রের চরিত্র তাদের মতে যতই প্রতিক্রিয়াশীল হােক না কেন তা চীনের সঙ্গে মিত্রতার অন্তরায় হবে না।
প্রেসিডেন্ট নিক্সনের প্রস্তাবিত চীন সফরই সম্ভবত তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। ভারত সম্পর্কেও যে চীনা নেতারা অনুরূপ নীতি অনুসরণ করতে চান তার ইঙ্গিত শ্রীমতী মুঈন দিয়েছেন। চীন নেতারা তাকে বলেছেন, ভারত সরকার এ বিষয়ে কোনও উদ্যোগ এখনও দেখান নাই । শরণার্থী সমস্যার প্রসঙ্গে শ্রীমতী গান্ধী শ্রী চু এন লাইকে যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তা নাকি অন্য রাষ্ট্র নেতাদের কাছে পাঠানাে চিঠির প্রতিলিপি মাত্র। তাই চীন সরকার এই চিঠির উত্তর দেননি। পৃথিবীর সব রাষ্ট্র নেতার কাছে যখন শ্রীমতী গান্ধী এক চিঠিই পাঠিয়েছেন এবং সেই চিঠির উপর কোন কোন রাষ্ট্র যখন কিছু ব্যবস্থা। নিয়েছেন তখন চীন কেন স্বতন্ত্র চিঠি না পাঠানাের অনুযােগ বা অভিমান করছে তার উত্তর শ্রীমতী সুঈনের প্রবন্ধে পাওয়া যায় না। তবে কেবল এই কারণেই যদি চীনা নেতারা এতদিন চুপ করে থাকেন তাহলে তাদের নীরবতা ও নিস্পৃহতা দূর করা ভারতের পক্ষে দূরূহ নয় । ভারত সরকার চীনের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে উদ্যোগী হননি এ অভিযােগ সত্য নয়। নয়াদিল্লির চীনা দূতাবাসের সামনে যে পুলিশ ঘাঁটি ছিল সেটি তুলে নেওয়া হয়েছে। অ্যামস্যাডর স্তরে রাষ্ট্রদূত বিনিময়েও ভারত সরকার উদ্যোগী হয়েছেন। পিকিং যে পরবর্তী ভারতীয় অ্যামবাস্যাডর পদের জন্য একটি নামও চীনা সরকারের অনুমােদনের জন্য পাঠানাে হয়েছে। তার উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। চীন সরকার নয়া দিল্লিতে তাঁদের রাষ্ট্রদূতের জন্য কারও নাম প্রস্তাব করেছেন এমন কোন খবরও নেই। একথাও প্রকারান্তরে নয়াদিল্লি থেকে ঘােষণা করা হয়েছে, ভারত সরকার বিনা শর্তে চীনের সঙ্গে সীমান্ত আলােচনায় রাজি। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-চীন সম্পর্কের উন্নতিতে এ দেশের আগ্রহ স্বভাবিক। কিন্তু এ বিষয়ে চীনা আগ্রহ এখনও খুব স্পষ্ট নয়, যদিও চীনা নেতারা মাঝে মাঝে অন্য কথা বলেছেন, যদিও পিকিংয়ে টেবিল টেনিস প্রতিযােগিতায় অন্য অনেক দেশের সঙ্গে ভারতও আমন্ত্রিত। সত্যই চীনা নেতারা ভারতের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে ইচ্ছুক কিনা প্রেসিডেন্ট নিকসনের সঙ্গে আলােচনায় শ্রীমতী গান্ধী তার আভাস পেতে পারেন। ভারতের চীনা নীতি এখন দ্বিধাগ্রস্ত। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর শেষে এই দোটানার অবসান হতে পারে।
২৩ অক্টোবর, ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৮, আনন্দবাজার পত্রিকা