হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, ৪ জুন, ১৯৭১
আশা ও বিভ্রান্তির মাঝে
লেখক: প্রান চোপড়া
যখন লু হাওয়া বয়ে যায় তখন যেমন মানুষের অপেক্ষা না করে উপায় থাকে না, তেমনি বাংলাদেশের শরনার্থীদেরও মিসেস গান্ধীর বক্তব্য অনুযায়ী মাস ছয়েক অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু লু হাওয়া বয়ে যাবার পর আসে শান্তির বারিধারা। এই ছয় মাস অপেক্ষার শেষে কি অপেক্ষা করছে?
মিসেস গান্ধী ২৪ মে তারিখে লোক সভায় যে ভাষন দিয়েছিলেন তা তাঁর আগের বক্তব্য থেকে কিছুটা অগ্রসর বলে ধরা যায়। তিনি যে পুর্ব বাংলা না বলে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন, সেটা দিয়ে হয়ত এমন বড় কিছু বোঝা যায় না। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে কড়া ভাব সুস্পষ্ট, যেখানে তিনি বাংলাদেশের দুঃখ দুর্দশার দিকে কেউ মনযোগ না দিলে তার পরিণতি এবং পাকিস্তান ভারতকে যে সমস্যায় ফেলেছে তা নিয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু তাঁর বক্তব্য শুনে বুঝার উপায় নেই যে তিনি কার কাছ থেকে এ ব্যাপারে কতটুকু মনোযোগ আশা করছেন। তাঁর ভয় জাগানো এই বক্তব্যর দুটো ব্যাখ্যা করা যায়, এক হচ্ছে যে ইয়াহিয়া খান চাপের মুখে পরে নরম হতে বাধ্য হচ্ছেন, এবং তাঁর ঝাঁঝালো বক্তব্য ভারতকে কিছু ক্রেডিট এনে দেবে, যা হয়ত এমনিতেই হবে, অথবা আসলেই গোটা দুনিয়া অস্বাভাবিক সময় নিচ্ছে বাস্তবতার প্রেক্ষিতে জেগে উঠতে এবং তাঁকে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য ভারতকে প্রস্তুত করতে হবে। কিন্তু সবচেয়ে সম্ভাব্য যে ব্যাখ্যটা, সেটাই তিনটির সবচেয়ে অপছন্দের, সেটা হচ্ছে যে যদিও সরকারের মধ্যে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত আলংকারিক বক্তব্য ছাড়া আমরা তেমন কোন জবাব পাইনি। এখনও পর্যন্ত আমরা সেই সম্ভাবনার সম্মুখীন হইনি, যেখানে ইসলামাবাদের ভদ্রলোকটি আভ্যন্তরীণ অথবা আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকবেন, এবং ভারতের সুরক্ষার দাবীতে মিসেস গান্ধীর কথিত সে ‘যে কোন উপায়’ অবলম্বন করতে বাধ্য হতে হবে।
ভারত পাকিস্তানের উপর আন্তর্জাতিক জাতিগোষ্ঠীর কাছ থেকে যে ধরনের চাপ দেখতে চায়, তা মূলত অর্থনৈতিক। নয়া দিল্লী এটা গভীরভাবে বিশ্বাস করে যে পাকিস্তান পুর্ব বাংলায় একটি রাজনৈতিক সমাধানে আসতে, অথবা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে, যদি তাদেরকে আন্তর্জাতিক পাওনা পরিশোধের ব্যাপারে কোন ধরনের ছাড় না দেওয়া হয়, এবং মার্চের শেষ পর্যন্ত যা দেওয়া হয়েছে, এর বাইরে যদি তাদেরকে কোন ধরনের সহায়তা না দেয়া হয় আগামি ছয় মাস। এর ফলে, বিশ্বাস করা হচ্ছে যে পশ্চিম পাকিস্তান মুক্তি ফৌজের বর্তমান যুদ্ধ সক্ষমতার বিপরিতে যে নুন্যতম যুদ্ধ চালাতে হবে সেটাও করতে পারবে না। বাকিটা ছেড়ে দিতে হবে ইসলামাবাদের সামরিক জান্তা, সেনাবাহিনী এবং উচ্চাভিলাষী রাজনীতিবিদদের মত পার্থক্যের উপর, যারা যুদ্ধক্লান্ত সেনা নায়করা ক্ষমতার নাটাই যতটুকু তাদের কাছে ছাড়তে রাজী, তারচেয়ে বেশি দাবী করবে।
এই দাওয়াই খাতাকলমে ঠিকই আছে। কিন্তু কোন দাওয়াখানা এই ওষুধ দেবে সেটা পরিস্কার না। ভারত যতটুকু অফিশিয়ালি জানে এবং দাতাগোষ্ঠীরাও যা নিয়ে একমত, সেটা হচ্ছে পুর্ব বাংলায় সব ধরনের সহায়তা দেয়া এখন বন্ধ আছে এবং আগামি কয়েক মাস, হয়তবা দুই বা তিন বছরেও সেসব চালু হবার সম্ভাবনা কম। কিন্তু এটাকে পশ্চিম পাকিস্তানের উপর দাতাগোষ্ঠীর বিরূপ ভাব প্রকাশের চেয়ে হয়ত পুর্ব বাংলায় চলমান গন্ডগোলেরই ফলাফল হিসাবে দেখা উচিত। আওয়ামী লীগের সাথে সেনাবাহিনীর শুরু হবার সাথে সাথে বিদেশি সরকারগুলো তাদের এখানে বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত নাগরিকদের এখানে থাকা নিরাপদ নয় বলে ধরে নেয়।এর ফলে আসতে আসতে বিদেশি কর্মচারিরা দেশ ত্যাগ করতে থাকে এবং তারা আগামী বেশ কিছুদের মধ্যে ফিরে আসবে বলে মনে হচ্ছে না। এর ফলে এই প্রকল্পগুলোর অর্থ সাহায্য স্থগিত হয়ে গেল। এর বাইরে, ভারতীয় কান বিদেশি অর্থসাহায্য বন্ধ হবার যতই গুজব শুনতে পাক না কেন, এখন পর্যন্ত কোন দেশের অর্থ সাহায্য দেবার অস্বীকৃতির নিশ্চিত খবর এখনও পাওয়া যায়নি, বরং যুদ্ধ শুরুর পরপরই রাশিয়ানরা জানিয়ে দিয়েছে যে তারা করাচীর কাছে একটা ষ্টীল মিল তৈরির কাজ থেকে সরে আসছে না।
ছবিটা হয়ত আরেকটু পরিস্কার হয়ে আসবে আগামি আগস্টে যখন পাকিস্তান এইড কনসোর্টিয়াম আলোচনার বসবে; তার আগে হয়ত কি হতে যাচ্ছে তার একটা আভাস পাওয়া যেতে পারে যখন জুলাই মাসে এই একই দেশগুলো আলোচনায় বসবে ভারতকে নিয়ে। কিন্তু একটা ব্যাপার প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়, এই কনসোর্টিয়ামের সদস্যরা এসব ব্যাপারে মূলত আমেরিকা আর ব্রিটেনের কাছ থেকেই নির্দেশনা নেবে, এবং এই দুটি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানকে দিয়ে যদি তাদের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক নীতি আন্দাজ করা যায়, তাহলে ভারতের উচিত হবে না এখানে বিশেষ কিছু আশা করা। এই দুই দেশেরই সাধারন জনগন এবং সরকার খুব ভালো করে জানে পুর্ব বাংলায় কি ন্যাক্কারজনক কাজ হয়েছে। ব্রিটিশ এবং আমেরিকান সংবাদমাধ্যম খুবই অকপটভাবে তুলে ধরেছে পরিস্থিতি, এমনকি যাদেরকে লোক দেখানো নিয়ন্ত্রিত ভ্রমনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্রমান দেয়ার জন্য যে সেখানে বর্বর আক্রমন হয়নি। তাদের এই অকপটতা নয়াদিল্লীর প্রশংসা কুড়িয়েছে, যেখানে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমকে সাধারণত সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা হয়। কিন্তু এত কিছুর পরেও লন্ডন কিংবা ওয়াশিংটনের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য এমনভাবে দেয়া হয় যাতে ইসলামাবাদ আহত না হয়, যাতে পরিস্কার বোঝা যায় তাদের নিজেদের স্বার্থে পাকিস্তানের সাথে, তাদের কাছে মূলত পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে, ভালো সম্পর্ক রাখা তাদের জন্য কত প্রয়োজনীয়।
বর্তমান অ্যাংলো-আমেরিকান মনভাবের সবচেয়ে ভালো উদাহরন ব্রিটিশ সরকার দিয়েছিল মে মাসের ২৫ তারিখে, যেদিন হাইজ অফ কমনসে তারা ঘোশনা দিয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের বিশেষ প্রতিনিধিদলকে ‘পুর্ব বাংলার ঘটনাবলী’ (এখানে ঘটনাবলী বলতে কি দলে দলে শরনার্থীদের দেশ ত্যাগ নাকি সামরিক সন্ত্রাস, নাকি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের আকাঙ্ক্ষাকে দমনের কথা বলা হচ্ছে, সেটা সুকৌশলে উহ্য রাখা হয়েছে) সম্পর্কে ব্রিটেনের শঙ্কার কথা অবহিত করা হয়েছে, এবং সেই সাথে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রতিনিধিদল যে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের “পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ সমস্যার দ্রুত রাজনৈতিক সমাধানের আনয়নের দৃঢ় ইচ্ছার উপর” জোর দিয়েছে সেটাকে ব্রিটেন স্বাগত জানিয়েছে। অন্য কথায় বলতে গেলে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান নিজেই নির্ধারন করতে পারেন সেই সমস্যার “সমাধান” কিভাবে হবে, যাকে তার দূতরা জোরগলায় “আভ্যন্তরীণ সমস্যা” হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
মাত্র কয়েকদিন আগেই ইয়াহিয়া খান স্বয়ং নিশ্চিত করেছেন যে তার “সমাধানে” আওয়ামী লীগের কোন স্থান হবে না, যদিও আওয়ামী লীগ আর পুর্ব বাংলার জনগণ যে সমার্থক, সেটা প্রমানিত। ইয়াহিয়া খানের একটি দৃঢ় বক্তব্য হচ্ছে যে তারা “শেখ মুজিবুর রহমানকে সামাল দিবে তাদের নিজেদের মত করে”, এবং আরেকটি হচ্ছে যে আওয়ামী লীগের সাথে কোন ধরনের আলাপ-আলোচনা নয়, এবং আরো একটি বক্তব্য হচ্ছে যে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের বড় ধরনের শাস্তি দিতে প্রস্তুত, যারা তার দৃষ্টিতে “অপরাধ করেছে” এবং তিনি যেহেতু বলেছেন যে শেখ মুজিব তাঁকে, দেশের প্রেসিদেন্টকে, গ্রেফতার করার ছক করেছে, তিনি নির্ঘাত শেখ মুজিবকে একজন অপরাধী হিসাবেই দেখবেন এবং সেভাবেই ব্যবস্থা নেবেন। তিনি অবশ্য আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্যদের সামনে একটি মুলা ঝুলিয়ে রেকেছেন, তিনি বলেছেন যে বিজয়িদেরকে ব্যক্তিগত ভাবে বিজয়ী ধরা হবে, আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে নয়, এবং এর ফলে আওয়ামী লীগের উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা তাদের উপর প্রযোজ্য হবে না, এবং যারা ২৫ মার্চের ঘটনাবলীর পর নিজেদেরকে যথেষ্ট পরিমানে সংশোধন করে নিতে পারবেন, তাদেরকে এই রাজনৈতিক সমাধানে জায়গা দেয়া হতে পারে। কিন্তু অন্যান্য পশ্চিম পাকিস্তানি নেতারাও ব্যাখ্যা করেছেন কিভাবে তাদেরকে জায়গা দেয়া যেতে পারে, সেটা হতে পারে “পুর্ব পাকিস্থানের পরিবর্তিত রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে” নতুন করে নির্বাচন করা, যেখানে সংখ্যালঘুর দায়িত্ব দেয়া হবে সংখ্যাগুরুদের হাতে। এদের সাথে ইয়াহিয়া খানের এত মিল, এবং ইয়াহিয়া খানের সাথে যুদ্ধংদেহি জেনারেলদের, যারা সামরিক জান্তাকে চালাচ্ছে, মতের এত মিল যে, পশ্চিম পাকিস্তানের হর্তাকর্তাদের মধ্যে মতানৈক্য আশা করা অনুচিত, যদি না এই বর্বর শাসক গোষ্ঠীর উপর বিদেশি অর্থ সাহায্য দেয়া বন্ধ করে চাপ না দেয়া হয়।
