সংবাদ
১৩ই আগস্ট ১৯৫৭
শেখ মুজিবের অসত্যের আশ্রয় গ্রহণ
জনাব সােলেমান কর্তৃক প্রাক্তন মন্ত্রীর স্বরূপ উদঘাটন
গত কয়েকদিন যাবৎ আওয়ামী লীগ কে এস পি কোয়ালিশন সরকার যে আলাপআলােচনা চলিয়াছিল, সুনিশ্চিতভাবে তাহা ব্যর্থ হওয়ার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ হইতে এই ধারণা জন্মাইবার প্রয়াস চলিতেছে যে তাহারা এতই শক্তিশালী যে, কোয়ালিশন পার্টি গঠনে তাহাদের তেমন কোন আগ্রহ ছিল না।
কে এস পির আগ্রহাতিশয্যে আওয়ামী লীগ উক্ত পার্টির সহিত কোয়ালিশন গঠন সম্পর্কে আলােচনা করিয়াছে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক এই মর্মে প্রদত্ত এক বিবৃতির প্রতিবাদে কে এস পির জেনারেল সেক্রেটারী বলেন যে, কে-এস-পি পূর্বাহ্নে কোয়ালিশন পার্টি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সহিত আলাপ-আলােচনায় প্রবৃত্ত হয় নাই। তিনি জনাব শেখ মুজিবরের বিবৃতিকে নিছক মিথ্যা ও দুরভিসন্ধি প্রণােদিত বলিয়া অভিহিত করেন।
কোয়ালিশন পার্টি গঠন সম্পর্কে আলাপ-আলােচনার ইতিহাস বর্ণনা প্রসঙ্গে জনাব সােলায়মান বলেন যে, প্রদেশে স্থায়ী সরকার গঠন তথা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আওয়ামী লীগের সহিত কে এস পি-র কোয়ালিশন হওয়া প্রয়ােজন বলিয়া আওয়ামী লীগের কতিপয় সদস্য কে এস পি-র কিছু সদস্যের সহিত আলােচনায় প্রবৃত্ত হন। ইহার পর প্রধানমন্ত্রীর অনুরােধক্রমে কতিপয় কে এস পি নেতা করাচী গমন করেন। ইহার পর প্রধানমন্ত্রী জাপান সফরে যান। ঐ সময় পুনরায় আওয়ামী লীগের তরফ হইতে আলাপ-আলােচনা শুরু করা হয়। প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষ করিয়া দেশে প্রত্যাবর্তন করিয়া কোয়ালিশন পার্টি গঠন সম্পর্কে আলাপ-আলােচনা চূড়ান্ত করার জন্য ঢাকা আগমন করেন।
বিবৃতির অপর এক স্থানে তিনি বলেন যে, গত ১২ই আগস্ট পার্লামেন্টারী পার্টির সভায় জনাব সােহরাওয়ার্দী বলেন যে, কে এস পি নাকি কোয়ালিশনের শর্ত হিসাবে নিরাপত্তা আইন পুনঃপ্রবর্তন, মন্ত্রিসভা হইতে সংখ্যালঘুদের অপসারণ এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত ব্যক্তিদের দেশ হইতে বহিষ্কার দাবী করিয়াছিল। কিন্তু ইহা সঠিক নহে। পরম্ভ সংখ্যালঘুদের মন্ত্রিসভা হইতে অপসারিত করার রটনার পশ্চাতে সংখ্যালঘু সদস্যদের সমর্থন লাভের জন্য আওয়ামী লীগের কারসাজি রহিয়াছে। কারণ সংখ্যালঘু সদস্যরা আওয়ামী লীগ হইতে দূরে সরিয়া যাইতেছিল। জনাব সােহরাওয়ার্দীর বিবৃতির কঠোর সমালােচনা করিয়া তিনি বলেন যে, একজন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একটি পার্টির বিরুদ্ধে এইরূপ মিথ্যা প্রচারণা দুঃখজনক। বিশেষভাবে তাহারা জানেন যে, প্রাদেশিক ব্যবস্থা পরিষদে আওয়ামী লীগ আর সংখ্যাগরিষ্ঠ দল নহে।
বিবৃতির উপসংহারে জনাব সােলায়মান বলেন যে, যদি আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারী ব্যবস্থা পরিষদে তাহার দলের সমর্থনকারীদের নাম প্রকাশ করিয়া নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করিতে পারেন তবে তিনি খুবই সুখী হইবেন।