পাকিস্তান যুদ্ধ চাইছে, আমরা এড়াতে চাইছি
প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধীর সফর শেষের অভিজ্ঞতা তাঁকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে কী না, সে-কথা এখনও পরিষ্কার নয়। ওদিকে ভুট্টো-পিকিং থেকে পিনডি গিয়ে রণহুঙ্কার ছাড়ছেন। বিমান আক্রমণের মহড়ার মুখে দাঁড়িয়ে আমাদের পাঠকদের মনেও অনেক প্রশ্ন উঠছে। আমরা এবার তাঁদের কিছু ভাবনা তুলে ধরলাম। মতামতের জন্য লেখকরাই দায়ী সম্পাদক নন। সারাক্ষণ ঘুরে ফিরে সকলের মুখেই এক প্রশ্ন। যুদ্ধ কী লাগবে? শিক্ষিত অশিক্ষিতের ভেদাভেদ নেই, অফিস, সেলুনে, চায়ের দোকানে, রিকসাওয়ালাদের আডডায় একজন আর একজনকে প্রশ্ন করে যুদ্ধ কী সত্যিই হবে। প্রশ্নটা সকলেরই মুখে, নির্দিস্ট উত্তর বা মতামত অনেকেরই নেই। পাকিস্তানের দেয়ালে দেয়ালে নাকি ‘ক্রাশ ইনডিয়া’-এই পােস্টার পড়েছে। সেরকম যুদ্ধ উন্মাদনা নেই ভারতে। বরং, যুদ্ধ যদি এড়ানাে যায়, সেটাই যেন ভালাে। এই গরিব দেশে যুদ্ধ একটা চরম বিলাসিতা। চরম মুহূর্তে ছাড়া সে পথ নেবার মানে হয় না। অথচ বাংলাদেশ সমস্যা সমাধানের আর কীইবা পথ আছে, তাও তাে বােঝা যাচ্ছে না।
ভারতে পাকিস্তান সম্পর্কে কোনাে ভীতি নেই। যুদ্ধ বাধলে পাকিস্তানের কাছে হেরে যাবার কথা কেউ ভাবে না। কিন্তু যুদ্ধের কথা উঠলেই চীনের বিরাট ছায়া পড়ে তার ওপর। চীন কী করবে? পাকিস্তানকে শুধু মৌখিক সহানুভূতি জানাবে না প্রত্যক্ষভাবে নেমে পড়বে ভারতের বিরুদ্ধে? শােষিত মানবতাকে সম্মান দিতে চায় যে চীন বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের নির্যাতন দেখেও তার মুখে টু শব্দটি নেই-বরং সে অত্যাচারী ইয়াহিয়াকে মদত দিতে চায়-কোন যুক্তি দিয়েই এর কারণ বােঝা যায় না।
সীমান্তে শত্রুসৈন্য দাঁড়িয়ে এই সময় ইন্দিরা গান্ধী গেলেন বিদেশে-যুদ্ধ থামাবার শেষ চেষ্টায় । যতই কূটনৈতিক মিষ্টি মিষ্টি কথা শােনা যাক, কারুর কাছ থেকেই কোনাে সাহায্য পাওয়া গেল না। এক কোটি উদ্বাস্তুর সমস্যাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না কেউ। দেখেশুনে মনে হয় ভারতের শুভাশুভ মনে হয় ভারতের শুভঅশুভ কী এখনাে কয়েকটি বিদেশী শক্তির ওপর নির্ভরশীল? পরামর্শ দেবার নাম করে তারা ভারতের কান টেনে রেখেছে? তাহলে, ভারতের একবার অন্তত স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেবার এই সময় । ইন্দিরা গান্ধী এবার স্পষ্ট ভাষায় বলুন-পাকিস্তান অন্য রাষ্ট্র, তার স্বার্থ নিয়ে মাথা ঘামাবার দরকার নেই ভারতের কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে উদ্বাস্তুরা ফিরে যাবে না, সীমান্তে উত্তেজনা থেকেই যাবে। ইয়াহিয়া খান যদি এটা বুঝতে না পারেন-তা হলে আমাদের জওয়ানরা বাধ্য হয়েই পাকিস্তানী সৈন্যদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেবে। তার নাম যদি যুদ্ধ হয়, হােক।
