দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, জুলাই ১৬, ১৯৭১
মুক্তিসংগ্রাম কমিটি গঠিত
মুজিবনগরে, ১৫ জুলাই, একটি নয় দলীয় “বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি” গঠন করা হয়। সম্প্রতি দেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য প্রতিটি গ্রামে এরা গেরিলা স্কোয়াড করেছে।
কমিটি মওলানা ভাসানী এর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির নেতৃত্বে গঠিত হয় ও পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (সিকদার গ্রুপ) এর সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এটি “স্বাধীনতা এবং মুক্তির জন্য পরিবেশ তৈরি’’ করবে এবং যারা দেশ থেকে সেনাবাহিনীর নৃশংসতার জন্য পালিয়ে যাচ্ছে তাদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করবে। তারা বাংলাদেশের মানুষকে সাহায্য করার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানান।
কমিটি আশু উদ্দেশ্য হলে স্বাধীনতা তরান্বিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত সব বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে নির্দিষ্ট প্রোগ্রাম এবং কর্মধারা তৈরি করা।
তার বাংলাদেশের ভেতরে কোন একটি জায়গায় একটি মিটিং করে কমিটির ১৫ দফা প্রোগ্রাম গ্রহণ করেন এবং সকল দলকে এটা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করে।
কমিটির অন্য সাতটি দল হল কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ববাংলা কো-অর্ডিনেশন কমিটি, শ্রমিক কৃষক কর্মিসংঘ, বাংলাদেশ (হাতিয়ায় গ্রুপ) কমিউনিস্ট পার্টির পূর্ব বাংলা কৃষক সমিতির পূর্ব বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের পূর্ববাংলা বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন।
মাধ্যমে তারা স্বাধীনতা পাবেনা এবং তা করতে হলে নিরলসভাবে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
কমিটি প্রতিটি গ্রামে একটি সর্বদলীয় পিপলস লিবারেশন কাউন্সিল গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় । এর মাধ্যমে প্রতিটি গ্রামে রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও অন্যান্য দায়িত্ব নেয়া হবে এবং গ্রাম সুরক্ষা বাহিনী সংগঠিত করে জনগণের আদালতের মাধ্যমে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
এই কাউন্সিল সুদ সিস্টেম বন্ধ করার পক্ষে কাজ করবে। এবং যারা পাকসেনাদের সঙ্গে পৃষ্ঠপোষকতা করবে বা পাকিস্তানের চলমান চক্রের এজেন্ট হিসাবে কাজ করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবে।
এছাড়া তারা বাংলাদেশের যেসব নাগরিক দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে তাদের সম্পদ দেখাশোনা করবে।
ছোট গেরিলা স্কোয়াড করা হবে স্থানীয় কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র ও অন্যান্য যুবকদের নিয়ে যারা গ্রামের মধ্যে সংগঠিত হবে এবং বিচ্ছিন্নভাবে শত্রুদের ধ্বংস করবে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া অস্ত্র দিয়ে।
যারা স্বেচ্ছায় পাকিস্তান সরকার ও পাকিস্তানের বাহিনী বা তাদের এজেন্টদের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বা সামরিক সহযোগিতা করবে তাদের জাতীয় শত্রু হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির সিদ্ধান্ত যৌথ ভাবে আলোচনার মাধ্যমে নেয়া হবে।
প্রোগ্রামে বর্তমানে প্রচলিত “শিক্ষা নীতি এবং দুর্নীতিগ্রস্ত সংস্কৃতির প্রভাব” কে প্রতিস্থাপন করার প্রস্তাব গৃহীত হয়।