স্টেটসম্যান পত্রিকা
২৮ এপ্রিল, ১৯৭১
ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মচারিরা অন্তরীন
দিল্লি কূটনৈতিকদের ফিরিয়ে নেবার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে
নয়াদিল্লি – ২৭ এপ্রিল- ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও খারাপের জন্য তার সাম্প্রতিক পদক্ষেপে ইসলামাবাদের সামরিক জান্তা কার্যত ইন্ডিয়ান হেড অব মিশন জনাব কে সি সেন গুপ্ত সহ ঢাকায় ভারতীয় উপ হাই কমিশনের কর্মীদের কার্যক্রম বন্ধ করতে বলেছেন। – ইউএনআই এবং পিটিআই রিপোর্ট।
ভারত সরকার এই পদক্ষেপটি ইসলামাবাদের প্রশাসনের সাথে দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছে। ইসলামাবাদ প্রশাসকের কাছে উল্লেখ করা হয়েছে যে এটি আগে দেওয়া আশ্বাসের বিপরীত এবং ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন করছে।
পাকিস্তানি হাইকমিশনারের কাছে একটি শক্তিশালী বিক্ষোভ নোট ব্যক্তিগতভাবে জনাব সাজ্জাদ হায়দারকে পাঠানো হয়েছে – পাঠিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনাব এ কে রায়।
আজ রাতের বৈঠকে জনাব রায় পাকিস্তান হাইকমিশনারের কাছে ভারতীয় কর্মচারিদের দ্রুত ঢাকা থেকে ফিরিয়ে নেয়াড় ব্যাপারে কিছু প্রস্তাব দেবে। অফিসিয়াল ভাবে বলা হয়েছে যে এসব পদক্ষেপ প্রক্রিয়াকে সহজিকরন করার জন্য দেয়া হবে।
জনাব রায় জনাব হায়দারকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের সরকার থেকে এই প্রস্তাবের একটি উত্তর দিতে বলেছেন।
এখানকার কর্মকর্তারা আশা করছেন যে পাকিস্তান ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দেবেন।
এখানকার পর্যবেক্ষকরা মনে করেন যে কলকাতায় পাকিস্তানি ডেপুটি হাইকমিশনের কর্মীদের ব্যাপারে ভারত একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বাধ্য হবে যদি ঢাকায় ভারতীয়দের নিয়ে আসার ব্যাপারে তাদের পদক্ষেপ না গ্রহণ করা হয়।
সরকার কর্তৃক পূর্ব অনুমতি ছাড়া ভারতে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বাইরে যাবার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেবে নয়াদিল্লি দরকার। এর আগে ভারতীয় হাইকমিশনের একজন কূটনীতিক মিসেস সেন গুপ্ত এবং একজন কূটনীতিককে কুরিয়ারকে করাচী থেকে নয়া দিল্লি যাবার অনুমতি দেয়নি পাকিস্তান।
এখানে একজন বিদেশী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, সরকার ক্ষোভের সাথে শিক্ষা গ্রহণ করেছে অ তারা উদ্বিগ্ন যে ঢাকায় তাদের মিশন বন্ধ হবার সাথে সাথেই গতকাল থেকে ডেপুটি হাই কমিশনার, তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের বাসভবনে গৃহবন্দি আছেন।
এদিকে ইসলামাবাদে একজন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র এটাকে ‘সম্পূর্ন মিথ্যা’ বলে মিসেস গুপ্তার মর্যাদাহানির অভিযোগকে অস্বীকার করেন।
রেডিও পাকিস্তানে মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, মিসেস সেন গুপ্ত ২১ এপ্রিল করাচী বিমান বন্দরে “ভুল পরিচয়” এর কারণে করাচী থেকে নয়াদিল্লী যেতে পারেননি। কিন্তু বিষয়টি আধা ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করা হয়েছিল – মুখপাত্র বলেন।