-অনিল আচার্য, কলকাতা-৯। পাকিস্তানের নীতি ও কার্যকলাপের প্রতি অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রের যতই সমর্থন থাকুক না কেন পাকিস্তানের শক্তিবৃদ্ধিতে প্রকৃত মদত জোগাচ্ছে যারা তারা মুসলিম রাষ্ট্র নয়-একটি ধনতান্ত্রিক আমেরিকা, অপরটি কম্যুনিস্ট চীন। যুক্তির খাতিরে নাহয় ধরে নেওয়া গেল যে, হিন্দু রাষ্ট্রের অত্যাচারের কথা বলে অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রে কাছ থেকে পাকিস্তান প্রচুর সহানুভূতি পাচ্ছে ও পাবে। কিন্তু বিশ্বের প্রায় সবকটি মুসলিম রাষ্ট্র যারা অধিকাংশই ক্ষুদ্র, দুর্বল ও পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত, বাস্তবে পাকিস্তানকে কতটুকুই বা মদত দিতে পারবে? প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানকে তার জন্মক্ষণ থেকে যারা মদত দিতে আসছে সেই বৃহৎশক্তিবর্গ ঘাসে মুখ দিয়ে চলে না। সমগ্র বিশ্ব জানে যে, ভারত হিন্দুরাষ্ট্র নয়। পাকিস্তান ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র বলে বর্ণনা দিলেই ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হয়ে যাবে না। ভারত যা আছে তাই-ই থাকবে-ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
শ্রীপান্নালাল দাশগুপ্ত তাঁর প্রবন্ধে পাকিস্তানের সৈন্য ও অস্ত্রবল সম্পর্কে তথ্যপূর্ণ বিবরণ দিয়েছেন। কিন্তু সােজাসুজি এই তথ্যকে মেনে নিলে পাকিস্তানের শক্তিকে ছােট করে দেখা হবে। শত্রুকে খাটো করে দেখা যে যুদ্ধের ক্ষেত্রে কত বিপজ্জনক ভুল আশা করি সেকথা বুঝিয়ে বলার দরকার নেই। আমার বক্তব্যের সমর্থনে জানাই (১) অস্ত্রশস্ত্রের সংখ্যা নির্ভূল নয়। কারণ গত ২৫ মার্চের অব্যবহিত পরে আমেরিকা আর পাকিস্তানকে অস্ত্র পাঠাবে না বলে জানানাে সত্ত্বেও দীর্ঘকাল চোরাপথে যেসব অস্ত্র পাঠাচ্ছিল তার সঠিক হিসাব পাওয়া সম্ভব নয়। এখনাে যে পাঠাচ্ছে না এমন কথাও জোর করে বলা যায় না। তাহলে এই ৭/৮ মাস ধরে পাঠানাে অস্ত্রের সংখ্যা (সঠিক জানা না থাকলেও) শ্রীদাশগুপ্ত পরিবেশিত পরিসংখ্যানের কলেবর বৃদ্ধি করবেই। তা ছাড়া চীনের দেওয়া অস্ত্রশস্ত্রের হিসেব পাওয়া যে সম্ভব নয় একথা লেখক নিজেও স্বীকার করেছেন। (২) অস্ত্রশস্ত্রের উত্তর্ষে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতীয় সেনাবাহিনীর চেয়ে উন্নত-একথা যুক্তিহীন নয়। পাকিস্তানের আন্ডারগ্রাউন্ড হ্যাঙ্গার প্রচুর আছে। সারগােদা বিমানের মত মজবুত এ নিম্নস্থ বিমানক্ষেত্র সম্ভবত ভারতের একটি নেই। তাছাড়া অতিদূরপাল্লার কামান ও র্যাডার ব্যবস্থাযুক্ত আর্টিলারিও পাকিস্তানের আছে বলে শােনা যায়। আর আছে অসংখ্য আমেরিকান টেকনিশিয়ান। সবশেষে যা আছে তা হলাে প্রতিটি পাকিস্তানীর মধ্যে যুদ্ধের উন্মাদনা, শত্রুকে চূর্ণ করবার জন্য তীব্র ঘৃণা। যেখানে ভারতকে নিয়ে কথা সেখানে পাকিস্তানীরা চিরকাল একতাবদ্ধতা’ সে বিমান ছিনতাই বা হকি খেলা অথবা সশস্ত্র সংঘর্ষ নিয়েই হােক । সুতরাং ভারত ও পাকিস্তানের অস্ত্রশস্ত্রের সংখ্যা ও উৎকর্ষ অথবা জনগণের একতা ও ঐকান্তিকতা ইত্যাদি নিয়ে তুলনা করলে দেখা যাবে যে, জিরাে আওয়ারের আগে পর্যন্ত কোন কোন বিষয়ে উভয় দেশের অবস্থা সমান আবার কোন কোন ক্ষেত্রে একে অপরের চেয়ে উন্নত।
