কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে পাঠান–পাঞ্জাবী সংঘর্ষ অনেকের আত্মসমর্পণ আগরতলা, ৭ই আগস্ট (পি, পি, আই)-এখানে সীমান্তের ওপার থেকে, প্রাপ্ত সংবাদে প্রকাশ, গত ৩রা আগস্ট ঢাকার কুর্মিটোলা ক্যান্টনমেন্টে পাঞ্জাবী এবং পাঠান সৈন্যদের মধ্যে এক প্রচণ্ড সঙ্র্ষে পাক বাহিনীর দুজন কর্ণেল এবং আরও কয়েকজন পাক সৈন্য নিহত হয়েছে।
সংবাদে বলা হয়েছে, ঐ দিনই মুক্তিবাহিনী ফেণী সেকটরে করের হাটে পাক সৈন্যের ওপর আক্রমণ চালিয়ে একজন মেজর দু’জন ক্যাপ্টেন এবং দু’জন নন–কমিশন্ড অফিসারসহ ৪২ জন পাকিস্তানী সৈন্যকে খতম করেছে। সঙ্ঘর্ষে ৫৫ জন রাজাকারও নিহত হয়েছে। পাঁচ ঘণ্টা ধরে এই সঙ্ঘর্ষ চলে।
গত ৪ঠা এবং ৫ই আগস্ট নারায়ণপুর রেলওয়ে ষ্টেশনের নিকট কয়েক দফা সর্ষে ৪০ জন পাক সৈন্য মুক্তিফৌজের হাতে নিহত হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর তিনজন নিহত হয়েছে।
চট্টগ্রাম সেকটরে পালিয়া বােয়ালখালি রাঙ্গুনিয়া এবং রঞ্জন গ্রামে স্থানীয় লােকেরা কয়েকজন তহশীল অফিসারকে পুড়িয়ে মেরে ফেলেছে।
সংবাদ প্রকাশ, ঔপনিবেশিক সরকারকে কোন কর বা রাজস্ব না দেওয়ার জন্যে বাংলা দেশ সরকার যে, আহ্বান জানিয়েছিলেন তাতে বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে । | পাঠান ও বালুচ সৈন্যের আত্মসমর্পণ মুজিবনগর, ৭ই আগস্ট (পি, টি, আই)-পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনীর বেশ কিছু সংখ্যক অসন্তুষ্ট বালুচ ও পাঠান সৈন্য মুক্তিবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করেছে এবং তারা দেশে ফিরে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে এবং রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছে।
বাংলাদেশ বাহিনীর সদর দপ্তরের একজন মুখপাত্র পি, টি, আইর সংবাদদাতার নিকট বলেছেন যে, পাঞ্জাবী অফিসাররা বালুচ ও পাঠান সৈন্যদের সর্বদা কড়া নজরে রাখে। পাঞ্জাবীদের হাতে তাদের অমানুষিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। এমন কি তাদের নিয়মিতভাবে খাদ্যও দেওয়া হয় না। পাঞ্জাবী সৈন্যরা সব সময়েই নিজেদের নিরাপদে রেখে বালুচ ও পাঠান সৈন্যদের মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের সম্মুখীন হওয়ার জন্যে অগ্রভাবে ঠেলে দেয়। তাদের সাধারণত পশ্চিম পাকিস্তানে তাদের আত্মীয়স্বজনদের কাছে চিঠিপত্র লিখতে দেওয়া হয় না এবং কখনাে কখনাে দেওয়া হলে চিঠিপত্র কঠোর ভাবে সেন্সর করে। বােমা বর্ষণে অসামরিক বিমান। আগরতলা, ৭ই আগস্ট (ইউ, এন, আই)- এখানে খবর পাওয়া গেছে যে, পাক সৈন্য বাহিনী মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটিগুলির ওপর বােমা বর্ষণের জন্যে অসামরিক বিমান ব্যবহার করেছে। পাক সৈন্য বাহিনী পূর্বে শস্যের ওপর বীজাণুনাশক দ্রব্য ছড়াবার, উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত এরূপ দশটি বিমান এবং দুটি হেলিকপ্টার নিয়ে নিয়েছে। হেলিকপ্টার দুটি গতবারের বন্যার্ত লােকদের জন্যে ত্রাণ দ্রব্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে সৌদী আরব থেকে পাওয়া গিয়েছিল। এখন সেগুলিকে পরিবহন, মেসিনগান বহন এবং মুক্তিফৌজের সমর্থকদের এলাকায় বােমা বর্ষণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
৮ আগস্ট ‘৭১
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা