You dont have javascript enabled! Please enable it!

১১ জানুয়ারি ৭২

বঙ্গবন্ধুর মুক্তি বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব স্বীকৃতিকে দ্বারপ্রান্তে এনেছে

ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মহল মঙ্গলবার এই মর্মে আভাস দিয়েছে যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে অবিলম্বে বহুসংখ্যক রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দানের সম্ভাবনা আরও উজ্জলতর হয়েছে। বার্তা প্রতিষ্ঠান ‘এনার’ কূটনৈতিক সংবাদদাতার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এর নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক শিবির এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় রাষ্ট্রসমূহ যে সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ স্বীকৃতি দান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, এক্ষুণে তার চাইতে অনেক আগে এসব রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পাওয়া যাবে। জার্মান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র (পূর্ব জার্মানি) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে অন্যান্য দেশের স্বীকৃতি দানের ক্ষেত্রে ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যায় যে আমাদের মহান প্রতিবেশী ভারত সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। পরেরদিন ভুটানও ভারতের পথ অনুসরণ করে। সেভিয়েত ইউনিয়ন ও পোল্যান্ড বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের স্বার্থকে তুলে ধরে। গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স এই ব্যাপারে নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে, যা মূলতঃ মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে সহায়ক হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, অন্ধকার হতে আলোতে, বন্দিদশা হতে মুক্তির ঐতিহাসিক যাত্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গত ৯ ডিসেম্বর লন্ডন পৌছালে ব্রিটেন তাকে একজন মহান রাষ্ট্রপ্রধানের মর্যাদায় অভিষিক্ত করেন। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের সাথে আলাপ আলোচনার সুযোগ গ্রহণ করেন।  তাঁদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। ঢাকা কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে যে, বিশ্ব বাংলাদেশ সরকারের কার্যক্রম গভীরভাবে লক্ষ্য করেছে। সমগ্র দেশ বাংলাদেশ সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হওয়া এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক ও অর্থনৈতিক তৎপরতা পুনরুজ্জীবিত হযওয়ায় তারা গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে।৬

Reference:
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২ অধ্যাপক আবু সাইয়িদ
ইত্তেফাক, ১২ জানুয়ারি ১৯৭২

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!