বিপদ শুধু বাংলাদেশের নয়, গণতন্ত্র ও সেকুলার রাষ্ট্র ব্যবস্থারও
— আবদুল গাফফার চৌধুরী
সম্প্রতি মুজিব নগরে দুদিন ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ওয়ারকিং কমিটির যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হল, তাতে গৃহীত প্রস্তাবে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর অকুণ্ঠ স্বীকৃতি উচ্চারিত হয়েছে। প্রস্তাবে স্পষ্টই বলা হয়েছে, ‘নব্বই লক্ষাধিক শরণার্থীকে আশ্রয়দান এবং ভরণপােষণের ব্যবস্থা করায় ভারতের কাছে বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। প্রতিটি শরণার্থীকে যথাযােগ্য মর্যাদায় স্বদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কৃতসংকল্প। আওয়ামী লীগের অপর এক প্রস্তাবে পূর্ণ স্বাধীনতা এবং গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থাই যে তাদের একমাত্র লক্ষ্য, তারও দৃঢ় পুনরুক্তি করা হয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশ আওয়ামি লীগের বক্তব্য যে সে দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের মনের কথায় এবং আশা-আকাঙ্খার প্রতিধ্বনি তাতে কোন সন্দেহ নেই । আওয়ামী লীগ আজ বাংলাদেশের কেবল একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং গত পঁচিশে মারচের পর জাতীয় মুক্তিযুদ্ধে সৈন্যাপত্য গ্রহণের পর আওয়ামি লীগ বাংলাদেশের জাতীয় রাজনৈতিক প্ল্যাটফরমে রূপান্তরিত হয়েছে। আজ থেকে পঁচিশ বছর আগে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় কংগ্রেস ছিল যেমন সর্বভারতীয় রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম, আজও তেমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম। আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্বেরও উচিত, বাংলাদেশের বৃহত্তর স্বার্থে সংকীর্ণ দলীয় ভূমিকা ও দলীয় স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে জাতীয় নেতৃত্ব গ্রহণের উপযােগী ভুমিকায় দৃঢ় ও অবিচল থাকা। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মৈত্রীর একটা সাধারণ ভিত্তি ইতিপুর্বেই তৈরি হয়ে গেছে। তা হল গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং জনকল্যাণমূলক প্রশাসন।
পঁচিশ বছর আগে ভারতের জাতীয় কংগ্রেস যে ধর্ম নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার লক্ষ্য সামনে রেখে বৃটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, সেই একই লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ পাকিস্তানী শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নেমেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই ভারত তার ঘনিষ্ট প্রতিবেশী, তুলনামূলক ভাবে অনেক ছােট এই দেশটির অভিন্ন জাতীয় লক্ষ্যের প্রতি সহানুভূতিশীল ও সহমর্মী না হয়ে উঠে পারেনি। গত মহাযুদ্ধের প্রথম দিকে যুদ্ধরত বৃটেন ও জারমানির সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র কঠোর নিরপেক্ষতা বজায় রাখা সত্ত্বেও অস্ত্র বিক্রয় ও অর্থসাহায্যের ক্ষেত্রে বৃটেনের প্রতি পক্ষপাতিত্ব ও সহানুভূতি না দেখিয়ে পারেনি। মিঃ চারছিল এই মারকিনী মনােভাবকে ‘মাসতুতাে ভাইয়ের মনােভাব’ বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন। অর্থাৎ ইংরেজ ও আমেরিকানরা হচেছ পরস্পরের মাসতুতাে ভাই। কিন্তু প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট বলেছিলেন, ইউরােপের যুদ্ধরত দেশগুলাের মধ্যে আমেরিকার ভূমিকা নিরপেক্ষ থাকার। আক্রান্ত না হলে আমরা অস্ত্র ধারণ করব না। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের বিপদে আমরা উদাসীন থাকবাে। বিপন্ন গণতন্ত্রকে যেটা সম্ভব নৈতিক ও বৈষয়িক সাহায্যাদন অব্যাহত থাকবে। বলা বাহুল্য, এখানে বিপন্ন গণতন্ত্র বলতে প্রেসিডেন্ট রুজভেলট নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধরত বৃটেনের প্রতি ইঙ্গিত করেছিলেন। পরবর্তীকালে চারচিল- রুজভেল্টের যুক্ত উদ্যোগে যে ঐতিহাসিক ‘আটলানটিক চারটার প্রণীত হয়, তারও প্রতিশ্রুতি ছিল ফ্যাসিবাদের পূনর্জন্ম রােধ করা এবং গণতন্ত্রের নিরাপত্তা বিধান করা। | এশিয়ার গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র-ব্যবস্থার সবচাইতে বড় দুর্গ ভারত। বাংলাদেশে পাকিস্তানী সামরিক জুনটার হামলায় শুধু কয়েক কোটি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার বিপন্ন হয়নি; সবচেয়ে বেশি বিপন্ন হয়েছে গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র-ব্যবস্থা। এই বিপন্ন গণতন্ত্র ও সেকুলার রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য তাই ভারতের উদ্বেগই স্বাভাবিক ভাবে বেশি হওয়ার কথা।
একজন ইংরেজ ও একজন আমেরিকানের মধ্যে ভাষা, সংস্কৃতির অভিন্নতা ও কয়েকপুরুষ আগের রক্ত সম্পর্কের জন্য মিঃ চারছিল পরস্পরের সম্পর্ককে মাসতুতাে ভাইয়ের সম্পর্ক আখ্যা দিয়েছিলেন। এই সম্পর্ক ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের আরও বেশি। ফলে তুলনামূলক ভাবে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের চাইতে পশ্চিমবঙ্গেই পূর্ববাংলার শরণার্থীর সংখ্যা অধিক। অথচ ভারতের অন্যান্য রাজ্যের চাইতে পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক অবস্থা এখন অনেক বেশি দুর্বল এবং ক্ষয়গ্রস্ত। জনজীবনেও সমস্যা পাহাড় প্রমাণ। তথাপি শরণার্থীদের অসহনীয় দায়িত্ব ও বােঝা বহনে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের চাইতে পশ্চিম বঙ্গ যে অনেক বেশি সহনীয় মনােভাবের পরিচয় দিচ্ছে, তার কারণ ভাষা ও সংস্কৃতিগত এবং ক্ষেত্রবিশেষে দুই বাংলার মানুষের রক্ত সম্পর্কগত আত্মীয়তা। সুতরাং অনির্দিষ্টকাল ধরে প্রায় কোটি খানেক শরণার্থীর বােঝা বহন এবং বাংলাদেশের মুক্তি সংগামে সমর্থনদানের পেছনে ভারতের রাজনৈতিক মতলব’ রয়েছে বলে পাকিস্তান যে প্রচার চালাচ্ছে, তা যে আদপেই পােপে টেকে না, এই সত্যটিও বিশ্ববাসীর কাছে আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরা দরকার। দুটি ভিন্ন রাষ্ট্রাদর্শের শান্তিপুর্ণ সহ-অবস্থান সম্ভব’, এই তত্ত্বটি আমি মানি। কিন্তু দুটি শক্র মনােভাবাপন্ন রাষ্ট্রাদর্শের শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থান সম্ভব কিনা আমি জানি না। এটা যেন অনেকটা আগুন আর পেট্রলের সহঅবস্থান। ফ্যাসিবাদ নিশ্চিতভাবেই গণতন্ত্রের শত্রু। ত্রিশের ইউরােপে ফ্যাসিবাদের উদ্ভব গণতন্ত্রকে নিশ্চিন্ত ও নিরপদ থাকতে দেয়নি। বৃটেনের তকালীন প্রধানমন্ত্রী চেমৰারলেন তার মিউনিক চুক্তির ছাতা খুলেও ইউরােপীয় গণতন্ত্রকে ফ্যাসিবাদী থাবা থেকে অক্ষত রাখতে পারেননি। ১৯৫৮ সালে ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী পাকিস্তানে যেদিন জেনারেল আইয়ুবের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়, সেদিনটি ছিল ভারতের গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ সঙ্কেতের দিন। পন্ডিত নেহেরু এই বিপদ। সঙ্কেতের তাৎপর্য যথাসময়েই উপলব্ধি করেছিলেন এবং তখনকার নবপ্রতিষ্ঠিত আইয়ুব সরকারকে ‘নেকেড মিলিটারি ডিকটেটরশিপ’ আখ্যা দিয়েছিলেন। শােনা যায়, আমেরিকার পরামর্শে এই নগ্ন জঙ্গী ফ্যাসিবাদ সম্পর্কে পণ্ডিত নেহেরু তার মনের ক্ষোভ ও উত্তেজনা দমন করেছিলেন।
আমেরিকার তৎকালীন বৈদেশিক বিভাগের কর্তারা নাকি ভারতকে এই মর্মে আশ্বাস দিয়েছিলেন, পাকিস্তানের সামরিক জুনটা হবে নখদন্তবিহীন সুবােধ প্রতিবেশী । এই প্রতিবেশীর কাছ থেকে ভারতের ভয় করার কিছু নেই। কিন্তু ১৯৬৫ সালে আকস্মিকভাবে আক্রান্ত হয়ে ভারত নিশ্চয় উপলব্ধি করেছিল এই প্রতিশ্রুতি কত অসার। বৃটেনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মিঃ হ্যারলড উইলসনের অভিযােগ, আমেরিকা তার কথা রাখেনি। তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী তার সঙ্গে। কথার খেলাপ করে তাঁকে জব্দ করছে। ১৯৬৭ সালের জুন যুদ্ধের পর একই অভিযােগ তুলেছিলেন। প্রেসিডেন্ট নাসের। ইজরায়েল আগবাড়িয়ে আগে আক্রমণ করবে না আমেরিকার কাছ থেকে এই আশ্বাস পেয়ে তিনি নাকি ঢিলেমি করেছেন যুদ্ধায়ােজনে। ১৯৬৫ সালে নেহেরু বেঁচে থাকলে সেপটেম্বর যুদ্ধের পর। আমেরিকা সম্পর্কে একই অভিযােগ করতেন কিনা, তা আজ আর জানার উপায় নাই। ভারতের সমস্যা বাংলাদেশকে নিয়ে নয়। আমার বিশ্বাস, এক পাকিস্তান ‘ফ্রেম ওয়ারকের মধ্যে নয়, বাইরে বাংলাদেশ সমস্যার সমাধান হবে। এটাও ভারতের সমস্যা নয়। ভারতের সমস্যা গণতন্ত্র ও সেকুলার। রাষ্ট্রের ব্যবস্থা নিয়ে। ভারতের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র-বলতে গেলে ঘরের পাশে যে ব্যবস্থাকে বাড়তে দেয়া হচ্ছে, মদত জুগিয়ে টিকে থাকতে দেওয়া হচ্ছে তা চরিত্রে কেবলমাত্র ফ্যাসিবাদ নয়, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ। ত্রিশের ইউরােপের ফ্যাসিবাদের চাইতেও এর ক্ষিপ্ততা বেশি। কারণ এই ফাসিবাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ধর্মীয় জিঘাংসা। যা ভারতের গণতন্ত্র ও সেকুলারিজম দুয়েরই পরম শত্রু। ভারতের বিরােধ পাকিস্তানের সঙ্গে নয় এমন কি পাকিস্তানের অস্তিত্বও ভারতের জন্য বিপজ্জনক নয়। বরং গণতান্ত্রিক পাকিস্তান ভারতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সৎ প্রতিবেশী হতে পারে। কিন্তু সে সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে পাকিস্তানে জঙ্গী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা হওয়ায়।
এই ফ্যাসিবাদ একাধিক গণতন্ত্র এবং অন্যদিকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র ব্যবস্থার ঘাের বিরােধী। ঘরের পাশেই এই ফ্যাসিবাদের অস্তিত্ব, তাই ভারতের জন্য সর্বক্ষণের হুমকি। ভারতের অভ্যন্তরে আজ যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতির সমস্যা, সাম্প্রদায়িক ঐক্যের সমস্যা তা ঘরের পাশে এই ক্রমবর্ধমান ফ্যাসিবাদের অস্তিত্বের প্রতিফলন ছাড়া আর কিছু নয়। গত বিশবছর ধরে পাকিস্তানে সরকারী পর্যায়ে যে সাম্প্রদায়িক বিভেদনীতি চালু রাখা হয়েছে, তার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে ভারতে। পাকিস্তানে গণতন্ত্রবিরােধী প্রতিটি কার্যক্রম অশুভ ছায়া কিস্তার করেছে ভারতীয় গণতন্ত্রের ভিত্তিমূলে। পাকিস্তানে জঙ্গীচক্রের গণহত্যা নীতিতেও ভারতের সমসাগ্রস্ত আর্থিক ব্যবস্থাকে বইতে হচ্ছে কোটিখানেক শরণার্থীর বােঝা। অথচ একথা কে না জানে, ভারতে যদি গণতন্ত্র ব্যর্থ হয়, তাহলে সারা এশিয়ায় গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। সুতরাং সারা এশিয়ার স্বার্থে এবং নিজের স্বার্থেই প্রতিবেশী পাকিস্তানে অথবা বাংলাদেশে কি ঘটছে, সে সম্পকে ভারতীয় গণতন্ত্রের উদাসীন থাকা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে ভারতের যে নৈতিক সমর্থন, তা গণতন্ত্র ও সেকুলার রাষ্ট্র-ব্যবস্থার প্রতিই তার সমর্থন। বাংলাদেশের সংগ্রাম তাই ভারতীয় গণতন্ত্রের আত্মরক্ষারও সংগ্রাম।
সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রাদর্শের শুচিতা রক্ষা এবং পূর্ব ইউরােপীয় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলির নিরাপত্তার অজুহাতে সােভিয়েত ইউনিয়ন চেকোশ্লাভাকিয়ার মত একটি ভিন্ন রাষ্ট্রে সৈন্য পাঠতে দ্বিধা করেনি। সেদিন বিশ্বশান্তি ও যুদ্ধ উত্তেজনা প্রশমনের জন্য সােভিয়েত নেতাদের মােটেই উদ্বিগ্ন মনে হয়নি। ঘরের কাছে কিউবার মত একটি ক্ষুদ্র দেশে ক্যাসট্রোর ক্ষমতা লাভে আমেরিকার মত বিশ্বশক্তি কতটা বিচলিত হয়েছিল তার প্রমাণ বে অব পিগসের ঘটনা অথবা দুর্ঘটনা। অথচ ভারতের ঘরের পাশেই শুধু ভারতের জন্য নয়, ভারতের গণতন্ত্র ও সেকুলার রাষ্ট্র-ব্যবস্থার জন্য যে বিরাট হুমকি দেখা দিয়েছে, সে সম্পর্কে ভারতকে সংযম। ধারণের, নিরুদ্বিগ্ন ও নিষ্ক্রিয় থাকার উপদেশ দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ সমস্যায় ভারতের যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে সে সম্পর্কে চোখ মুদে ভারতকেই হিংস্র ও জঙ্গী ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সহ অবস্থানের ফরমূলা উদ্ভাবনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সহ অবস্থান যে অতীতে টেকসই হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সেকুলার রাষ্ট্র-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে ভারতের গণতন্ত্র ও নিরপেক্ষতার আদর্শও যে তাতে বিপন্ন হবে এই সত্যটি যারা বুঝেও না বােঝার ভান করেন, তারা আসলে গণতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদকে একই মানদণ্ডে রেখে ফ্যাসিবাদকেই সস্নেহ, প্রশ্রয় দিয়ে চলেছেন। এই নীতি এশিয়ার শান্তি প্রতিষ্ঠার নয়, চিরকাল অশান্তি জিইয়ে রাখার।
১ নভেম্বর, ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৮, আনন্দবাজার পত্রিকা