You dont have javascript enabled! Please enable it!

1972.01.19 | ‘বাংলাদেশ হাইকোর্ট আদেশ ১৯৭২’ জারি

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ হাইকোর্টের কাজকর্ম নির্বাহের উদ্দেশ্যে “বাংলাদেশ  হাইকোর্ট আদেশ ১৯৭২ ” জারি করেছেন। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকরী হবে এবং সমগ্র বাংলাদেশে তা প্রযোজ্য হবে।  মঙ্গলবার এক সরকারি হ্যান্ডাআউটে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। আদেশে বলা হয়ঃ ১৯৭১ সালে ২ মার্চ তারিখে পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় উচ্চ বিচারদালাত নামে পরিচিত যে হাইকোর্ট ছিল (এখানে ঢাকা হাইকোর্ট নামে উল্লেখিত),  তা ১৯৭১ সালে ২ মার্চ তারিখ থেকে বিলুপ্ত বলে গণ্য হবে।  প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারপতির সমন্বয়ে বাংলাদেশ হাইকোর্ট গঠিত হবে।  বিচারপতিগণ রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক নিযুক্ত হবেন এবং তার দ্বারা নির্ধারিত শর্ত মোতাবেক দায়িত্ব পালন করবেন। বাংলাদেশ হাইকোর্ট হবে কোর্ট অব রেকর্ড এবং বাংলাদেশের সমগ্র এলাকার ওপর এই ধরনের সকল মূল আপীল বিশেষ, সংশোধন সংক্রান্ত পর্যালোচনা, পদ্ধতিগত এবং অন্যান্য সকল ক্ষমতার অধিকারী হবে যা ১৯৭১ সালের ২ মার্চের পূর্বে প্রচলিত আইনবলে উপরোক্ত এলাকাসমূহের জন্য এখতিয়ারভুক্ত ছিল। তবে, বাংলাদেশ হাইকোর্টে এই ধরনের কোনোরূপ রিট, আদেশ, কিম্বা হেবিয়াস কর্পাস, ম্যান্ডামাস, কো-ওয়ারেন্টো অথবা সার্টিওরারা ধরনের নির্দেশ অথবা অন্য কোনরূপ আদেশ, নির্দেশ অথবা ডিক্লেয়ারেশন জারির কোনোরূপ ক্ষমতা থাকবে না, যা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের পূর্বে কোনোরূপ শাসনতান্ত্রীক বিধানবলে ঢাকা হাইকোর্টের  এখতিয়ারভুক্ত ছিল। বাংলাদেশ হাইকোর্টের বাংলাদেশ সরকারের প্রতীক সম্বলিত একটি সিলমোহর থাকবে এবং তাতে এক জোড়া দাঁড়িপল্লা উৎকীর্ণ থাকবে এবং এতে “গগণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ” কথা কয়টির পরিবর্তে প্রতীক  চিহ্নের লেবেলে ‘বাংলাদেশ হাইকোর্ট ‘ কথা কয়টি থাকবে।  অত্র নির্দেশেও ২নং ধারায় বিষয়বস্তুর কোনোরূপ ব্যাঘাত না ঘটিয়ে (১) অত্র নির্দেশ বলবৎ হওয়ার ঠিক পূর্বক্ষণে ঢাকা হাইকোর্টে যেসকল মামলা বিচারাধীন ছিল, অত্র নির্দেশ জারি হওয়ার ফলে সেসব বাংলাদেশ হাইকোর্টের বিচারাধীন ছিল বলে বিবেচিত হবে এবং বাংলাদেশ হাইকোর্টেই ঐগুলি দায়ের করা হয়েছে ধরে নেয়া বাংলাদেশ হাইকোর্ট ঐ সবের শুনানী ও নিষ্পত্তিকরণ অব্যাহত রাখবেন এবং এই ধরনের কোনো মামলায় ঢাকা হাইকোর্ট কোনোরূপ নির্দেশ দিয়ে থাকলে সকল ক্ষেত্রেই তা বাংলাদেশ হাইকোর্টের নির্দেশ বলে কার্যকর হবে।  (২) অত্র নির্দেশ জারি হবার পূর্বে ঢাকা হাইকোর্ট কোনোরূপ রায়, নির্দেশ অথবা ডিক্রি বলে বাংলাদেশ কার্যকরী হবে। ঢাকা হাইকোর্টের কোনো বিচারপতি কোনোরূপ নির্দেশ প্রদান করে থাকলে তা বাংলাদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি নির্দেশ বলে ধরে নিয়ে তার পর্যালোচনার ক্ষমতা বাংলাদেশ হাইকোর্টের থাকবে। (১) অত্র নির্দেশে জারি হওয়ার ঠিক পূর্ব মূহুর্তে ঢাকা হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত সকল রুলস অত্র নির্দেশ সাপেক্ষে, বাংলাদেশ হাইকোর্টের প্রদত্ত বলে ধরে নিয়ে,  প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ বলবৎ থাকবে। (২) অত্র নির্দেশ জারি হওয়ার ঠিক পূর্বক্ষণে ঢাকা হাইকোর্টে কার্যরত সকল অফিসার ও কর্মচারী অত্র নির্দেশ জারির সময় হতে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কার্যরত বলে মনে করা হবে এবং রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক নির্ধারিত শাসন মোতাবেক বাংলাদেশ হাইকোর্টে চাকুরিতে অব্যাহত থাকবে। কোনো ব্যাক্তি অত্র নির্দেশ জারি

হবার পূর্বক্ষণে ঢাকা হাইকোর্টে আইন ব্যাবসায় পরিচালনার উপযোগী এডভোকেট হিসাবে বহাল থাকলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনের বিধান সাপেক্ষে, তিনি বাংলাদেশ হাইকোর্টের এডভোকেট বলে বিবেচিত হবেন এবং হাইকোর্টে মামলা পরিচালনা করতে পারেন।

৫ জন বিচারপতির শফথ গ্রহণঃ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার এক খবরে বলা হয়, গত (মঙ্গলবার) অপারাহ্নে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাইকোর্টের ৫ জন স্থায়ী বিচারপতি শফথ গ্রহণ করেন। প্রধান বিচারপতি জনাব আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম নয়া বিচারপতিদের শফথ বাক্য পাঠ করান। শফথ গ্রহণকারী এই ৫ জন বিচারপতি হলেনঃ জনাব সৈয়দ আবুল বাশার মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি জনাব মুহাম্মদ আব্দুল্লা জাবির, বিচারপতি জনাব এ, এফ, এম, আহসানুদ্দিন চৌধুরী,  বিচারপতি জনাব কামাল উদ্দিন হোসেন এবং বিচারপতি জনাব কাদেরী মুহঃ আব্দুল মুনিম।

Reference:
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২ অধ্যাপক আবু সাইয়িদ
ইত্তেফাক, ১৯ জানুয়ারি ১৯৭২
Unicoded by Nayeem Uddin Akash

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!