You dont have javascript enabled! Please enable it! 1958.07.31 | আওয়ামী লীগকে পল্টন ময়দানে জনসভার অনুমতি না দেওয়ার নিন্দা- সরকারের কার্যের প্রতিবাদে শেখ মুজিবুরের বিবৃতি | দৈনিক ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

দৈনিক ইত্তেফাক
৩১শে জুলাই ১৯৫৮
আওয়ামী লীগকে পল্টন ময়দানে জনসভার অনুমতি না দেওয়ার নিন্দা
সরকারের কার্যের প্রতিবাদে শেখ মুজিবুরের বিবৃতি

পরিস্থিতি সম্পর্কে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের সংকল্পঃ অদ্য ওয়ার্কিং কমিটির সভা পল্টন ময়দানে জনসভা অনুষ্ঠানের জন্য সরকার আওয়ামী লীগকে অনুমতি না দেওয়ায় প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী শেখ মুজিবুর রহমান গতকল্য (বুধবরি) প্রদত্ত এবং বিবৃতি প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের আচরণের নিন্দা করেন এবং এই অবস্থা বিদ্যমান থাকিলে বাধ্য হইয়া পরিস্থিতি মােকাবিলার জন্য আওয়ামী লীগকে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে হইবে বলিয়া ঘােষণা করেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে পার্টির কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য আওয়ামী লীগ সেক্রেটারী অদ্য অপরাহ্ন ৫টায় কেন্দ্রীয় অফিসে ওয়ার্কিং কমিটির এক জরুরী সভা আহ্বান করিয়াছেন।
জনাব মুজিবুর রহমান বলেনঃ
“প্রদেশে অগণতান্ত্রিক নিবর্তনমূলক আটক অর্ডিন্যান্স প্রবর্তনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক আওয়ামী লীগকে “নিবর্তনমূলক আটক অর্ডিন্যান্স বিরােধী দিবস” বলিয়া ঘােষণা করিয়াছিলাম এবং ঐ দিন সন্ধ্যায় পল্টন ময়দানে জনসভা আহ্বান করিয়াছিলাম। শহরে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকার জন্য আমাকে জনসভা অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করিতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমার দরখাস্তে উক্ত জনসভার উদ্দেশ্য কি তাহা লেখা হয় নাই এই যুক্তিতে নিবর্তনমূলক আটক অর্ডিন্যান্স বিরােধী দিবসে”-এর অর্থ খুব ভালােভাবে জানা থাকা সত্ত্বেও সরকার জনসভার অনুমতি দিতে অস্বীকার করেন। “যাই হােক, আমি জনসভার উদ্দেশ্য বর্ণনা করিয়া আবার সভা অনুষ্ঠানের অনুমতি প্রার্থনা করিয়া দরখাস্ত দেই; কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, আবার তুচ্ছ কারণে আমাকে জনসভা অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে অস্বীকার করা হইয়াছে।“এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যাইতে পারে যে, যখন প্রদেশের উপর ১৯৩ ধারার শাসন চাপানাে হয় তখন উহার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে আমরা পল্টন ময়দানে জনসভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত করি; কিন্তু সে সময় আমরা জনসভার জন্য সরকারের পূর্বাহ্নিক অনুমতি লাভ করিলেও সরকার আমাদের সভা বন্ধ করার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন। “এইবারও পল্টন ময়দানে জনসভা করার জন্য অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে অনুমতি দেওয়া হইলেও আওয়ামী লীগকে অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা হইয়াছে : জানি না, আওয়ামী লীগের আন্দোলন ব্যর্থ করার জন্য পর্দার আড়ালে কোন অদৃশ্য হস্তের কারসাজি রহিয়াছে।
“সরকারের অগণতান্ত্রিক ও গণবিরােধী কার্যের (নিবর্তনমূলক আটক অর্ডিন্যান্স জারির) প্রতিবাদের জন্য জনসভা আহ্বানের অনুমতি প্রত্যাখ্যানের দ্বারা সরকার যে আচরণের পরিচয় দিয়াছেন আমি তাহার নিন্দা করিতেছি। যদি এইরূপ অবস্থাই বিদ্যমান থাকে তাহা হইলে দুঃখের সহিত প্রয়ােজনের তাগিদে এই পরিস্থিতির মােকাবিলার জন্য আওয়ামী লীগকে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য হইতে হইবে।
“বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের কর্মপন্থা নির্ধারণের জন্য আমি এতদ্বারা অদ্য (বৃহস্পতিবার) অপরাহ্ন ৫টায় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ ওয়ার্কিং কমিটির জরুরী বৈঠক আহ্বান করিতেছি।”