বাংলাদেশে পুতুল মন্ত্রীসভার ৬ জন মন্ত্রীর পদত্যাগ
স্টাফ রিপাের্টার মুজিবনগর, ১৫ অক্টোবর–শুক্রবার রাত্রে একটি সংবাদ পাওয়া যায় পাক দখল এলাকায় ডা. এ এম মালিকের পুতুল মন্ত্রীসভার ৬ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মুক্তিবাহিনীর হাতে প্রাক্তন গভরনর শ্রী মানেম খাঁর মৃত্যু হওয়ায় পুতুল মন্ত্রীসভার সদস্যরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন। তাঁরা গতকাল বিকালে এক জরুরী বৈঠকে মিলিত হন। ঐ বৈঠকে তাঁরা একত্রে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ডা. মালিক তাঁদের পদত্যাগ না করার জন্য অনুরােধ করেন এবং বলেন, তাঁদের পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে জানাবেন। কিন্তু ৬ জন মন্ত্রী ডা. মালিকের অনুরােধ প্রত্যাখ্যান করে পদত্যাগপত্র পেশ করেছেন। মন্ত্রীরা যারা পদত্যাগ করেননি, তাঁরা ভয় পাচ্ছেন, পাছে ইয়াহিয়ার সামরিক জুনটা এঁদের গ্রেফতার করে। ঢাকা থেকে মুজিবনগরে পাওয়া আরও সংবাদে প্রকাশ যে, ঢাকা শহরে গেরিলাদের তৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার দখলকারী বাহিনীর অফিসগুলির সময় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে–সকল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত । শহরে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে গেরিলাদের তৎপরতা বাড়ছে এবং গুলি গােলার শব্দে মনে হয় শহর যেন যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ (মসকো কমিউনিটি) সাংবাদিকদের বলেছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জে তিনি দেখেছেন পাকিস্তানের বিভ্রান্তি মূলক প্রচারে অধিকাংশ রাষ্ট্রই বিভ্রান্ত হননি। তারা বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল। একটি আরব রাষ্ট্রসহ পৃথিবীর বহু রাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।
অধ্যাপক আমেদ আরও জানান যে, তাঁর দলের নেতা মুহম্মদ ওয়ালি খাঁ (খান আবদুল গফফর খার পুত্র) এখন লন্ডনে আশ্রয় নিয়েছেন এবং তিনিই অধ্যাপক আমেদকে বলেছেন, পশ্চিম পাকিস্তানের ছােট ছােট রাজ্যগুলি স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন শুরু করেছেন। [মােনেম খান নিহত হন ১৩ অক্টোবর।]
১৬ অক্টোবর ‘৭১
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা