আজাদ
২৯শে মার্চ ১৯৫৫
করাচীতে পূর্বপাক আওয়ামী নেতৃবৃন্দ
আজাদের করাচী অফিস হইতে
২৭শে মার্চ। জনাব আতাউর রহমান, শেখ মুজিবর রহমান ও আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতা গতরাত্রে এক সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, জনাব হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী ও জনাব এ, কে, ফজলুল হক- পূর্ব পাকিস্তানের এই তিনজন নেতাকে লইয়া একটি গোলটেবিল বৈঠক আহ্বানের এবং কে পূর্ব পাকিস্তানের মন্ত্রিসভা গঠন করিবেন, তাহা এই বৈঠকে নিরূপণের প্রস্তাব করেন। আওয়ামী লীগ নেতাগণ বলেন যে, তাহারা গবর্ণর জেনারেল জনাব গােলাম মােহাম্মদের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠানে রাজী আছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জনাব মােহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে রাজী নন।
আওয়ামী লীগ নেতাগণ বলিতেছেন যে, জনাব ফজলুল হককে বাল দিয়া যলি জনাব আতাউর রহমানকে পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভা গঠন করিতে বলা হয়, তবে আওয়ামী লীগ নেতাগণ প্রস্তাবিত শাসনতান্ত্রিক কনভেনশন গঠনের ব্যাপারে পূর্ণ আশ্বাস দিবেন। তাহারা এরূপ লােকদিগকে প্রস্তাবিত শাসনতান্ত্রিক কনভেশনে প্রেরণ করিবেন, যাঁহারা পাকিস্তানের বর্তমান সরকারকে সমর্থন করিবেন এবং সরকারকে পশ্চিম পাকিস্তানে এক ইউনিট পরিকল্পনা কার্যকরীকরণ ও শাসনতন্ত্র প্রণয়নের ব্যাপারে সাহায্য করিবেন। আওয়ামী লীগ নেতাগণ ইহাও বলিতেছেন যে, পূর্ব পাকিস্তানে যে দলই ক্ষমতাসীন হউক না কেন, প্রাদেশিক ব্যবস্থা পরিষদের বর্তমান সদস্যগণ তাহাদিগকেই সমর্থন করিবেন। তাঁহাৱা জনাব ফজলুল হককে সমর্থন করিবেন বলিয়া যে প্রতিশ্রুতি দিয়াছিলেন, তাহার কারণ এই যে, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জনাব মােহাম্মদ আলীর পূর্ব পাকিস্তান সফৱেৱ ফলে সদস্যদের মধ্যে এই ধারণা জন্মে যে, জনাব ফজলুল হকই শীঘ্রই মন্ত্রিসভা গঠন করিবেন। কিন্তু এখন যদি সদস্যদের মনে এইরূপ দৃঢ় বিশ্বাস জন্য যে, আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভা গঠন করিবে, তবে আওয়ামী লীগ ও জনাব আতাউর রহমানও অনুরূপভাবে সংখ্যাধিক সদস্যের সমর্থন লাভ করিবেন। এক দল লােকের দৃঢ় বিশ্বাস, জনাব ফজলুল হককে পূর্ব পাকিস্তানে মন্ত্রিসভা গঠন করিতে বলা হইবে। আর এক দল লােকের দৃঢ় বিশ্বাস, জনাব ফজলুল হক আর কখনও ক্ষমতায় আসিতে পারিবেন না। এই মহল ইহাও বলেন যে, যদি ক্ষমতা দেওয়া হয় তবে আওয়ামী লীগের হাতেই দেওয়া হইবে, নতুবা পূর্ব পাকিস্তানে গবর্ণরের শাসনই চলিতে থাকিবে। মােটের উপর, পূৰ্ব্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে এখনও কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় নাই।