কালান্তর পত্রিকা
২৫ জুন ১৯৭১
মার্কিন অস্ত্রে বাংলাদেশে রক্ত ঝরানো চলবে না
৮ টি শরণার্থী শিবিরে কেলোগের সামনে মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভ
বনগাঁ, ২৪ জন- মার্কিন সরকারের শরনার্থী দপ্তরের প্রতিনিধি শ্রী ফ্রাঙ্ক কেলোগ আজ সীমান্ত অঞ্চলের শরনার্থী শিবিরগুলি পরিদর্শন করতে এলে কমপক্ষে ৮ টি স্থানে মার্কিন অস্ত্র সাহায্যের প্রতিবাদে এক বিরাট সংখ্যক জনতার বিক্ষোভের সম্মুখীন হন।
বিক্ষোভকারীরা তাঁর সামনে ‘খুনী ইয়াহিয়াকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ কর’, ‘দ্বি-মুখী নীতি বন্ধ কর’ ও ‘মার্কিন অস্ত্রে বাংলাদেশে রক্ত ঝরানো চলবে না’ প্রভৃতি শ্লোগানসহ বিক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে ইউএনআই জানিয়েছেন।
যশোহর রোড ও বাগদা রোডের বিভিন্ন স্থানে, বনগাঁ সদর হাসপাতালে ও মালঞ্চ শরনার্থী শিবিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রচন্ড বিক্ষোভ দেখানো হয়।
মালঞ্চ শিবিরে শ্রী কেলোগ উপস্থিত হওয়া মাত্র শরনার্থী্রা তাঁকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নে জর্জরিত করে তোলেন। দু’জন শরণার্থী তাঁকে সরাসরি প্রশ্ন করে জানতে চান,-তাঁর এখানে আসার উদ্দেশ্য কি। শরনার্থী দু’জন বলেন, যখন তোমার দেশ পাকিস্তানে অস্ত্র সরবরাহ করেছে তখন তুমি এখানে কোন উদ্দেশ্যে এসেছো?
প্রশ্নের জবাবে শ্রী কলোগের সহযোগী মার্কিন কনসাল জেনারেল হার্বার্ট বলেন যে, তাঁরা শরনার্থীদের জন্য আরও বেশী পরিমাণ সাহায্য দানের উদ্দেশ্যেই এখানে এসেছে।
শ্রী কেলোগ বনগাঁ সদর হাসপাতালে পৌছুলে সেখানেও তাঁকে সৈন্যদের গুলিতে আহত শরনার্থীরা রয়েছেন।
প্রসঙ্গতৎ উল্লেখযোগ্য যে, এই হাসপাতালে ইয়াহিয়ার সৈন্যদের গুলিতে আহত শরনার্থীরা রয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৈয়দ আলী আহসান বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে এক স্মারকলিপি পেশ করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জেন ডঃ টি হোসেন শ্রী কেলোগের সামনে ৪ টি অল্পবয়স্ক ছেলে মেয়ে হাজির করিয়ে তাদের অবস্থা দেখান।
এই ছেলেমেয়েদের চোখগুলি ইয়াহিয়ার সৈন্যের আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পরিশেষে শ্রী কেলোগের স্বীকার করতে হয়েছে যে, পূর্ববঙ্গের অভ্যন্তরে সাংঘাতিক কিছু একটা ঘটে গেছে।