You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.29 | কলকাতার শারদ উৎসব ঢাকার চোখে- আবদুল গাফফার চৌধুরী - সংগ্রামের নোটবুক

কলকাতার শারদ উৎসব ॥ ঢাকার চোখে– আবদুল গাফফার চৌধুরী

কী দেখবাে, পূজো, প্রতিমা, না মানুষ? না-কি আলােকসজ্জা? ঢাকের বাদ্যিটাতেই কেবল পূজোর সুর। নইলে আর কোথাও পূজো কিংবা প্রতিমা নেই। আছে বাঙালীর ঘরের মেয়ের রূপচচিত মুখ। দেবীর প্রতিমার মুখ আর সন্তানের অসংখ্যনারী-মুখে বিস্ময়কর সাদৃশ্য।- কোন কোন মণ্ডপের চালচিত্রে যে সমাজ ও সংসারের স্থির ছবি তারই চলচ্চিত্র যেন মণ্ডপের ভিতরে ও বাইরে ভিড়ের মধ্যে রয়েছে । | ভবানীপুর এলাকার এক প্রশস্ত রাজপথ দিয়ে এগােতে গিয়ে মনে হল, এক বিশাল শােভাযাত্রার মধ্যে লীন হয়ে গেছি। এই শােভাযাত্রা সব বয়সের নারী-পুরুষের। সব ধর্মের মানুষের। নানা ভাষার কাকলি শুনেছি কানে। নানা ঢংয়ের নানা রংয়ের শাড়ি। কারাে পরণে ঘাগরা। কুঁজো হয়ে হাটেন, এক বৃদ্ধা তার মেয়ের হাত ধরে চলেছেন। চারদিকের ঘর আলােকমালা এড়িয়ে ট্রাম লাইনের উপরে আবছা আলােআঁধারিতে আলাপ জুড়েছে জোরা তরুণ-তরুণী। প্রতিমার দিকে চোখ নেই। পরস্পরের মধ্যে তারা প্রতিমাদর্শনের উৎসব অনুভব করছে। আরেকটু এগােতেই হেমগার্ড এলাে লাঠি উচিয়ে। এক দঙ্গল ছেলে বাঁশ দিয়ে ঘেরা সংরক্ষিত নারী-এলাকায় ঢুকে পড়েছে। টুকরাে টুকরাে সংলাপ কানে এলাে ঃ ‘এত আলােকসজ্জাও হয়নি। কিন্তু সমারােহ অনেক বেশী। এবার পাইপগান, ছিনতাই, আঁচল টানাটানির উপদ্রব কম।’ ওপার বাঙলার মানুষের দুঃখ এবার এপার বাংলার মানুষকেও স্পর্শ করেছে, তাই এ পরিবর্তন।’

আমার সঙ্গে হাঁটছিলেন ঢাকার জনপ্রিয় শিল্পী কামরুল হাসান। তিনি প্রতিমা দেখতে আসেননি। তিনি দেখছেন রংয়ের কাজ। দুর্গার ক্লে ইমেজে কনটেমপােরারি বাঙলার নেচার এবং বিউটি কতটা ফলিত হয়েছে তাই দেখছিলেন শিল্পীর চোখ দিয়ে। বললেন, ঢাকা বা বাংলাদেশের প্রতিমার এত রং, ফর্মের মিশ্রণ-আর মুখের আদলে ঘরের শ্রীছাদ চোখে পড়বে না। ওখানকার মূর্তি এখনাে দেবী। এতটা মানবী হয়ে ওঠেনি। সকালে বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসবে দেখা হয়ে গেল আরেক শরণার্থী মুসলমান বন্ধুর সঙ্গে। ঢাকা থেকে এসেছেন। তিনি বললেন আরেক কথা। বললেন, পারসিকরা (অধুনা ইরানি) যেমন ধর্মে মুসলমান হােক কিংবা অগ্নিপূজক যরর্দুস্তি হােক, তাদের অভিন্ন জাতীয় উৎসব নওরােজ। তেমন বাঙালী হিন্দু মুসলমানের অভিন্ন জাতীয় উৎসব হওয়া উচিত এই শারদ-উৎসব।

বললাম, এই উৎসবের মধ্যে প্রতিমা এবং পূজো দুইই রয়ে গেছে তা ভুলে যাচ্ছেন কেন? তিনি বললেন, না কোনটাই ভুলে যাইনি। কিন্তু আজকের এই বিপুল জনস্রোতের দিকে তাকিয়ে দেখুন। এই জনস্রোতে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃস্টান, সব সম্প্রদায়ের লােক পাবেন। এঁরা সকলেই আজ ঘরের বাইরে এসেছেন কিসের টানে? উৎসবের টানে। যে উৎসব সকলকে এমন করে টানে তা সর্বজনীন উৎসব, সকল বাঙালির উৎসব। পূজো আর প্রতিমা এখন উপলক্ষ্য হয়ে গেছে। এই বাগবাজার শােভাবাজার, কালীঘাট এর আরাে দু-একটি জায়গা ছাড়া প্রতিমার প্রাচীন দেবীরূপ পাবেন না কোথাও। দুর্গা এখন ঘরের মায়ের, বৌয়ের রূপ ধরেছেন। তার চারপাশে আধুনিক সমাজ-চিত্র। আগের বেলপাতা, কাসর ঘন্টা, আরতি-মন্ত্র, ধুপের ধােয়ার প্রাধান্য এখন নেই। চলুন না কলেজ স্কোয়ারের দিকে। শুনবেন হেমন্ত মুখারজির গলায়- ‘আজি শরত তপনে প্রভাত-স্বপনে-কী জানি পরাণ, কী যে চায়’ গান । কাজী সব্যসাচীর গলায় ‘বিদ্রোহীর আবৃত্তি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রেকরড-করা বক্তৃতা শুনবেন অনেক পূজোমণ্ডপে। এই বাগবাজারেরই পূজামন্ডপের পাশে “হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডারড’, ‘দেশ’ আর ‘আনন্দবাজারের উদ্যোগে করা হয়েছে জয়বাঙলা চিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। মণ্ডপের ভিড়ের চাইতে ওই প্রদর্শনীর ভিড় কি কম? ডানপাশেই আবার লােকমত প্রকাশনীর প্রদর্শনী। একটি চিত্র প্রদর্শনীতে শেরে বাঙলা ফজলুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের কাঁধে হাত রেখে হাসছেন। অন্যটিতে নেতাজী সুভাষ সৈনিকের ইউনিফরম পরে অভিবাদন নিচ্ছেন। বিজয় গড়ে- ভারত মাতা মূর্তির পাশেই গান্ধীজির কোলে মুজিবর-এই শারদ উৎসবে এই ছবি কি দুই বাঙলার এবং বাঙালিদের হৃদয়-সম্মিলনীর ছবি নয়?

বন্ধুবরের কথার সবটা তাৎপর্য তখন বুঝিনি। বুঝেছিলাম আরাে কটা পূজোমণ্ডপ ঘুরে। বাগবাজারের প্রতিমা প্রথাগত দেবীমুর্তি। পটলচেরা চোখে । ত্রিনয়ন। দেবীর মুখে যুগপৎরুক্ষ ও সৌম্যভাব। বৈশিষ্ট্য, একই কাঠামাের মধ্যে দুর্গা এবং তার সঙ্গী ও সঙ্গিনীরা। মাথার উপরে একটাই চালচিত্র। তাতে বাঙলার প্রাচীন সমাজ-চিত্র। একই চালচিত্রের আওতায় স্বামী-পুত্র কন্যা নিয়ে দুর্গার অবস্থান, বাঙলার একান্নবর্তী পরিবার-প্রথার প্রতীক। এই একান্নবর্তী পরিবার প্রথা এখন উঠে গেছে। যুগ পালটেছে। প্রতিমার অবস্থানও এখন তাই ভিন্ন ভিন্ন। চালচিত্র অনেক স্থানে নেই। কোথাও বা খণ্ড চালচিত্র। | ঢাকায় বা বাংলাদেশের অন্য কোন শহরে আমরা যারা দুর্গাপূজা দেখে অভ্যস্ত, তাদের কাছে কলকাতার উৎসবের পার্থক্য সহজেই চোখে পড়বে। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় অনুন্নত। ক্রমাগত দেশত্যাগের ফলে তাদের সমাজ জীবন খন্ড ও বিচ্ছিন্ন। ফলে যারা এখনাে দেশে রয়েছেন তারা পুরনাে পূজো প্রকরণ আঁকড়ে ধরে আছেন। দেশভাগের খঙ্গ দ্বিখণ্ডিত বাঙলার পূর্বাঞ্চলে শারােদৎসবে পরিবর্তনশীলতা আসেনি, প্রতিমা ‘দেবীই’ রয়ে গেছেন, এখনও পুরােপুরি মানবী’ হয়ে ওঠেননি। সর্বজনীন উৎসবের বদলে পূজো-প্রকরণের প্রাধান্য রয়ে গেছে। বাগবাজারের প্রতিমার সঙ্গে তাই বাঙলাদেশের প্রতিমার অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। একই আরচ এবং একটিই চালচিত্র। তাতে পুরনাে কৃষিভিত্তিক সমাজের অচল অপরিবর্তনশীল ছবি । বাঙলাদেশের সংখ্যালঘু, হিন্দু সম্প্রদায়ের জীবনে অনগ্রসরতা ও অনুন্নতির একটা স্পষ্ট ছবি ঢাকাসহ বাঙালাদেশের শহর ও পল্লীর অপরিবর্তনশীল পূজাপদ্ধতি ও দুর্গা প্রতিমা। ৬৯ সালে আইয়ুব সরকারের পতনের পর অনগ্রসরতার এই অচলায়তনে চিড় ধরেছিল। ঢাকার কুমারটুলির বয়ােকনিষ্ঠ পালেরা দেবীর দলে ‘মানবী মূর্তির দুর্গাপ্রতিমা নির্মাণে মন দিয়েছিলেন। শারদ উৎসব প্রকৃতই সকল বাঙালির জাতীয় উৎসবে পরিণত হতে চলেছিল। ঠিক এই নবরূপান্তরের সন্ধিক্ষণেই এলাে নতুন মহিষাসুরের মত ইয়াহিয়াচক্রের আঘাত। ছিন্নমূল হল আরাে নব্বই লাখ বাঙালি। এই ছিন্নমুল জীবনে শারদ উৎসবও খণ্ডিত এবং প্রথাগত। কল্যাণী ক্যাম্প, লবণ হ্রদ বা মধ্যমগ্রামের শরণার্থীদের যে কোন পূজো মণ্ডপ দেখলে এই সত্যটি অনেককেই উপলব্ধি করবেন।

কলকাতার শারদোৎসব যেমন আধুনিক, তেমনই সংরক্ষণশীলতা। কোথাও রয়েছে দুইয়ের মিশ্রণ। সমাজ-চিত্র কোথাও পৌরাণিক, কোথাও প্রাচীন, কোথাও অতি আধুনিক। পূজোমণ্ডপ তৈরিতে কোনারক, অজন্তা, সারনাথ এমনকি বাঙলাদেশের ময়নামতি-পাহাড়পুরের স্থাপত্য রীতির ছাপ পড়েছে। দুর্গাপ্রতিমা কোথাও নিখুঁত বাঙালি মাতৃমূর্তি, কোথাও আধুনিকা বাঙালিনী, কোথাও রাঙাচেলির বসনে একবােরে গ্রাম্য বালিকা, কোথাও বুকে কাঁচুলি, পরণে ঘাগড়া মারাঠিনী মূর্তি। রঙ ও বর্ণ বিন্যাস বিচিত্র। ফরমে কোথাও কোথাও মিসরীয় ছাপ পর্যন্ত এসেছে। বাগবাজারের প্রতিমা ৫৩ বছরের প্রথাগত ঐতিহ্যের সংরক্ষণ । শাস্ত্রে দেবীমূর্তি বর্ণনার যতটা সম্ভব অনুসরণ । শশাভাবাজার রাজাবাড়িতে চিরায়ত দেবীমূর্তি। কিন্তু বসনে নবাবী আমলের ঘরানার প্রভাব। কার্তিকের পরণেও চোগাচাপকান। মাথায় শামলা। কালীঘাটে ফরােয়ারড ক্লাবের পূজোমণ্ডপে দুর্গার ত্রিরূপধারিণী তিনটি প্রতিমার একসঙ্গে পূজো হচ্ছে। এখানেও তন্ত্রমন্ত্রের চাইতে আধুনিক। উৎসবের বাজনা ও সমারােহ বেশি। অন্যদিকে রবীন্দ্র কাননের প্রতিমা আধুনিক বাঙালি শিল্পকর্মের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। প্রতিটি প্রতিমার পিছনে রঙের বিন্যাসে উজ্জ্বল এক একটি কুলাে বাঙালি সংসার রীতির ছাপস্পষ্ট করে তুলেছে। কিন্তু বুকের গড়ন অনেকটা অজন্তার ঢংয়ে, মহারাষ্ট্রীয় ঢংয়ে কাপড় পরা। রংয়ের মিশ্রণ অত্যাধুনিক। মিশরীয় চিত্রকলার ছাপও স্পষ্ট। বিডন স্ট্রীটের (বেথুন কলেজের সামনে) প্রতিমা ট্র্যাডিশনাল। কিন্তু মুখের আদল যেন বাঙালী চিত্রতারকার। কার্তিকও আধুনিক যুবক। বৈশিষ্ট্য মণ্ডপ তৈরি ও মূর্তি স্থাপনায়। সারা মণ্ডপটিই তাসের ঘর। বিভিন্ন মূর্তি তাসের উপর প্রােজেকটেড। কোন বেদী নেই। একদিক থেকে জগৎ মুখার্জি পারক, এক নমবর ওয়ারডের পূজোমণ্ডপ টেক্কা দিয়েছে সবার উপরে। শিল্পী অশােক গুপ্তের এটি অনন্য কাজ। ত্রিমাত্রিক ঢংয়ে কেবল রংয়ের কারুকাজ দিয়ে দুর্গাকে নিখুঁত এক পল্লীবালিকা সাজিয়েছেন। পরণে লালশাড়ি সরু কালাে বরডার। লক্ষ্মীর হাতে ধানের শিস, সরস্বতীর হাতে বীণা। গনেশের ভূমিকা গণপতির। কার্তিক যুদ্ধোদ্যত। চালচিত্র নেই, তার বদলে ব্রাশ বুলিয়ে আধুনিক সমাজ-চিত্র দেওয়া হয়েছে।

লক্ষ্মীর পেছনে রয়েছে বন্যায় ডােবা ধানক্ষেত, একদল কৃষক। সরস্বতীর পেছনে অশিক্ষা ও কুসংস্কার বিতাড়নের প্রতীক হিসাবে দুটি ছবি। দুর্গার বাহন সিংহ নয় বাঘ। বাঙলার বাঘ। অসুরের সঙ্গে মহিষ নেই, সাপ। অর্থাৎ একেবারে খাঁটি বাঙলা দেশ। সাড়ে ১৫ বাই ২২ ফুটের বাের্ডের উপর এই মাতৃমূর্তির পরিকল্পনা। রংয়ের আলােচনায় অদ্ভুত আলােড়ন সৃষ্টি করে প্রাণে গােটা পরিকল্পনা লােকশিল্পের আঙ্গিকে। সাতাশের পল্লীর পুজোমণ্ডপ আবার কোণারকের মন্দিরের ঢংয়ে তৈরি। কলেজ স্কোয়ার, হাতিবাগান, কবীতীর্থের মণ্ডপও এই প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। শিয়ালদা সর্বজনীন উৎসবের প্রতিমা ও মঞ্চ স্থাপনায় আধুনিক ও প্রাচীন ঐতিহ্যের মিশ্রণ ঘটেছে। ভবানীপুরে সঙ্মিত্রের মণ্ডপে আগাগােড়া বাঁশের তৈরি প্রতিমা। বাঁশের কনচি কেটে তা পালিশ করে তৈরি। হিন্দুস্থান পারকের মূর্তিই তৈরি হয়েছে কারটিজ ও হ্যান্ডমেড কাগজ দিয়ে। সিমলা ব্যায়াম সমিতির প্রতিমার বেদী নির্মাণে ময়নামতি পাহাড়পুরের প্রভাব স্পষ্ট। দেবী মূর্তি কলেজ ছাত্রীর মুখাবয়ব পেয়েছে। কার্তিক ছবির হিরাে। এককালে সিমলা ব্যায়াম সমিতির সর্বজনীন দুর্গোৎসব নাকি বিদেশী ইংরেজ শাসকদের হৃৎকম্প ঘটাতাে। সিমলা স্পােটিংয়ে চলচ্চিত্রের সাহায্যে অসুর সংহার, মেঘগর্জন, বিজলি ও অগ্ন্যুৎপাত প্রদর্শন নাটকীয় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। পারক সারকাসের কল্যাণ সংসদের মাটির প্রতিমায় সােলার কারুকাজ নিখুঁত হাতির দাঁতের কাজের মত। ৬৪ পল্লীর পূজো মণ্ডপে বাংলাদেশের শিল্পী কামরুল হাসানের আঁকা অসুররূপী ইয়াহিয়ার কার্টুন বহু দর্শক আকর্ষণ করেছে। এই পল্লীর জয়বাংলা প্রদর্শনীও আকর্ষণীয়। সিমলা স্ট্রীটে বিবেকানন্দ স্পাের্টিং ক্লাবের দুর্গামূর্তি আধুনিকা। লাস্যময়ী বাঙালী তরুণী। অসুর হিন্দুি ছবির বােম্বেটে দস্যু। গালে জুলফি, পরণে পাইরেটদের পােশাক। | কলকাতার এই শারদোৎসব শুধু বর্ণে ও প্রকরণে নয় বৈচিত্রেরও সর্বজনীন। রাস্তায় রাত বাড়ার সঙ্গে। সঙ্গে হুল্লোড়ও বাড়ছিল। অষ্টমীর রাতেই কোথাও কোথাও টুইস্ট নাচের হিড়িক পড়েছিল। এক অপরিচিত।  

বন্ধু বললেন, এ আর কি দেখছেন? দেখবেন বিসর্জনের দিন। কেবল টুইস্ট নাচ নয়, শিসগান সহ কত রকম বেলেল্লাপনা । শুধু ছেলেদের নয়, মেয়েদেরও দেখবেন বেসামাল হতে। দেশ কোথায় নেমে গেছে এটা তারই প্রমাণ। ভদ্রলােক আমার অপরিচিত। তাই জবাব দিইনি। নইলে বলতাম, আজ থেকে শতবর্ষ আগেও কলকাতার হঠাৎ বাবুরা পূজোর সময় কী ধরনের বেলেল্লাপনায় মেতে উঠতেন তার কি ছবি নেই হুতােম পেঁচার নকশায়? আমরা সমকালের ‘অবক্ষয়টাই শুধু চেখে দেখি, ক্ষয় পূরণ ও নতুন গঠনকর্ম নয় ।

২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ খন্ড -০৭ , আনন্দবাজার পত্রিকা