You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.28 | কালান্তর পত্রিকা, ২৮ মে,১৯৭১, অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতির দাবিতে পৌরসভার প্রস্তাব - সংগ্রামের নোটবুক

কালান্তর পত্রিকা
২৮ মে,১৯৭১
অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকৃতির দাবিতে পৌরসভার প্রস্তাব

কলকাতা, ২৬ মে- বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামের সমর্থনে আজ কলকাতা পৌরসভার বিশেষ অধিবেশনে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবে “অনতিবিলম্বে বাংলাদেশের সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ও তার সরকারকে স্বীকৃতি এবং অস্ত্রশস্ত্রসহ সর্বপ্রকার কার্যকরী সাহায্য” দেবার জন্য ভারত সরকারের কাছে দাবি জানানো হয় এবং “পশ্চিমবাংলার বিধানসভায় বাংলাদেশের স্বীকৃতিদান সম্বন্ধে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত ভারত সরকার তাহা কার্যে রূপান্তরিত না করায় এই প্রস্তাবে গভীর ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করা হয়। “প্রস্তাবকে কার্যকরী করার জন্য ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে” পশ্চিম বাংলার জনগণকে প্রস্তাবে আহবান জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবে “বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীগণকে যথার্থ সাহায্য ও সেবা করার উদ্দেশ্যে মেয়রের নেতৃত্বে একটি সাহায্য ভান্ডার খোলার” কথা বলা হয়।

প্রস্তাবের পক্ষে একমাত্র আরএসসি ছাড়া আর সমস্ত দলের সদস্য ভোট দেন।

সভার শুরুতে বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের বিবরণসহ মেয়র শ্রী শ্যামসুন্দর গুপ্ত একটি বিবৃতি দেন। পরে মেয়রের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি মেয়র শ্রী পান্না লাল দাস সভার কাজ পরিচালনা ও মেয়রের আসন থেকে মূল প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।

প্রস্তাবটি সমর্থন করে অল্ডারম্যান শ্রী কমলাপতি রায় (সিপিআই) বলেন, যে বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির প্রশ্নটি হল প্রধান বিষয়; এবং বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের ভাগ্য জড়িত থাকা স্বত্বেও বাংলাদেশের সরকারকে স্বীকৃতি না দেওয়ার পক্ষে পার্লামেন্ট যে সমস্ত যুক্তি দেখান হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। সিপিএম সদস্যরা তাঁদের বক্তৃতায় মূল প্রস্তাবকে সমর্থন করলেও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার সীমান্ত বেড়া তুলে নেবার জন্য দাবি করেন। এসইউসি এবং কংগ্রেস সদস্যরা তাদের বক্তৃতায় মূল প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। প্রস্তাবের সমর্থনে সবশ্রী শিবকুমার খান্ন, ডাঃ কে পি ঘোষ, শ্যামল দত্ত প্রমুখ পৌরপিতাগণ বক্তৃতা দেন।

প্রস্তাবের তিনটি ধারাই আর এসপি সংশোধনী দেয়। অপর একটি ধারায় সমস্ত সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এদের এইসব সংশোধনীর পক্ষে শুধু নিজেদের ৮ জন সদস্য ভোট দেন। সংশোধনী পরাজিত হলে দলের সদস্যরা মূল প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত থাকেন।

সংশোধনীগুলোতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতির জন্য ১৫ দিন সময়সীমা বেঁধে দিতে চাওয়া হয় ও স্বীকৃতি না দিলে ১৫ দিন পরে গণ আন্দোলন করার কথা বলা হয়। সংশোধনী উত্থাপন করে আরএসপি সদস্য অন্য সব রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই বিষোদগার করেন।