৫ শ্রাবণ,১৩৭৮ বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই ১৯৭১
-বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে কেবল ভারতের সরকার নয়, এই মহান বন্ধু রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি মানুষ আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। দলমত নির্বিশেষে তারা বিনা দ্বিধায় আমাদের লাখ লাখ ছিন্নমূল মানুষকে বুকে তুলে নিয়েছেন। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের পক্ষ থেকে আজ আমরা ভারতের জনগণ সরকার ও রাজ্য সরকারসমূহকে জানিয়ে দিতে চাই-আপনারা যে বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করেছে তার প্রত্যুত্তরে বাংলাদেশের জনগণ চিরদিনের জন্য আপনাদের বন্ধুত্বের কথা স্মরণ রাখবেন এবং চিরকাল বন্ধুত্বের হস্ত আপনাদের দিকে প্রসারিত করে রাখবেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যেসব পরিকল্পনা নিয়েছে তার মূল লক্ষ্য দেশ উদ্ধার। সেদিন দূরে নয় যেদিন আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি সম্পূর্ণ শত্রুমুক্ত হবে।
-আনন্দবাজার পত্রিকা সম্পাদকীয় মন্তব্যঃ স্বৈরাচারী হিটলারই পরাজয়ের ভস্ম মুখে নিয়ে বিদায় নিয়েছেন ইতিহাসের রঙ্গমঞ্চ থেকে। বাঙালী বৌদ্ধ রাও এই ভাবেই জয়ের অধিকারী হবেন একদিন, স্বধর্মদ্রোহী, মানবদ্রোহী আজ জঙ্গী সর্দারদের ক্ষণিকের খেলা শেষ হবেই।”
-ইন্দোনেশিয়ার দৈনিক ‘সুলাহ মার ছাও’ এ এক সম্পাদকীয়তে পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের জনবিরোধী ভূমিকা ও শেখ মুজিবকে গ্রেফতারের তীব্র সমালোচনা করা হয়।
-এ্যান্টনী ম্যাসকারেনহাস ‘দ্যা রেইপ অব বাংলাদেশ’ বইয়ে লিখছেন, “জুলাই মাসের আগে পর্যন্ত পূর্ব বাংলায় কি ঘটেছে সে সম্পর্ক পশ্চিম পাকিস্তানীরা কিছু জানতে পারেনি। এই সময় পূর্ব বাংলার প্রকাশিত বাংলা পত্র-পত্রিকাগুলো সহ পাকিস্তানের কোন সংবাদপতরি পূর্ব বাংলার সামরিক বর্বরতার কোন খবর তো দূরের কথা, ঘটনার সঙ্গে সামান্য সত্যতা আছে এমন খবরও প্রকাশ করেনি। ঘটনার প্রথম দু’মাসের শেষের দিকে সংবাদ পত্রে যেসব খবর প্রকাশিত হতো। তা খুব সতর্কতার সঙ্গে কাটহাট করে সামরিক কর্মকর্তা ও বেসামরিক তথ্য অফিসাররা সে সবের ইস্তেহার তৈরি করে দিতেন। পত্রিকাগুলো পূর্বপাকিস্তানে শেখ মুজিবের অসহযোগ আন্দোলনের পরে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসার উপর জোর দিয়েছিল।” (পৃঃ ১৩৫)
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী