বাঙলাদেশে ৫ জন মারােয়াড়ী নারীর জহরব্রত
নিজস্ব প্রতিনিধি। জলপাইগুড়ি, ২৪শে জুন–পাকসৈন্যদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার আশংকায় পাঁচজন মারােয়াড়ী মহিলা জহরব্রত করে প্রাণ বিসর্জন দেন। | সৈয়দপুরের এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানান শ্রীরামলাল আগরওয়ালা। তিনি ঐ পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য যিনি ভারতে পৌঁছতে পেরেছেন।
তিনি জানান যে, তাঁকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের দু‘মাস আটক রেখে ক্রীতদাসের কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
সৈয়দপুরের সড়ক ও সেতু মেরামতের কাজে তাঁদের নিয়ােগ করা হয়েছিল। ১৩ই জুন পাক সৈন্যরা ৩০০ জন বাঙ্গালী ও মারােয়াড়ীকে একটি ট্রেনে উঠতে বাধ্য করে। পরিবারের মহিলাদের ঐ ট্রেনের আর একটি কামরায় তােলা হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর ট্রেনটিকে থামানাে হয়। তখন পাক সৈন্যদের সহায়তায় বেশ কিছু গুন্ডা ট্রেনটিকে আক্রমণ করে এবং পুরুষদের হত্যা করতে থাকে। রেল লাইনের পাশে কতকগুলি ট্রেঞ্চ কাটা ছিল। মৃতদেহগুলি সেখানে নিক্ষেপ করা হয়। | তারপর গুন্ডা ও পাক সৈন্যদল মহিলাদের কামরার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। মহিলারা আর্তনাদ করে ওঠেন। কিন্তু তাঁদের সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে নি। তখন সতীত্ব রক্ষার জন্য এই মহিলারা শাড়ীতে আগুন লাগিয়ে প্রাণ বিসর্জন দেন। মা, দু’বােন, বউদি ও ভাইঝির এভাবে প্রাণ দেওয়ার কথা শ্রীরামলাল আগরওয়ালা জানান।
তিনিই ঐ পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য যিনি কোন প্রকারে নিশচিত মৃত্যুর হাত থেকে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন।
২৫ জুন ‘৭১
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা