অমৃতবাজার পত্রিকা
১২ মে ১৯৭১
চট্টগ্রামে পাক বর্বরতা
চট্টগ্রাম, মে ১১ : গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ববঙ্গের এই বন্দরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যাপক শেলিং ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সাধারণ জনগণের উপর ব্যাপক হত্যাকান্ড পরিচালিত হয়। খবর – এ.পি.
সেনাবাহিনী এখানে নিয়ন্ত্রণে আছে কিন্তু সৈন্যরা কক্সবাজারের গুরুত্বপূর্ণ শহরটি দখল করে নিয়েছে। মাত্র পাঁচ দিন আগে ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অন্যান্য অঞ্চলে তারা মুক্তি ফৌজের মুখোমুখি হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি তবে সেখানে শ্রমিকের ওভাবে কার্গো জমে আছে যা দিয়ে আভ্যন্তরীণ পরিবহনে ব্যাবহ্রিত হয়।
চট্টগ্রামের শিল্পপতিরা বলেছেন, এখানকার অর্থনীতি ও কার্যকলাপ পুনরুদ্ধারের জন্য অনেক মাস লাগবে। ইস্পাহানি জুট মিলে ৭৫০০ শ্রমিকের মধ্যে মাত্র ২০ জন কর্মী তাদের পদে ফিরে আসেন এবং ম্যানেজার বলেন, “সবকিছুই কোথায় আছে সেটা দেখতে ছয় সপ্তাহ লাগবে”।
চট্টগ্রাম বন্দরে ডিসেম্বরে বন্দুকধারীররা একটি পাট ভর্তি ডকার জব্দ করেছে। শিপাররা অনুমান করেন যে বন্দরে ৪০০০০০ টন মালামাল বহন করা হতো, যা সাধারনত প্রতি মাসে ৩০০০০০ টন হ্যান্ডেল করতে পারে। নদীর অভ্যন্তরে এবং বাইরে পণ্য সরানোর একমাত্র উপায় হল নদী, যদিও এটি সাধারণত ট্র্যাফিকের ২৫ শতাংশ পরিচালনা করে।
অভ্যন্তরীণ জাহাজের ক্ষমতা বৃদ্ধি প্রণয়ন করার জন্য কোন পরিকল্পনা এখনো নেয়া হয়নি – বলেন শিপার।
চারপাশে পাহাড় সমৃদ্ধ সুন্দর গার্ডেন সিটিতে নির্মম যুদ্ধ সর্বত্র চলমান।
চট্টগ্রাম ছিল ছয় বিদেশী সাংবাদিকের চার দিনের সফরের সর্বশেষ স্টপ। ২৬ শে মার্চের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে এরাই প্রথম সংবাদদাতা যাদের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এটি পূর্ববাংলায় কয়েক ডজন শহর ও শহরগুলির প্যাটার্ন প্রায় একই রকম। কুমিল্লাতেও সংবাদদাতারা দেখেছিলেন যে, ক্ষতি হয়ত কম ছিল কিন্তু পরিবেশ উত্তেজনাময় ছিল।
কুমিল্লা, যেটি ভারতীয় সীমান্ত বরাবর একটি ঘনবসতিপূর্ন এলাকা – যেখানে সৈন্যরা ব্যাপকভাবে আটমেটিক অস্ত্র সহ টহল দিচ্ছে।