শ্রীদাশগুপ্তের প্রবন্ধে যে প্রসঙ্গের উল্লেখ থাকলে প্রবন্ধটি সর্বাঙ্গীণ হতাে তা হলাে পঞ্চমবাহিনীর কথা। ভারতকে এ বিষয়ে অধিকতর সতর্ক ও সক্রিয় থাকতে হবে। কারণ দুঃখের হলেও কথাটা সত্যি-পাকিস্তানপ্রেমী, চীন-প্রেমী, আমেরিকা প্রেমীর সংখ্যা ভারতে প্রচুর থাকলেও দেশপ্রেমিকের সংখ্যা খুব বেশি নেই। তার বদলে আছে অসংখ্য কালােবাজারী, স্বার্থান্বেষী, সুবিধাবাদী ব্যক্তি আর অবক্ষয়ের রাজনীতি। -সফিউল রহমান, কলকাতা। গত বৎসর ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের মধ্য দিয়ে পাক-ভারত উপমহাদেশে নতুন ইতিহাসের বহু সম্ভাবনাময় নবঅধ্যায় রচনার সূচনা হয়েছিল। এক বৎসর ধরে নানা বিপর্যয়, জঙ্গীজুন্টার পাশবিক অত্যাচার, ধ্বংস আর হত্যার অবর্ণনীয় দৃশ্য, সাত কোটি মানুষের জল্লাদ-আতঙ্ক, সব বঞ্চিত এক কোটির দেশত্যাগ, নারী নির্যাতন-অবমাননা সর্বশেষে ভারত-পাক যুদ্ধ পরিস্থিতির উদ্ভব-সব সম্ভাবনাকে রাহুগ্রস্তের মতাে ঘাের অনিশ্চয়তার আবর্তে নিক্ষেপ করতে উদ্যত। ইতিহাসের নিষ্ঠুর পরিহাস। কে জানে এর পরিণতি কী?
শ্রীআবদুল গাফফার চৌধুরী ১ নবেম্বরের আনন্দবাজারে সেই ইঙ্গিত তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, বিপদ সাত কোটির শুধু নয়, এ বিপদ ষাট কোটির । বিপদ বাংলাদেশের শুধু নয়, বিপদ ভারত তথা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার । বিপদ বিশ্বমানবতার । এই ফ্যাসিবাদের জন্ম আইয়ুব খায়ের ক্ষমতা দখলের সময় নয়। ইয়াহিয়া খায়ের পরিণতিকে সেই বিপদ মারাত্মক হয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে একথাও শেষ সত্য নয়। এই ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়েছে সেইদিন যেদিন হিন্দু-রাজত্বের কল্পিত অত্যাচারের । ভীতিগ্রস্ত মানসিকতা থেকে মুসলিম লীগের জন্ম হয়েছিল। যেদিন থেকে লীগের নেতারা ইসলামী জাতীয়তাবাদ’ নামীয় একটি প্রেতাত্মাকে সযত্নে লালন-পালন করতে শুরু করেছিলেন। যার অন্য পরিচয় ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতা’। সেই বিষাক্ত জীবানুর অবাঞ্ছিত প্রক্রিয়ার জন্ম হয় যে দেশটির তারই নাম পাকিস্তান’। ফ্যাসিবাদের প্রতীক পাকিস্তান ধ্বংসের মুখােমুখি দাঁড়িয়ে জন্মের রক্তের ঋণ শােধ করছে। যুদ্ধ একটা না হয়ে পারে না। পাকিস্তান চাপিয়েও দিতে পারে। ভারত বাধ্য হয়েই ওপাশে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধী চেকারসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মিঃ হীথের সঙ্গে আলােচনার সময় সেকথা স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন বলে বােঝা যাচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্ত বরাবর যুদ্ধে মহড়া উত্তেজনা সৃষ্টি করে চলেছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের আঘাতে খান সৈন্যবাহিনী পর্যদুস্ত হচ্ছে। বিশ্ব জনমত তা সত্ত্বেও যথেষ্ট সচেতন না হলে পাকিস্তানী ফ্যাসিবাদকে চিরতরে মুছে দিতে গণতান্ত্রিক ভারতকে শেষ পর্যন্ত একটি ন্যায় যুদ্ধে’র বােঝা মাথা পেতে নিতে হবে। তা না করলে এই ফ্যাসিবাদ ভারতের মানবতাবাদ, গণতন্ত্র, সেকুলারবাদ, সমাজতন্ত্রবাদ, সবকিছুকে ঘাের বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দেবে।
