দৈনিক ইত্তেহাদ
৯ই এপ্রিল ১৯৫৭
বিকেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করাই স্বায়ত্তশাসনের মুল অর্থ
করাচীতে প্রাদেশিক শিল্প ও বাণিজ্য সচিব জনাব মুজিবর রহমানের বিবৃতি
করাচী, ৮ই এপ্রিল (এ,পি,পি)।-বিকেন্দ্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ ও শাসনব্যবস্থা কায়েম করা এবং পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল। পুনবন্টনের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনৈতিক বুনিয়াদ গড়িয়া তােলাই হইতেছে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের প্রকৃত অর্থ স্বায়ত্তশাসন বলিতে রাজনৈতিক চাল বা নিৰ্বাচনী ধোকাবাজী বুঝায় না।”
এখানে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে পূর্ব পাকিস্তানের বাণিজ্য, শ্রম ও শিল্পমন্ত্রী জনাব শেখ মুজিবর রহমান উপরােক্ত উক্তি করেন। তিনি বলেন, পূর্ব পাকিস্তান পরিষদে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবীতে গৃহীত প্রস্তাবটি মূলতঃ সুপারিশমূলক। উহার পশ্চাতে কোন ধ্বংসাত্মক উদ্দেশ্য নাই। অথচ পশ্চিম পাকিস্তানে উহাকে পাকিস্তানের সংহতির পরিপন্থী পদক্ষেপ বলিয়া আখ্যায়িত করা হইয়াছে। ইহাতে একথাই প্রতিপন্ন হয় যে, পূর্ব পাকিস্তানের সমস্যা সম্পর্কে পাকিস্তানের শাসকগণ একেবারেই অজ্ঞ। সম্ভবত এই জন্যই প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের প্রকৃত তাৎপর্য তাহারা বুঝিয়া উঠিতে পারিতেছেন না। আমি অত্যন্ত আশ্চার্য্যন্বিত হইয়াছি যে, প্রধানমন্ত্রী জনাব সােহরাওয়ার্দীও স্বায়ত্তশাসনের দাবীকে রাজনৈতিক ধোকাবাজী বলিয়া আখ্যায়িত করিয়াছে।
স্বায়ত্তশাসনের জন্য জনসাধারণ মােটেই ভাবিত নয় এবং তাহারা জনকল্যাণকামী সরকারকে লইয়াই তুষ্ট আছেন। সরকারের প্রতি এহেন অনুগত্যের পরিবর্তে জনসাধারণ জীবনধারণের নৃত্য প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা, বেকারত্ব, অশিক্ষার অভিশাপ হইতে মুক্তি প্রত্যাশা করে। এই সমস্ত সর্ত মিটাইতে হইলে আর্থিক ভারসাম্য বিদ্যমান থাকা প্রয়ােজন। আর্থিক ভারসাম্য রক্ষার প্রশ্নও আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের সহিত জড়িত রহিয়াছে।