You dont have javascript enabled! Please enable it!

যুগান্তর
৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১
কুমিল্লা দখল, ময়নামতীতে প্রচণ্ড লড়াই
(স্টাফ রিপোর্টার)

কলকাতা, ৮ই ডিসেম্বর-ভারতীয় বাহিনী এবং বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনী আজ বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কুমিল্লা শহর, কুমিল্লা বিমানক্ষেত্র এবং কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর দখল করেছে। তারপর কুমিল্লা শহরের অদূরে ময়নামতী ক্যান্টনমেন্টের ওপর প্রচণ্ড চাপ দিয়ে চলেছে। তারা ময়নামতী ক্যান্টনমেন্টকে সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলেছে।

যশোর খণ্ডে ভারতীয় বাহিনী আজ ঝিনাইদহ থেকে এগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ কেন্দ্র মাগুরা দখল করেছে। খুলনার দিকে রূপদিয়া দখল করেছে এবং খুলনার দিকে এগিয়ে চলেছে।

বিমানবাহী রণতরী থেকে বিমানবাহিনী চট্টগ্রাম বিমান ক্ষেত্র, মিলিটারী ব্যারাক এবং কক্সবাজারে বোমা ফেলেছে। চালনা ও মঙ্গলা বন্দরের ওপরও আক্রমণ চালাচ্ছে। গতকাল অধিকৃত রংপুর-দিনাজপুর খণ্ডের পীরগঞ্জে আজ পাক বাহিনীর প্রচণ্ড প্রতি-আক্রমণ রোধ করা হয়েছে। এখানে পাক বাহিনীর প্রচুর ক্ষতি হয়েছে।

মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম জেলার রামগড় এলাকা মুক্ত করেছে।

ভারতীয় বাহিনীর ইস্টার্ন কম্যান্ডের সর্বাধিনায়ক লেঃ জেঃ অরোরা আজ দুপুরে দখলীকৃত কুমিল্লা বিমানঘাঁটি পরিদর্শন করেন। তিনি যখন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করেন, তখন স্থানীয় লোকেরা তাঁকে বিপুলভাবে সম্বর্ধনা জানান।

শ্রীহট্ট খণ্ডে ভারতীয় বাহিনী শ্রীমঙ্গল অধিকার করেছে।
ভারতীয় নৌবাহিনী বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমস্ত বন্দরগুলি অবরোধ করে সাগরে পূর্ন কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে।

ভারতীয় বাহিনী অগ্রবর্তী সৈন্যদলগুলি এখন রাজধানী ঢাকা দখল করার জন্য জোর কদমে এগিয়ে চলেছে।

যে সৈন্যদল দু’দিন আগে ফেনী দখল করেছিল, তারা গতকাল রাত্রে চাঁদপুর নদী বন্দরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছে। বিস্তারিত বিবরণ জানা যায়নি। যে দলটি আখাউরা মুক্ত করেছে তারাও গতকাল রাত্রে কুমিল্লার ৩২ কিলোমিটার পশ্চিমে এলিয়টগঞ্জ মুক্ত করেছে এবং আজ ঢাকা ৩৫ কিলোমিটার পূর্বে দাউদকান্দির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

পাকিস্তানী বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যান্টনমেন্ট সৈয়দপুরের ওপর মুক্তিবাহিনী প্রচণ্ড আক্রমণ চালাচ্ছে। খবর পাওয়া গেছে যে উত্তর দিক থেকে সৈয়দপুরে যাবার রাস্তায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় মুক্তিবাহিনী দখল করেছে।
জানা গেছে যে, ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী দিনাজপুর জেলা শহরের ওপর তিনদিক থেকে আক্রমণ চালাচ্ছে।

বীরগঞ্জ-দিনাজপুর খণ্ডে কান্তনগরে একটি সেতু উরিয়ে পাকিস্তানী বাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অগ্রগতি রোধ করার চেষ্টা করেছে। এখানে প্রচণ্ড লড়াই চলছে।

ময়মনসিংহ খণ্ডে ভারতীয় বাহিনী জামালপুর মহকুমা শহরের দক্ষিণে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। জামালপুর শহর দখলের জন্য জোর লড়াই চলছে।

ময়মনসিংহ সদর শহর দখলের জন্য সৈন্য বাহিনী এগিয়ে চলেছে।
পদ্মার পশ্চিম তীরে কুষ্টিয়া শহর ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একযোগে ঘিরে গেলেছে তারা পদ্মার উত্তরে রাজশাহী ও পাবনার সঙ্গে দক্ষিণ তীরে গোয়ালনন্দ ঘাঁটের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একযোগে খুলনার ওপর গোলাবর্ষণ করছে। আশেপাশে থেকে পাকিস্তানী সৈন্যরা এখানে এসে জড়ো হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের ওপরও প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।

শ্রীহট্ট খণ্ডে শ্রীহট্ট শহর এবং খাদিমনগরসহ শহরের উপকণ্ঠ এলাকা পাকসৈন্য মুক্ত করা হচ্ছে। কুষ্টিয়া জেলার বৈদ্যকুটচৌরা টেম্পলহীল এবং হাজিগঞ্জ রেল স্টেশনগুলি ভারতীয় বাহিনীর দখলে এসেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সম্মিলিতভাবে অভিযান চালিয়ে খুলনা জেলার সাতক্ষীরা শত্রুকবল মুক্ত করেছে।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!