নকল লড়াই
নিজস্ব প্রতিনিধি মুহূর্তে সপ্তরথীর আক্রমণে খালি মাঠ খুদে রণাঙ্গনের চেহারা নিল। এক দল হাঁক ছাড়ল : হা-রে-রে-রে । প্রতিপক্ষ দলও পালটা হাঁক ছেড়ে ছুটে গেল । শুধু চারদিকে থেকে সড়কি ছুটে আসছে এক একজনকে লক্ষ্য করে। সেই লক্ষ আবার ব্যর্থ করে পালটা সড়কিও তীর-বেগে ছুটে চলল উলটো দিকে। এ হল সড়কিওয়ালাদের লড়াইয়ে মহড়া। রবিবার লবণ হ্রদ শরণার্থী শিবিরে খােলা মাঠে বাংলাদেশ ভলানটিয়ার সারভিস কোরের পরিচালনায় এই মহড়া হয়।
বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থী তরুণদের নিয়ে গড়ে তােলা হয়েছে এই স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী। শক্ত সমর্থ জোয়ান যুবকদের হাতের লাঠি খেলা, সড়কি চালানাে ও যুযুৎসুর পঁাচে অপূর্ব যাদু। এই সঙ্গে রয়েছেন। মেয়েরাও। তাঁরাও দেখালেন ব্রতচারী নাচ। এছাড়া আছে স্বেচ্ছাসেবকদের হাডু-ডু, রিং খেলা, ফুটবল খেলা, কুচকাওয়াজ প্রভৃতি। স্কুল চলছে তিনটি-জয়বাংলা, শেখ মুজিব ও বঙ্গবন্ধু স্কুল।
স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী বাংলাদেশের মুক্ত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানাের কাজও করছেন। সেখানে পুস্তিকা পাঠানাের ব্যবস্থাও করেছেন। ভলাণটিয়ার সারভিসকে শক্তিশালী করার জন্য পাঁচশ শরণার্থী শিবির থেকে আড়াই হাজার স্বেচ্ছাসেবক নেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে পাঁচশাের উপর মেয়ে আছে।
রবিবার লবণ হ্রদের অনুষ্ঠানে সারভিস কোরের সভাপতি রহমত আলি বলেন, বাঙ্গালীকে তার নিজের শক্তিতেই স্বাধীনতা অর্জন ও বিশ্বের স্বীকৃতি আদায় করে নিতে হবে। শিবিরে বরিশালের দুজন শিল্পী মাটি দিয়ে বানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তি। সঙ্গীত শিক্ষার আসরে গান হচ্ছে-‘সােনার বাংলা আমি তােমায় ভালবাসি’। অনুষ্ঠান শেষে সকলের কণ্ঠে ধ্বনি উঠল: তােমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা’।
২০ সেপ্টেম্বর ‘৭১
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা