You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.18 | আনন্দবাজার পত্রিকা, ১৮ মে, ১৯৭১, শরণার্থীদের ৬ মাস সাহায্য দিতে লাগবে ২০০ কোটি টাকা- রাষ্ট্রপুঞ্জ দল সমীপে ভারত - সংগ্রামের নোটবুক

আনন্দবাজার পত্রিকা
১৮ মে, ১৯৭১
শরণার্থীদের ৬ মাস সাহায্য দিতে লাগবে ২০০ কোটি টাকা
রাষ্ট্রপুঞ্জ দল সমীপে ভারত
বিশেষ সংবাদদাতা

নয়াদিল্লী, ১৭ মে- শ্রী চারলস মেস এর নেতৃত্বে রাষ্ট্রপুঞ্জ দলটি পূর্বাঞ্চলে “ব্যাপক সফর” করে বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থী সমস্যা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করে এসেছেন। আগামীকাল তাঁরা ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। বুধবার তাঁরা জেনিভার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন এবং সেখানে পৌঁছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যথাস্থানে তাঁদের রিপোর্ট পেশ করবেন।

আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে শ্রী মেস জানান যে, ভারত সরকার জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের (সংখ্যা আপাতত তিরিশ লক্ষ ধরে নিয়ে) ছয় মাস ধরে সাহায্য দিয়ে খরচ পড়বে দু’শ কোটি টাকা। ভারত সরকার মনে করেন যে, এ সমস্যা “অস্থায়ী”। ছয় মাসের মধ্যে বাংলাদেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং এই শরণার্থীরা সকলেই স্বস্থানে প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন।

শ্রী মেস বলেন, “শরণার্থীরা নিজের নিজের বাড়িতে ফরে যাবেন- ভারত প্রধানমন্ত্রী এই আশার আমরাও অংশীদার।”

দলের অন্যতম সদস্য শ্রী টমাস জামিসন বলেন যে, ভারত সরকার ঠিক ছ’মাসের জন্য সাহায্য চেয়েছেন। ওই মেয়াদের বাইরে কোন আলোচনায় যেতেই ভারত অনাগ্রহী। ভারত সরকার বিশ্বাস করেন যে, ছ’মাসের মধ্যে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যাতে শরণার্থীরা নিজেদের দেশে দিরে যেতে চাইবেন। “আমরা এই আশাবাদ সমর্থন করি।”

দলের সদস্যরা “বাংলাদেশ” বা পূর্ব পাকিস্তান” দুটি শব্দই এড়য়ে চলেন বেশ সতর্কতার সঙ্গেই। শরণার্থীদের প্রসঙ্গে তাঁরা “বাড়ি”, “দেশ”, “নিজেদের জায়গা” প্রভৃতি শব্দ ব্যবহার করেন। ফিরে গিয়ে কি সুপারিশ তাঁরা করবেন তার কোন আভাস দলটি দেননি। তবে শ্রী মেস বলেন যে, সমস্যাটি “বিরাট” এবং ভারত সরকার “মানবিক কারণেই” শরণার্থীদের সাহায্য করছেন এবং এটা প্রসংশনীয়।

কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী শ্রী আর কে খাদিলকর এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন যে, সরকার ছ’মাসের জন্য সাহায্য চেয়েছেন। তবে কেন ছ’মাসের ভিত্তিতে সমস্যাটি মোকাবিলার কথা ভাবা হচ্ছে তা তিনি ব্যাখ্যা করেন নি।