-নুরুল আলম, কলকাতা। সারা দেশ জুড়ে যুদ্ধের থমথমে আবহাওয়া। ব্ল্যাকআউট। সাইরেন। সৈন্য গুলি। সংঘর্ষের মুখােমুখি। নেতারা মুখে চাবি দিয়েছেন। এতদিন যারা আস্ফালন করছিলেন, শুধু যাদের অস্ত্র ছিল ডায়াসের হাত-পা ছোঁড়া হুঁড়ি, হুলুস্থুল কাণ্ডের জন্য যারা শাসিয়ে আসছিলেন তারা কেন চুপ? | যুদ্ধের পূর্বে দেশের শ্রমিক মজদুর, গরীব, ধনী, জাতিধর্ম-নির্বিশেষে সম্প্রীতির সৌহার্দের আলাের দিকে পিঠ করে বসার জন্য নেতাদের জরুরী আহ্বান জানানাে তাে প্রয়ােজন ছিল। অন্তত দু-একটা বাণী, সমাবেশ, বিবৃতি পর্যন্ত দিলেও হতাে। কিন্তু তার লক্ষণ নেই। ব্যবসায়ীদের বাজার ভালাে হয়েছে। কিন্তু রাজনীতিবিদের বােধ হয় মন্দা। তাই বােধ হয় শােকে-দুঃখে মৌব্রত।
-এ এফ কামারুদ্দীন আহমদ, হুগলি। চীন-ভারত মৈত্রী ভারত বরাবরই কামনা করে এসেছে-এমনকি ১৯৬২ সালে চীনের ভারত আক্রমণ সত্ত্বেও, তারপর ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের ভারতে আক্রমণকালে চীনের ভারত-শাসানাে ভ্রকুটি সত্ত্বেও। কিন্তু, চীনকে আমরা দেখতে পাচ্ছি—ক্ষণে তুষ্টে, ক্ষণে রুষ্ট। হিন্দী-চীনী ভাই-ভাইয়ের যুদ্ধে আমরা তুষ্ট। চীনের মুচকি হাসি দেখেছি-তারপর, ১৯৬২ আর ১৯৬৫ সালে রুষ্ট চীনের ভ্রুকুটিও দেখেছি। এখন পিঙপঙ রাজনীতির যুগে আবার তুষ্ট চীনের মুচকি হাসি দেখছি। একান্ত মনে কামনা করি চীনের এই পরিতােষ যেন স্থায়ী হয়। এশিয়ায় য়ুরােপের আধিপত্য বিস্তারের আগে চীন-ভারত মৈত্রী বরাবরই ছিল। এখনও স্থায়ী মৈত্রী বরাবরই ছিল। এখনও স্থায়ী মৈত্রী উভয় দেশের মধ্যে হতে পারে যদি উভয় দেশই নিজেদের অর্থনীতিকে স্বাধীন করে তুলতে পারে;-অর্থাৎ, চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য যদি হংকং ও সিঙ্গাপুরের উপরে অতিমাত্রায় নির্ভরশীল না থাকে এবং ভারতের মুদ্রাব্যবস্থা যদি স্টালিং-এর উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল না থাকে। দুঃখের বিষয় অদূর ভবিষ্যতে চীন বা ভারত উপরােক্তরূপে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করতে পারবে এমন কোন আশার আলাে এখনও দেখতে পাচ্ছি না। অধিকন্তু আশঙ্কা রয়েছে-ইয়াহিয়াচক্রের চক্রান্তে ‘বাংলাদেশ” উদ্বাস্তুদের পরিত্যক্ত জনপদে না চীনা অধ্যুষিত অঞ্চল গড়ে উঠে এবং ফলত বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের এক নয়া ঘাঁটি-নয়া সিঙ্গাপুর না স্থাপিত হয়। -সত্যানন্দ নন্দী, নয়াদিল্লি।
১০ নভেম্বর, ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ খন্ড -০৭ , আনন্দবাজার পত্রিকা