You dont have javascript enabled! Please enable it! বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (১) - হাসান মুরশিদ - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত (১)

— হাসান মুরশিদ

যদিও গীতবিতানে স্বদেশ-পর্যায়ের গানের প্রথমেই আছে আমার সােনার বাংলা আমি তােমায় ভালবাসি’, তবু, রবীন্দ্রনাথের আড়াই হাজার গানের মধ্যে এ গান খুব বেশি গুরুত্ব ও মর্যাদা পেয়েছে, এ কথা বললে বােধ হয় অত্যুক্তি করা হবে। প্রকৃতপক্ষে, বঙ্গভঙ্গের কালে রচিত অনেকগুলি সুন্দর গানের মধ্যে সােনার বাংলা একটি। ‘সােনার’ বিশেষণ, তােমায় ভালবাসি’ এই সরল অঙ্গীকার এবং সহজ অথচ আকর্ষণীয় সুরের জন্যে এ গানটি স্বভাবতই আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে। তবু বহু গানের ভিড়ে এ গানটি সম্ভবত মিশে যাচ্ছিল। কিন্তু নতুন তাৎপর্য নিয়ে এগানের পূনর্জন্ম হয়েছে বাংলাদেশে। আর তারই ঢেউ লেগে এ বাংলাতেও ইদানীং ‘সােনার বাংলা নতুন দ্যোতনার সৃষ্টি করেছে।

সম্প্রতি এ গানটির বিষয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় দুখানি চিঠি প্রকাশিত হয়েছে। সে চিঠি দুটো পড়ে অবাক ও বিচলিত না হয়ে পারিনি। এ গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কিনা এ নিয়ে বিতর্ক ওঠাতে অবাক হয়েছি। কেন না, আমরা সন্দেহাতীতভাবে ধরে নিয়েছিলাম- এ হচ্ছে আমাদের জাতীয় সংগীত । আর বিচলিত হয়েছি সে সন্দেহ উঁকি দেওয়াতে। আলােচ্য চিঠি দুখানির প্রথমটিতে শামসুল আলম যে বলেছেন, বাংলাদেশ একটি গণ-অভ্যুত্থানের ফলশ্রুতি’- এ বিষয়ে সম্ভবত খুব বেশি বিতর্কের অবকাশ নেই। কারণ, ঠিক কখন কীভাবে স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতার দাবি জন্ম নিয়েছে, নির্দিষ্ট করে তা বলা যাবে না। বস্তুতপক্ষে, স্বাধীন বাংলার জন্যে আন্দোলন কোনাে নির্দিষ্ট মুহূর্তে শুরু হয়নি। লাহাের প্রস্তাব যেমন আনুষ্ঠানিক ভাবে একটি দিনে একজন মানুষ উত্থাপন করেছিলেন, বাঙলার মুক্তি ও স্বাধীনতা তেমনি করে কেউ চান না। বহুকাল ধরে একটি গণঅন্দোলন ধীরে ধীরে সে পথে অগ্রসর হয়েছে। একদিন শেষ পর্যন্ত স্পষ্ট করে সবাই সােচ্চার হয়েছেন পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে। সেই শুভক্ষণে, এমনকি যারা বিশ্বাসী সংসদীয় গণতন্ত্রে, তাঁরাও আশাবাদী হয়ে পশ্চিমী সামরিক সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছেন- যদিও সকল বাস্তব দিক দিয়ে ভােটের মাধ্যমে সে দাবি আদায় ছিলাে একান্তভাবে অসম্ভব। তবু গণতন্ত্র বিশ্বাসী বাঙালীরা আস্থা রেখেছিলেন সামরিকচক্রের অমৃত ভাষণে। তাদের মােহ অবশ্য ভেঙ্গে দিলাে পয়লা মার্চ যখন ইয়াহিয়া সাহেব জাতীয় পরিষদের অধিবেশন পিছিয়ে দিলেন। তারপর থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণকে চালিত করেননি, বরং জনগণই  পথ দেখিয়েছেন প্রতিনিধিদের।

পয়লা মার্চ যে রাজশাহির ছেলেরা পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়েছিল, কে তাদের সে পরামর্শ অথবা নির্দেশ দিয়েছিলাে? দোসরা মার্চ ঘুম থেকে উঠে যে ইনজিনিয়ারিং কলেজ ভবনের মাথায় দেখলুম সবুজলাল বাংলাদেশের পতাকা পপত্ করে উঠছে, সে পতাকার পরিকল্পনা কে করেছিলাে? কে তা টানানাের আদেশ দিয়েছিলাে? দোসরা মার্চের মিছিলে যে শ্লোগানগুলি উচ্চারিত হয়েছিলাে- বীর বাঙালী অস্ত্র ধরােবাংলাদেশ স্বাধীন করাে’, ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়াে বাংলাদেশ স্বাধীন করাে’, ইয়াহিয়ার মুখে লাথি মারােবাংলাদেশ স্বাধীন করাে,’ ‘ভুট্টোর মুখে লাথি মারাে- বাংলাদেশ স্বাধীন করাে’, ইত্যাদি-সেগুলি কে শিখিয়ে দিয়েছিলাে কৃষকদের, শ্রমিকদের, ছাত্রদের, চাকুরেদের? তখনাে পর্যন্ত পূর্ব বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রিয় নেতা মুজিবর রহমান রেসকোর্সে তার ঐতিহাসিক ভাষণ দেননি। প্রকৃতপক্ষে,জনগণ দোসরামার্চ যে দাবি তুলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু তারই প্রতিধ্বনি করে সাতই মার্চ বলেছিলেন, “তােমরা ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তােলাে’, ‘তােমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মােকাবিলা করাে’, ‘ওদের আমরা ভাতে মারবাে, পানিতে মারবাে’, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশকে জনগণই জন্ম দিয়েছেন। এবং সেই জনগণই পরিকল্পনা করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নির্বাচন করেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। অন্যান্য দেশের মতাে কোনাে সরকার তার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এসব স্থির করেননি। তবু পরিশেষে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার ঘখন শপথ নিলেন তখন জনগণ কর্তৃক পরিকল্পিত পতাকা- সবুজ এবং লাল রং নিতান্ত পরিবর্তনশীল ও মানচিত্রটি পতাকার পক্ষে অনুপযােগী হওয়া সত্ত্বেও মেনে নিয়েছেন প্রাপ্য সম্মান প্রদর্শন করেছেন। সতেরােই। এপ্রিল মুজিবনগরে যখন স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ানাে হয়, আনুষ্ঠানিক ভাবে তখন জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গীত হয় ‘আমার সােনার বাংলা আমি তােমায় ভালােবাসি’। দিল্লিতে যখন এ সপ্তাহে বাংলাদেশে মিশনের উদ্বোধন করা হলাে, তখন জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে বেজে উঠেছে, “আমার সােনার বাংলা’ কেউ সিদ্ধান্ত নেননি লিখিতভাবে, তবু সকলের অগােচরে সােনার বাংলাই জনগণ কর্তৃক স্বীকৃত হয়েছে জাতীয় সংগীত বলে। উপরিউক্ত অনুষ্ঠানদ্বয়েও সে গান তবে যথার্থ স্বীকৃতি লাভ করেছে।

আমাদের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জনাব তাজউদ্দীন আহমদ সহ মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ এবং উপস্থিত সকলেই দাড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন এ গানের প্রতি। কেউ তাদের বলে দেননি, তবু তারা জানতেন এই তাদের জাতীয় সঙ্গীত। আজ মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রশিক্ষণ শেষে যে অনুষ্ঠানে মিলিত হন, সেখানেও তাদের প্রিয় জাতীয় সঙ্গীতরূপে গাওয়া হয় আমার সােনার বাংলা’। এরপর তারা প্রস্তুত হন তাঁদের দেশ, তাদের জাতীয় পতাকা, তাদের জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে।  কি করে সােনার বাংলা’ ধীরে ধীরে পূর্ব বাংলায় জনপ্রিয় হলাে এবং পরিশেষে সে দেশের চরম সম্মানের। বস্তু বলে বিবেচিত হলাে, সে সম্পর্কে কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক।  সে দেশের কবি নিসর্গের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে দেশমাতৃকার প্রতি অকুণ্ঠ ভালােবাসা জানাতে গিয়েও বাংলাদেশ” কথাটি উচ্চারণ করতে পারেন না, অথবা সাহস পান না, সে দেশে ‘আমার সােনার বাংলা’ হাই-টেনশনের ঝুঁকি না নিয়ে গাওয়া যায় না। তবু রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় এগারাে দিনব্যাপী যে অনুষ্ঠান হয় সেখানেই সংস্কৃত সেবী কিছু শিল্পী দুঃসাহস নিয়ে সামরিক শাসনের রক্তচক্ষুকে অগ্রাহ্য করে গেয়েছিলেন ‘আমার সােনার বাংলা আমি তােমায় ভালােবাসি’। রবীন্দ্র সঙ্গীত হিসাবেই বােধ হয় সেদিন এগান গাওয়া হয়েছিলাে। অথবা পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিলাে। তখন বাঙালী জাতীয়তাবােধের উন্মেষের যুগ। কতজনের ভালাে লেগেছিল এ গান তা অনুমানসাপেক্ষ। কিন্তু দশ বছর পর সে গানই বাংলাদেশের সকলের পবিত্র সম্পদে পরিণত হয়েছিলাে। তার দুবছর আগে ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের সময়েই অবশ্য এ গান রীতমত জনপ্রিয় ও বাঙালী জাতীয়তাবােধের প্রতীকে পরিণত হয়।

১৯৬১ সালে রবীন্দ্র শতবর্ষে যে গান ও বাংলায় আনুষ্ঠানিকভাবে গাওয়া, তাকে পরবর্তীকালে জনপ্রিয় করেন প্রধানত দুটি প্রতিষ্ঠান। “ছায়ানট” তাদের প্রায় সকল অনুষ্ঠানই এ গানটি শােনাতেন। এবং গত | দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে বুলবুল ললিতকলা অ্যাকাডেমিও এ গানটিকে “ছায়ানটের মতাে মর্যাদা দান মানচিত্রটি পতাকার পক্ষে অনুপযােগী হওয়া সত্ত্বেও মেনে নিয়েছেন প্রাপ্য সম্মান প্রদর্শন করেছেন। সতেরােই। এপ্রিল মুজিবনগরে যখন স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ানাে হয়, আনুষ্ঠানিক ভাবে তখন জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে গীত হয় ‘আমার সােনার বাংলা আমি তােমায় ভালােবাসি’। দিল্লিতে যখন এ সপ্তাহে বাংলাদেশে মিশনের উদ্বোধন করা হলাে, তখন জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে বেজে উঠেছে, “আমার সােনার বাংলা’ কেউ সিদ্ধান্ত নেননি লিখিতভাবে, তবু সকলের অগােচরে সােনার বাংলাই জনগণ কর্তৃক স্বীকৃত হয়েছে জাতীয় সংগীত বলে। উপরিউক্ত অনুষ্ঠানদ্বয়েও সে গান তবে যথার্থ স্বীকৃতি লাভ করেছে।

আমাদের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জনাব তাজউদ্দীন আহমদ সহ মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ এবং উপস্থিত সকলেই দাড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন এ গানের প্রতি। কেউ তাদের বলে দেননি, তবু তারা জানতেন এই তাদের জাতীয় সঙ্গীত। আজ মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রশিক্ষণ শেষে যে অনুষ্ঠানে মিলিত হন, সেখানেও তাদের প্রিয় জাতীয় সঙ্গীতরূপে গাওয়া হয় আমার সােনার বাংলা’। এরপর তারা প্রস্তুত হন তাঁদের দেশ, তাদের জাতীয় পতাকা, তাদের জাতীয় সঙ্গীতের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে। | কি করে সােনার বাংলা’ ধীরে ধীরে পূর্ব বাংলায় জনপ্রিয় হলাে এবং পরিশেষে সে দেশের চরম সম্মানের। বস্তু বলে বিবেচিত হলাে, সে সম্পর্কে কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক। | সে দেশের কবি নিসর্গের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে দেশমাতৃকার প্রতি অকুণ্ঠ ভালােবাসা জানাতে গিয়েও বাংলাদেশ” কথাটি উচ্চারণ করতে পারেন না, অথবা সাহস পান না, সে দেশে ‘আমার সােনার বাংলা’ হাই-টেনশনের ঝুঁকি না নিয়ে গাওয়া যায় না। তবু রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় এগারাে দিনব্যাপী যে অনুষ্ঠান হয় সেখানেই সংস্কৃত সেবী কিছু শিল্পী দুঃসাহস নিয়ে সামরিক শাসনের রক্তচক্ষুকে অগ্রাহ্য করে গেয়েছিলেন ‘আমার সােনার বাংলা আমি তােমায় ভালােবাসি’। রবীন্দ্র সঙ্গীত হিসাবেই বােধ হয় সেদিন এগান গাওয়া হয়েছিলাে। অথবা পুলিশের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিলাে। তখন বাঙালী জাতীয়তাবােধের উন্মেষের যুগ। কতজনের ভালাে লেগেছিল এ গান তা অনুমানসাপেক্ষ। কিন্তু দশ বছর পর সে গানই বাংলাদেশের সকলের পবিত্র সম্পদে পরিণত হয়েছিলাে। তার দুবছর আগে ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের সময়েই অবশ্য এ গান রীতমত জনপ্রিয় ও বাঙালী জাতীয়তাবােধের প্রতীকে পরিণত হয়।

১৯৬১ সালে রবীন্দ্র শতবর্ষে যে গান ও বাংলায় আনুষ্ঠানিকভাবে গাওয়া, তাকে পরবর্তীকালে জনপ্রিয় করেন প্রধানত দুটি প্রতিষ্ঠান। “ছায়ানট” তাদের প্রায় সকল অনুষ্ঠানই এ গানটি শােনাতেন। এবং গত | দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে বুলবুল ললিতকলা অ্যাকাডেমিও এ গানটিকে “ছায়ানটের মতাে মর্যাদা দান সাত কোটি মানুষ নতুন প্রতিষ্ঠায় বলীয়ান হচ্ছেন। এ গান গেয়েই চিরদিন বাঙালী জাতি উদ্দীপনা লাভ করবে।

বাস্তবিকপক্ষে, পর্যালােচনা করলে দেখা যাবে, এ গানের চেয়ে অধিকতর উপযুক্ত ও উপযােগী কোনাে গানের কথা কল্পনা করা শক্ত। জাতীয় সঙ্গীতরূপে নির্বাচিত হতে হলে যে গুণগুলি থাকা প্রয়ােজন তার সবগুলিই এ গানের আছে। এ গানের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ- যিনি বাঙালী সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতেন ও বাংলায়। বস্তুত তাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমী শাসকচক্র ও তাদের তাবেদারগণ বারংবার আমাদের সাহিত্য সংস্কৃতির ওপর আঘাত হেনেছেন এবং আমরাও তাকে কেন্দ্র করে আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে উজ্জীবিত করে তুলতে চেয়েছি। আজ তার গান আমাদের জাতীয় সঙ্গীতরূপে নির্বাচিত হওয়াতে, বিশ্বকবির। প্রতি পূর্ণ মর্যাদা ও সম্মান প্রদর্শন করা হলাে। গানের একভাগে থাকে কথা, অন্যভাগে সুর। এর কথা যদিও বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি রচনা করেছেন, তবু তা সরল, সহজ, সুন্দর। এরমধ্যে কোনাে ভাবের জটিলতা নেই- সকল মানুষের উপযােগী এ গান । তদুপরি এর সুর রচিত হয়েছে পূর্ব বাংলার একটি পল্লীগীতিকে অবলম্বন করে। এগানে অঙ্কিত নিসর্গ যেমন একান্তভাবে পূর্ব বঙ্গীয়, এ গানের সুর তেমনি একান্তভাবে পূর্ববঙ্গীয় পল্লী গীতি।

এ গানের ছত্রে ছত্রে পূর্ব বাংলার মাটি ও মানুষের প্রতি উদাত্ত ভালােবাসা প্রকাশ পেয়েছে। একদিকে কবি যেমন দেশের প্রকৃতি দৃষ্টে মুগ্ধ, অন্যদিকে তেমনি দেশের রাখাল, দেশের চাষী সকলে যে ভ্রাতৃস্নেহের সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ সে কথায় সােচ্চার। এ গানের কথা এবং সুরে আশ্চর্য এক প্রশান্তি ও ঔদার্য প্রকাশ পেয়েছে। তাছাড়া এ গান অনেককাল ধরে সকল মানুষের শ্রদ্ধা ও স্বীকৃতি পেয়েছে সংগ্রামের বন্ধুর পথে এ গান তাদের উজ্জীবিত করেছে। এ গান তাই আজ তাদের যেরূপ আবেগে আপ্লুত ও তেজে উদ্দীপ্ত করতে সক্ষম, অন্য কোন গান সম্ভবত তা করতে সক্ষম হবে না।

২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ খন্ড -০৭ , আনন্দবাজার পত্রিকা