শেখ মুজিবরের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা সরকার গঠিত
মুক্তি সংগ্রাম নব পর্যায়ে উন্নীত: স্বীকৃতির সংগ্রাম
দুর্বার কর
আগরতলা, ১৩ এপ্রিল কঠিন সংগ্রামে লিপ্ত বাংলার মুক্তি সংগ্রামীরা মুহুর্মুহু গােলা বৃষ্টি, হত্যা ও ধ্বংসলীলার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে স্বাধীন বাংলা সরকার গঠনের কাজ সম্পন্ন করেছেন। আজ সকাল ৯টায় এই সরকারের কর্ণধারগণের নাম ঘােষিত হয়েছে। স্বাধীন বাংলার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন শেখ মুজিবর রহমান। তাজউদ্দিন হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উপরাষ্ট্রপতি হয়েছেন- সৈয়দ নজরুল ইসলাম। মন্ত্রিসভার সদস্যবর্গের মধ্যে আছেন ক্যাপ্টেন মনছুর আলী, খন্দকার মুস্তাক আহমদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান। সিদ্ধান্ত হয়েছে- যৌথ নেতৃত্বে এই মন্ত্রিসভা পরিচালিত হবে।
বিপ্লবী বাংলার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহম্মদ- মুক্তিকামী বাংলার জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন: শত শহীদের রক্তদান ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে এক নতুন বাংলা জাতি জন্ম নিয়েছে। হাজার হাজার শহীদের এই আত্মবলিদানের ঘটনা মানব ইতিহাসে সর্বকালের মুক্তি সংগ্রামের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য এই যুদ্ধ চলতে থাকবে যতদিন পর্যন্ত না এই দেশ শত্রু সৈন্য মুক্ত হয়।
এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে হাজার হাজার উৎসুক জনতা উল্লাসে মেতে ওঠেন। তারা বলতে থাকেন এখন ভারত সরকারের স্বীকৃতি আদায় করার জন্য ব্যাপক গণআন্দোলন গড়তে হবে। এই বিপ্লবী সরকারকে সর্বপ্রকার সাহায্য দেয়ার মধ্য দিয়েই স্বৈরশাসক ইয়াহিয়ার গণহত্যার সকল ষড়যন্ত্র অতি দ্রুত স্তব্ধ করে দিতে হবে। জয় বাংলা জয় বাংলাদেশের বিপ্লবী জনগণ শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-যুবক সৃষ্টিকামী মৃত্যুঞ্জয়ী নরনারী।
সূত্র: দেশের ডাক
০৬ এপ্রিল, ১৯০৭১
০২ বৈশাখ, ১৩৭৮