You dont have javascript enabled! Please enable it!

কলকাতা-ঢাকা-কলকাতা (৪) বাংলাদেশের ডায়েরি

— অরুণ চক্রবর্তী

৪ এপ্রিল, রাত। আজ বিকেলে পিরােজপুরে এসে পৌছেছি। পিরােজপুর বাজারের দক্ষিণে আধ মাইল একটা আঁকাবাঁকা রাস্তা বেয়ে গ্রাম্য পরিবেশে হক সাহেবের বাড়ি। বাড়িতে মা, বাবা, আর তার দুই ভাই আছেন। হক সাহেবকে খুব ভালাে লাগছে। এদের পরিবারও খুব প্রগতিশীল। দুই ভাই ক্ষেতখামারের কাজ করে। কিন্তু খুবই সচেতন মানুষ। এখন তারা হাল ছেড়ে গ্রামের লােকেদের সংগঠিত করতে ব্যস্ত। | এরা সবাই আমার পরিচয় জানে। গ্রামের লােকেরা নয়। বরিশাল আমরা যখন পিরােজপুরের দিকে আসছিলাম, আজ এক বীভৎস দৃশ্য দেখেছি। আমার সারা শরীর আজ সেই বীভৎসতাকে প্রত্যক্ষ করে শিউরে উঠছে। 

রাস্তার ধারে এক ভীড় দেখে নামি। দেখলাম, পাঁচজনের এক পরিবারের সবাই নিহত। সম্ভবত কর্তা যিনি, পেট চিরে ফেলা হয়েছে তার। স্ত্রীর সারা দেহে ধর্ষণের স্পষ্ট চিত্র। ব্লাউজ হেঁড়া, এলােমেলাে শাড়ি কোমর পর্যন্ত ভােলা। সারা বুকে রক্ত চাপ চাপ। দূরে এক যুবকের মৃতদেহ। কাঁধের কাছ থেকে গলা অবধি ধারালাে অস্ত্রের আঘাত। দুটি ছােট ছােট ছেলেমেয়ে রাস্তার ধারে গর্তে। তাদের দেহের আঘাত সাঠিক কোথায় দেখা গেলাে না, তবে চাপচাপ রক্ত সারা দেহে। মনে হলাে ডাকাত কিংবা লুঠেরার কাজ। কেননা, এলাে মেলাে জিনিসপত্র ছাড়ানাে। ঢাকার পথে মৃতদেহের স্তুপে যে বীভৎসতা এ যেন তার চেয়েও অনেক বেশী। এরা নিরাপদ স্থানে আসছিল হয়তাে। হয়ত আসছিলাে বরিশালে। জানি না। ঘুরে ফিরে এই বীভৎস দৃশ্য মনে পড়ছে। আর এক অস্বস্তি অনুভব করছি। আমাকেও তাে যেতে হবে অনেক পথ। বিছানায় খাবার নিয়ে এলেন হক সাহেব। খেয়ে ঘুমােবার চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। হচ্ছে না। খুলনা, ৫ এপ্রিল, রাত আজ খুলনার দৌলতপুরে এসে পৌছেছি সন্ধ্যার কিছু পরে। রাত সাতটা থেকে খুলনাতে কার্য চলছে। 

