দৈনিক মিল্লাত
৬ই জুন ১৯৫৮
ত্রুটিপূর্ণ ভােটার তালিকা সংশােধনের মেয়াদ
আরও এক মাস বৃদ্ধির দাবী
ঘরে ঘরে পরীক্ষা চালাইয়া ভুল সংশােধনের জন্য
শেখ মুজিবের সুপারিশ
গতকল্য (বৃহস্পতিবার) পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব শেখ মুজিবর রহমান ত্রুটিপূর্ণ ভােটার তালিকা দেখিয়া বলেন যে, ভােটার তালিকা হইতে কতিপয় মন্ত্রী এবং এম,পি, এ -গণ বাদ পরিয়াছেন দেখিয়া আমি অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হইয়াছি। নির্বাচন কমিশন ভােটার তালিকা সংশােধনের যে পদ্ধতি লইয়াছেন তাহা ভ্রান্তি পূর্ণ। এই পদ্ধতিতে কোনক্রমেই ভােটার তালিকা শুদ্ধ করা সম্ভবপর নহে।
নিম্নে জনাব শেখ মুজিবর রহমানের বিবৃতির পূর্ণ বিবরণ প্রদত্ত হইলঃ
আমি ঢাকা প্রত্যাবর্তন করিয়া অত্যন্ত আশ্চর্য হইয়া দেখি যে, খসড়া ভােটার তালিকায় হাজার হাজার উপযুক্ত ভােটারের নাম বাদ পড়িয়াছে। খসড়া তালিকা সংশােধনের জন্য একমাস সময় দেওয়া হইয়াছে। গ্রাম এলাকায় খসড়া ভােটার তালিকা সংশােধনের ভার যে সকল কর্মচারীদের উপর দেওয়া হইয়াছে। সাধারণতঃ তাঁহারা জেলা ও মহাকুমা সদরে বাস করেন। ভােটার তালিকা সংশােধনের জন্য ৪ পৃষ্ঠাব্যাপী ছাপান যে ফরম প্রস্তুত করা হইয়াছে তাহা জনসাধারণের পক্ষে বােঝা খুবই কষ্টকর।
যে সকল ব্যক্তির নাম উক্ত তালিকা হইতে বাদ পড়িয়াছে তাহাদের ৩০/৪০ মাইল দূরবর্তী স্থান হইতে আসিয়া ফরম লইয়া নাম উঠাইয়া লইতে হইবে। ইহা কোনক্রমেই সহজসাধ্য নয়।
কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে, এই রূপেই ভােটারতালিকা সম্পূর্ণরূপে সংশােধন করা সম্ভব হইবে তাহা হইলে আমি বলিতে বাধ্য হইব যে, তাহারা সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হইবেন। ভােটারলিষ্ট সংশােধন করিবার যে পদ্ধতি গ্রহণ করা হইয়াছে সেই পদ্ধতিতে কোনক্রমেই তালিকা বহির্ভুত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নহে। আমার মতে নির্বাচনী কমিশন অবিলম্বে আরও একমাস মেয়াদ বৃদ্ধি করিয়া ঘরে ঘরে গমন করিয়া ভােটার তালিকা পরীক্ষা কার্যে ব্রতী হইলেই ভােটার তালিকা পূর্ণরূপে শুরু করা সম্ভব হইবে। এই কাৰ্য্য সম্পাদন করিতে সরকারী কর্মচারী শিক্ষক এবং অন্যান্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের সহায়তা গ্রহণ বাঞ্ছনীয়। এই ব্যাপারে প্রাদেশিক সরকার নির্বাচনী কমিশনকে সকল প্রকার প্রয়ােজনীয় সাহায্য প্রদান করিতে পারিবেন বলিয়া আমি মনে করি।