দৈনিক ইত্তেফাক
২৮শে জানুয়ারি ১৯৫৮
আওয়ামী লীগ সরকারই গ্রহণ করিয়াছে
বুড়িচং-এ বিরাট জনসভায় প্রাদেশিক কৃষিমন্ত্রীর ঘােষণা
শেখ মুজিব কর্তৃক “মজলুম জননেতার মুখােশ উন্মােচন
বুড়িচং, ২৭শে জানুয়ারী- অদ্য বুড়িচং থানার বাগড়া গ্রামে এক বিরাট জনসভায় বক্তৃতা প্রসঙ্গে প্রাদেশিক কৃষি সচিব জনাব খয়রাত হােসেন বলেন যে, এদেশে আগেকার সমস্ত সরকারই ছিলেন শহরমুখী। কিন্তু আমার সরকার ক্ষমতায় আসিয়াই গ্রামমুখী নীতি অবলম্বন করিয়াছেন। আওয়ামী লীগ সরকার প্রদেশের খাল-বিল, নদী-নালা, রাস্তাঘাট ইত্যাদির উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাইয়াছেন। বিগত দুর্ভিক্ষের কথা উল্লেখ করিয়া জনাব খয়রাত হােসেন বলেন, দেশের এক মহা সঙ্কট মুহুর্তে বর্তমান আওয়ামী লীগ কোয়ালিশন সরকার শাসনভার গ্রহণ করেন এবং বিদেশ হইতে ৮০ কোটি টাকার চাউল আমদানী করিয়া দেশবাসীকে দুর্ভিক্ষের কবল হইতে রক্ষা করেন। স্বল্পকালীন শাসনামলে সরকার দেশের জন্য যে কাজ করিয়াছেন, তাহা বিচার করিয়াই জনসাধারণ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করিবেন বলিয়া তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সপক্ষে এখানে জনগণের মধ্যে যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করিলাম, তাহাতে আমার বিশ্বাস, উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে শতকরা ৯০টি ভােট প্রদত্ত হইবে।” সভায় অধ্যাপক খায়রুল বাসার, ডেপুটি চীফ হুইপ জনাব কোরবান আলী, জনাব শাহাবুদ্দিন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
সাই গ্রামে জনসভা
অদ্য সাইগ্রামে অপর একটি জনসভায় প্রাদেশিক আওয়ামী লীগ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান, পাবনার জনাব আমজাদ হােসেন এল-এল-বি প্রমুখ বক্তৃতা করেন। সভায় স্থানীয় ইউনিয়ন বাের্ড প্রেসিডেন্ট কর্তৃক শেখ মুজিবর রহমানকে প্রদত্ত একটি মানপত্রে জিরাতিয়া প্রজাদের বিভিন্ন অভাব অভিযােগের কথা উল্লেখ করা হয়। মানপত্রের জবাবে শেখ মুজিবুর রহমান জিরাতিয়া প্রজাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করিয়া এই ব্যাপারে ভাসানী সাহেব যে রহস্যজনক নীরবতা অবলম্বন করিয়াছেন তৎসম্পর্কে বলেন, জনাব ভাসানী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিশেষ করিয়া পাকিস্তানের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী যােগ্য নেতার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করিয়া চলিয়াছেন, কারণ জনাব সােহরাওয়ার্দী ভারত ও রাশিয়ার চক্ষুশূল্য কিন্তু ভাসানী সাহেব জিরাতিয়া প্রজাদের দুঃখ-দুর্দশা সম্পর্কে একটি কথাও বলেন না, কারণ জিরাতিয়া প্রজাদের দুঃখ-দুর্দশার হােতা হইল ভারতীয় সরকার।