You dont have javascript enabled! Please enable it!

সাপ্তাহিক সৈনিক
১৭ই অক্টোবর ১৯৫৭
মুজিব ফিরিয়া আসিলেন

অবশেষে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব শেখ মুজিবর রহমান তাহার বিদেশ ভ্রমণ সূচনাতেই সমাপ্ত করিয়া ফিরিয়া আসিয়াছেন। দুর্ভাগ্যই বলিতে হইবে। যাত্রার পূর্বে তিনি বলিয়াছিলেন, জনাব সােহরাওয়ার্দীর পররাষ্ট্রনীতিতে বিদেশে বন্ধুসন্ধানের যে বৈশিষ্ট তাহার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি বিদেশ ভ্রমণে যাত্রা করিতেছেন। কিন্তু হায়, তাহা আর সম্ভব হইল না। হঠাৎ অসুস্থ হইয়া পড়ায় তাহাকে দেশে ফিরিয়া আসিতে হইল। জনাব রহমানের ব্যক্তিগত কোন ক্ষতি হইল কিনা জানি না, দেশ বিদেশ দেখার মনােবাঞ্ছ অপূর্ণ থাকায় তিনি বেদনা অনুভব করিলেন কি না জানি না, কিন্তু দেশের যে ক্ষতি হইল তাহার কি হইবে? আওয়ামী লীগের পরিপুষ্টি সাধনের জন্য তিনি মন্ত্রীত্ব হইতে পদত্যাগ করিয়াছিলেন; কিন্তু যখন দেখিলেন বিদেশে পাকিস্তানে বন্ধুসন্ধানের প্রয়ােজন রহিয়াছে তখন দেশের কল্যাণ কামনায় দলীয় স্বার্থ পরিত্যাগ করিয়া বিদেশ ভ্রমণে বাহির হইয়া পড়িলেন। রাশিয়ার প্রধান নেতৃবৃন্দ তাহার সহিত আলাপ-আলােচনায় নাকি অনিচ্ছা জ্ঞাপন করিয়াছিলেন, কিন্তু তথাপি তিনি দমিলেন না। কিন্তু হায়, এদিকে অশুভ চক্রের কোন্দলে জনাব সােহরাওয়ার্দীকে পদত্যাগ করিতে হইল এবং ঘটনার কি গতি, প্রায় সাথে সাথেই জনাব রহমান ‘অসুস্থ’ হইয়া পড়িলেন। কি তা অসুস্থ হইয়া পড়িলে আরজী করা যাইবে; দোষ দিতে পারি কপালকে। কিন্তু জনাব রহমান করাচীতে ফিরিয়া আসিয়া যা বলিয়াছিলেন তাহাতে আমাদের খটকা লাগিয়াছে। তিনি বলিয়াছেন, দেশে ফিরিয়া আসিবেন না কেন? জনাব সােহরাওয়ার্দীর পদত্যাগের পর বিদেশে যখন পাকিস্তানের আর কোন মর্যাদাই অবশিষ্ট রহিলনা তখন সেখানে শুধু শুধু ঘুরিয়া লাভ কি? খটকা লাগিবে না কেন বলুন? বেতারে শুনিয়াছিলাম, তিনি অসুস্থ হইয়া পড়ায় ফিরিয়া আসিয়াছেন; এখন তাহার নিজের মুখে শুনিতেছি ক্ষুব্ধ হইয়াছেন বলিয়াই তিনি বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করিয়াছেন। হয়ত তাঁহার যে ‘অসুস্থ থাকিবার কথা উত্তেজনার মধ্যে তিনি তাহা বেমালুম ভুলিয়াই গিয়াছিলেন। হায়রে কপাল?

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!