বিদেশি সরকারগুলো ভারতীয় দিকের শরনার্থি সমস্যা সম্পর্কে সীমান্তের ওপারের রাজনৈতিক সমস্যার চেয়ে বেশি সমঝদার হয়েছে। তারা প্রধানত সহানুভূতিশীল মনোভাবই দেখিয়েছেন। এতই সহানুভূতি তারা দেখিয়েছেন যে যেই সাড়ে তিন মিলিয়ন শরনার্থী ইতিমধ্যেই এসেছে, অথবা যে পাঁচ মিলিয়ন এখনও আসার অপেক্ষায় আছে, তাদের হিসাবে নিলেও ভারতের জন্য অর্থনৈতিক বোঝার ব্যাপারটি এখন প্রায় অবাস্তব মনে হচ্ছে। আমরা প্রতিবছর আমাদের জনসংখ্যার সাথে পনের মিলিয়ন মানুষ যোগ করি, এবং তাদেরকে বাচিয়ে রাখার জন্য কোন বিশেষ সহায়তার আশায় থাকি না। যদি আমরা রিলিফ ম্যানেজমেন্টে মাঝারি মানের দক্ষতাও দেখাতে পারি, তাহলেও আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে আমরা এই শরনার্থীদের কেবল মাস ছয়েক না, হয়ত কয়েক বছরও রাখতে পারবো। কিন্তু তারা শরনার্থি অবস্থা থেকে কবে মুক্তি পাবে সেটা অনিশ্চিত। শরনার্থী অবস্থা থেকে তাদেরকে হয় পুনর্বাসিত করতে হবে নয়ত তাদেরকে তাদের দেশে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করে দিতে হবে, কিন্তু এই দুই পন্থার কোনটিই নিশ্চিত নয়, এবং অনিশ্চিতই থাকবে যতক্ষন না পর্যন্ত বৃহৎ শক্তিগুলো পাকিস্তানের ব্যাপারে তাদের নীতি পরিবর্তন করে, অথবা ভারত স্বাধীনভাবে তাদের পক্ষে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। আসলে সবাই ভারতীয় অংশের সমস্যাগুলো নিয়ে কথা না বলে পুর্ব বঙ্গের দিকের সমস্যা নিয়ে যতদিন সোচ্চার না হবে, ততদিন পর্যন্ত শরনার্থীরা তাদের দেশে ফিরে যাবার মত অবস্থা তৈরি হবে না।
ভারত যতই চেষ্টা করুন না কেন শরনার্থীদের “বিশ্বাসযোগ্য নিশ্চয়তা” দিতে তাদেরকে ফিরে যাবার জন্য, তাদের কাছে সেটা কখনই গ্রহণযোগ্য হবে না যদি সে নিশ্চয়তার দায়িত্বে থাকে ইয়াহিয়া খান, অথবা ঢাকায় তার জোগাড় করা কোন পুতুল শাসক।এটা বিশেষত দুই মিলিয়ন হিন্দুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যারা দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়েছে বা হচ্ছে, যাদের জীবিকার অবলম্বন বিশেষত স্থাবর সম্পত্তি কেড়ে নেয়া হয়েছে এবং মুসলিম লীগের সদস্যদের ভাগাভাগি করে দেয়া হয়ে গেছে, সেসব কোনভাবেই আওয়ামী লীগ বিরোধী কোন সরকার এসে ফিরিয়ে দেবে না। অবশ্য সেসব কথা তখনই আসবে যদি কখনো তারা ফিরে যেতে আদৌ পারে। এক লম্বা এবং কষ্টদায়ক পদ্ধতিতে ইয়াহিয়া খান বেছে নেবে কোন কোন শরনার্থিদের তারা ফিরিয়ে নেবে, ততদিনে পৃথিবী এ ব্যাপারে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে, এবং খুবই সীমিত সংখ্যক লোকই আসলে সীমান্ত পেরিয়ে ফেরত যেতে পারবে। কিন্তু যা হচ্ছে তা হল যে রাজনৈতিক সমস্যাটা প্রতিদিনই শরনার্থিদের মানবিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার চাপে পেছনে পরে যাচ্ছে; সিনেটর কেনেডির সর্বশেষ বক্তব্য যা তিনি সেক্রেটারি অফ স্টেট রজার্সের কাছে লেখা চিঠিতে দিয়েছেন, এবং তার আগের বক্তব্যের মধ্যকার পার্থক্য খুবই আশংকাজনক। সেদিকে যদি দৃষ্টিপাত না করা হয়, তাহলে রাজনৈতিক সমস্যাটা থেকেই যাবে এবং সেকারনেই থেকে যাবে মানবিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যাটাও। এটা একটা বিশাল ভুল হবে যদি ধরে নেয়া হয় যে শেষের সমস্যাটার সমাধান হয়ে যাবে আগের সমস্যাটার সমাধান না করেই। হয় ভারতকে এই রাজনৈতিক সমস্যার প্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, অথবা দাতা দেশগুলোকে তারা বর্তমানে যতটুকু সচেতনতা এবং উদ্দেশ্যপুর্নভাব দেখাচ্ছে তার চেয়ে আরো বেশি দেখাতে হবে, যদিনা তারা চায় এটা বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য চিরস্থায়ী সমস্যায় পরিনত হোক।