খুব ভােরে আমি আর হক সাহেব পিরাজপুর থেকে হেঁটে রওনা হয়েছি। গড়াই নদীর পশ্চিম পার পর্যন্ত হক সাহেব আমাকে এগিয়ে দিলেন। বিদায়ের সময় বললেন, অরুণবাবু, জয় আমাদের হবেই। স্বাধীন আমরা হবই, আপনি জানবেন। আমি “জয় বাংলা” বলে তার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি। পশ্চিম পারে এসে বেবী-ট্যাক্সি পেয়ে গেলাম। স্বাভাবিক পরিস্থিতি খুলনা জেলার এই অংশে। সবাই হাসিখুশিই মনে হল। হাটবাজার করছে সকলে। রাস্তার দুপাশ দিয়ে লােকজন দেখতে দেখতে চললাম। রাস্তাটা খুব ভালাে নয়। বেবী ট্যাক্সি ধীরে ধীরেই চলছিল। | ড্রাইভারের সঙ্গেই গল্প ফাঁদতে শুরু করতে হল। সে জানে, আমি ঢাকার বাসিন্দা। ঢাকার গল্প চালাচ্ছিলাম। পাল্টা শুনলাম, খুলনা যাবার পথের বর্ণনা। হক সাহেব যেমন পথনির্দেশ দিয়েছিলেন, ড্রাইভারও সেই কথাই বলল।

রূপসা থেকে ভৈরব নদী পেরিয়ে পশ্চিম পার দিয়ে হেঁটে খুলনা শহরের দিকে এগিয়ে যাওয়াতেই নিরাপত্তা বেশী । | প্রায় কুড়ি মাইল পথ পেরিয়ে বাগেরহাট রেলওয়ে স্টেশনে পৌছুলাম। ভাবতে পারিনা আমি ট্রেনে চাপবার সুযােগ পাবাে। টিকিট কাটতে গিয়ে এই বিস্ময়টা বেশী করে বাজল। বাগেরহাট স্টেশনে জয় বাংলা পতাকা উড়ছে। খুব আস্বস্ত হলাম। স্বাধীন অঞ্চলে আছি, এই ভাবনা আমাকে কিছুক্ষণের জন্য নিশ্চিন্ত রাখতে পারবে বলে মনে হয়। পাঁচটা বগির একটা ট্রেন ছাড়বে। যাত্রী খুব অল্প দেখলাম। আমি তুলনামূলক ভাবে বেশী যাত্রীর একটা বগীর কোণে চুপচাপ বসে থাকলাম। হাতে ছাতা, পরণে লুঙ্গি, চোখেমুখে উল্কণ্ঠা। এ এক আশ্চর্য সময়। দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা খুব কম লােককেই ভাবতে দেখেছি। তাদের কথাবার্তা সংক্ষিপ্ত। যা হয়, তা বর্তমান বীভৎসতার কথা, নচেৎ রাস্তার নিরাপত্তার কথা। আমার খুব ভয় ছিল রাত সাতটার আগে খুলনার সেই জুটমিলে গিয়ে না ঢুকতে পারলে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে উঠবে পারে।

রূপসা স্টেশনে নেমেই আমি উর্ধ্বশ্বাসে ছুটেছি খেয়া ঘাটের দিকে। ভৈরব নদীর পশ্চিম পারে যেতে হবে। পূর্ব পারে খুলনা শহর। তাই এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। নদীটাকে একটু দূরে রেখে হেঁটে চলছিলাম, উত্তর দিকে। বামে সুর্য তখন হেলে পড়েছে অনেকখানি। জাঙ্গিয়ার ভেতর থেকে সন্তর্পণে ঘড়িটা বের করে দেখলাম, চারটে বাজতে কয়েক মিনিট বাকী। উদ্ধশ্বাসে হাঁটতে থাকি। প্রায় বার মাইল পথ।  কিছুদূর এসে দেখতে পেলাম, ভৈরবের জলে মৃতদেহ ভাসছে। পচা গন্ধ ছড়িয়েছে। মড়া-পচা গন্ধ এই প্রথম নাকে এল । আমি এগিয়েও সে গন্ধকে দূর করতে পারলাম না। সম্ভবত পাড়েও মৃতদেহ পড়ে আছে। কিছুদূর এগিয়ে এসে দেখলাম, এক দল লােক কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়ছে। এক পাশে কেউ মৃতদেহ কবরে ফেলছে, কেউ কেউ মাটি দিচ্ছে। ভালাে করে তাকিয়ে দেখলাম পবিত্র পুস্তক হাতে কেউ সেখানে দাড়িয়ে নেই। আমি এদের কয়েকগজ দূর দিয়ে হেঁটে চলছিলাম। ওদের নাকে গামছা বাঁধা। সবাই নিঃশব্দ । আমার খুব ভয় করতে শুরু করল। তবে গন্ধ থেকে বুঝলাম, এই সব মৃতদেহ সাম্প্রতিক নয় অনেক দিনের। দলে দলে লােক যাতায়াত করছে। নারী, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ সবাই। সবার হাতেই একটা দুটো জিনিসপত্র। খুলনা থেকে এদিকে আসার লােকের সংখ্যাই বেশী। আমার আগে পিছে মাত্র কয়েকজন উত্তরমুখী। খুলনা শহরের নানা বিল্ডিং চোখে পড়ছে। তখন ছটা বেজে গেছে। ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ছটার দিকে ছুটছে। অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে পশ্চিমের আকাশে চাঁদ তখন বেশ স্পষ্ট। 

দেখলাম খেয়া ঘাট। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, জুট মিলটার নাম করে, ও ঘাটে কোন নৌকা যাবে। অপর পারে খুলনা নিউজ প্রিন্ট এলাকা আলােয় ঝলমল করছে। ঘাট থেকে প্রায় পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রি কোণে সেই জুট মিল। কয়েক জন সেই জুট মিলেও যাচ্ছে। একটা ছােট নৌকায় উঠে পড়লাম, সতর্কে। সহযাত্রীরা শ্রমিক। তারাই জিজ্ঞেস করল, কার বাড়ি যাবাে। ওরা আমার বন্ধুকে চিনল। আমাকে এখানে পৌছে দিয়েছে তারা। ৭ এপ্রিল রাত দশটা কিছুক্ষণ আগে দৌলতপুরের রেল লাইনের ধার দিয়ে আগুন জ্বলতে দেখলাম। কুয়ে ভেদিস’ চলচ্চিত্রে রােম নগরী জ্বলা দেখেছি, ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’-এ মস্কোকে জ্বলতে দেখেছি, ছবিতে- এ আগুন সেই বীভৎসতার কথা মনে পড়িয়ে দিল।

আকাশে চাপা মেঘ। পুবের আগুন পশ্চিমের গাছগুলাের মাথার আকাশেও প্রতিবিম্বিত হয়েছে। সমস্ত আকাশ লাল। আমার গায়ে পাঞ্জাবী। লাল হয়ে গেছে তার রঙ। রক্তাভ দেখছি বন্ধুর গৌরবর্ণ চেহারাটাকে। আগুন লেগেছে এখান থেকে অন্তত এক মাইল দূরে। আকাশের বেশ কিছুটা উচুতে ধোয়াকে শাদা দেখছি। অবাঙ্গালীরা পাক-সৈন্যের সহায়তায় বাঙালী এলাকায় আগুন জ্বালিয়েছে। হত্যা চালাচ্ছে। আর্ত চিৎকার উঠছে। আমরা সবাই নিশ্ৰুপ। জুট মিলের অনেকেই চলে গিয়েছে। তবু, কিছু লােক সেখানে তখনও আছে। কুদ্ধ বাঙালীর হাত থেকে কিছু অবাঙালীকে তারা জুট মিলে আশ্রয় দিয়েছে। সবাই চুপ। আগুন এখন কমেছে। তবু জানালা দিয়ে পুবের আকাশ লাল দেখতে পাচ্ছি। এখনাে কোন দমকলের আওয়াজ শুনিনি। শুনলাম, তিন কোয়ার্টার মাইল দূরে কালেক্টর অফিসে মার্শাল ল’র হেড কোয়ার্টার। গুলির আওয়াজ কয়েকটা শুনেছি। থেকে থেকে। বন্ধু বলল, “অবাঙালীরা বাঙালী মারছে। সৈন্যরা ঘুমােচ্ছে এখন।” ৯ এপ্রিল, সকাল। গতকাল রাত্রে আকাশবাণীর সংবাদে শুনলাম, বেনাপােল-যশাের রােডের ঝিকড়গাছায় প্রচণ্ড লড়াই হচ্ছে । 

সম্ভবত যশাের এখন পাক সৈন্যের দখলে। আমি কোন পথে কলকাতার দিকে যাবাে বুঝতে পারছিনা। আমার ম্যাপটাতে সাতক্ষীরার কথা লেখা নেই। বন্ধুর কাছে শুনেছি, প্রায় পচয়তাল্লিশ মাইলের পথ। খুলনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে। পথ চিনি না। এই এলাকার ছাদে উঠলে দৌলতপুরের কিছু অংশ এবং খালিশপুর অঞ্চল দেখা যায়। চারপাশে অগ্নিদগ্ধ ঘরবাড়ি। কোথাও কোথাও মটর গাড়ি পুড়ে কালাে হয়ে আছে। বন্ধুর কাছে জেনেছি, খুলনা শহরের দক্ষিণে। সৈন্যরা চালিয়েছে নির্বিচারে গণহত্যা। হাসপাতালের সঙ্গে যােগাযােগ করে বন্ধু জেনেছিল, খুলনার দক্ষিণ থেকে খুব কম আহত মানুষ হাসপাতালে এসেছে। উত্তর থেকে-খালিশপুর এবং দৌলতপুর থেকে এসেছে। অস্ত্রঘাতে আহত নিহত অনেক ব্যক্তি। হাসপাতালের কোন বারান্দাই নাকি খালি ছিল না। এথেকে এটাই। স্পষ্ট হয়েছে, উত্তরের দাঙ্গায় কেউ অর্ধমৃত থাকলেও দক্ষিণের হত্যাকাণ্ডে তেমন কেউ ছিল না। সবাই নিহত।

প্রতিদিনই জ্বলছে আগুন। বাদ যায়নি একদিনও। বন্ধু বলল, এক ব্ল্যাক আউটের রাস্তায় খুলনা শহর দাঙ্গার আগুনে যথেষ্ট আলােকিত হয়েছিল। আমি পাঁচ তারিখে যে সব মৃতদেহ দেখেছি, সে সবই খালিশপুরের ব্যাপক দাঙ্গায় নিহত। খালিশপুরের দাঙ্গার পর যারা ভৈরবনদী পেরিয়ে পূবে পালাচ্ছিল, খুলনার একটি গান বােট তাদের কামানের গােলায় ধূলিসাৎ করেছে। এমনকী নদীর মধ্যে দিয়ে চলতে থাকা যাত্রী বােঝাই নৌকাতেও কাছে থেকে মেশিনগানের গুলি ছুঁড়েছে পাক-সৈন্য। বন্ধু প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ দিচ্ছিল নির্বিকারভাবে। আমি শিউরে উঠেছিললাম।  ১০ এপ্রিল, দুপুর খুলনা শহরে গতকাল প্রচণ্ড গােলাবর্ষণের শব্দ শুনেছি। এক সেকেন্ড দুই সেকেন্ডের তফাতে প্রচণ্ড আওয়াজ, কাঁচের শার্সিতেও শব্দ উঠেছে। ভয় হচ্ছিল। কেননা, গতকাল আমি আকাশে দুটো জঙ্গী বিমানকে উড়ে যেতে দেখেছি। বুঝলাম, পাক সৈন্যরা হাতের কাছে ভারত বলতে হিন্দুদেরই ধরে নিয়েছে। কিছুদিন আগে পাকিস্তান বেতার থেকে খবর প্রচারিত হয়েছে, পাকিস্তানের হিন্দুদের সহযােগিতায় ভারত পাকিস্তানকে নিশ্চিহ্ন করবার কাজে লিপ্ত। আমি নিজেই শুনেছি। তাই এরকম একটা সংবাদে বিস্মিত হলাম না।

বন্ধুকে চিন্তিত দেখলাম। আমিও ভাবছি। এই জনপ্ৰাণীহীন লােকালয়ে বন্ধুকে বিব্রত করা ঠিক হবে না। কিন্তু কোন উপায় দেখছি না। রাতে, বন্ধু, এসে বলল, বিভিন্ন হিন্দু বাড়ি, দোকান লুঠ হচ্ছে। পাক সৈন্যরা লুটেরাদের সঙ্গে। কিছু বাঙালী মুসলমানদের ছেড়ে দিলেও হিন্দুকে নির্মম হত্যা করছে। রাতের কাফুতে গা ঢাকা দিয়ে কিছু হিন্দু পরিবার তাদের মিলে আশ্রয় নিয়েছে। এই খবরটা ছড়িয়ে পড়লে পাকসৈন্য মিল আক্রমণ করতে পারে বলে মনে হচ্ছে। ওরা কয়েকজন রাত জেগে মিল পাহারা দিচ্ছে। ওদের কাছে তিনটে রাইফেল আর এক শ রাউন্ডের মতাে গুলি আছে। বন্ধু, কিছুক্ষণ আগে এসে আমাকে সাহস দিয়ে গেছে। | আমি কি করব ভেবে পাচ্ছি না। আমার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে। ফুলতলা, ১১ এপ্রিল, দুপুর বেলা দশটা নাগাদ আমি আর আমার বন্ধু তার টয়েটো করােনা চেপে তীব্র গতিতে খুলনা থেকে দশ মাইল দুরের ফুলতলার একটা গ্রামে এসে পৌছেছি। বন্ধু, আমাকে এ বাড়ির রশিদ মিঞার সঙ্গে পরিচয় করে দিয়ে চলে গেছে। আসবার সময় বিধ্বস্ত খুলনা আর দৌলতপুর দেখে এসেছি। পােড়া পােড়া আর পােড়া। জনশুন্য নগরী। খুলনা যশাের রেল লাইনের পাশ দিয়ে যাবার সময় আড়াই মিনিট ধরে ক্রমাগত ভস্মিভূত ঘরবাড়ি দেখেছি। শিউরে উঠেছে আমার অনভিজ্ঞ দেহ। 

ফুলতলার গ্রামে গ্রামে চলছে লুঠ। এক গ্রামের অনিল মাস্টার নিহত, অপর গ্রামের গুরুদাসবাবু নিহত। হিন্দুরা খালি হাতে পথে দাঁড়িয়েছে। তাদের কেউ খুন করছে না। তবে গােলার ধান পিঠে করে নিয়ে যাচ্ছে একজন, কেউ যাচ্ছে চালের টিন খুলে নিয়ে। কেউ চাল, কেউ চৌকি, খাট আলমারী থেকে শুরু করে জানালা দরজা, কুমড়াে, বেগুন, হাড়ি, পাতিল, খন্তা, দাও, আঁটা সব। অনেক রাত। সন্ধ্যার সময় বন্ধু এখানে এসেছে। তার সঙ্গে আরাে কয়েকজন বলিষ্ঠ যুবক। ওরা সবাই পাশের ঘরে ঢুকল। অনেকক্ষণ চাপা উত্তেজনায় কিসব কথাবার্তা আলােচনা করল। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর দৌলতপুর কলেজের অধ্যাপক বলে পরিচিত যুবকটি একটা কালাে প্যান্ট আর কালাে গেঞ্জী পরল। দেখলাম। তারপরে দেখলাম, বন্ধু সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে গেল। সবার দেহেই কালাে পােশাক। সকলের সঙ্গে পরিচয় করা ছাড়া বন্ধু, আমার সঙ্গে বেশী কথা বলার সুযােগ পায়নি।

২৭ এপ্রিল, ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ খন্ড -০৭ , আনন্দবাজার পত্রিকা

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!