You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.01 |সপক্ষে- ফ্রেডা ব্রাউন | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

সপক্ষে– ফ্রেডা ব্রাউন

“লড়াইয়ের অস্ত্র চাই, আমরা চাই শেখ মুজিবর রহমানের মুক্ত।” প্রত্যেকের মুখে দাবি ‘ইয়াহিয়া খানের পাক বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে হবে, বাঙলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করে নিতে হবে। জনগণ সকল দেশপ্রেমিক পার্টি ও সংগঠনের ঐক্যের জন্য উনখ যাতে বাঙলাদেশের সগ্রামে ঝাপিয়ে পড়তে ব্যগ্র সবাইকে মুক্ত রণনীতি ও কমান্ডের মাধ্যমে ঠিকপথে পরিচালিত করা যায়।”
ভারত যেভাবে শরণার্থীদের কঠোর শ্রমসাধ্য দায়িত্ব নিজের কাঁধে বহন করেছে “সেভাবে আর কোনাে রাষ্ট্র অনুরূপ সমস্যা মােকাবেলা করতে পারত কিনা”- যে বিষয়ে শ্রীমতি ব্রাউনের যথেষ্ট সন্দেহ। কলকাতা জেলা মহিলা সমিতি লবণত্রদে শরণার্থীদের যেভাবে সাহায্য করেছেন উনি তার সপ্রশংস উল্লেখ করেন। “কিন্তু এ-মুহূর্তে বিশ্ব জনমতকে বাঙলাদেশের সপক্ষে সংগঠিত করতেই হবে।… বিশ্বের জনগণকে এই সমস্যার এমন এক রাজনৈতিক সমাধান দাবি করতে হবে যাতে শরণার্থীরা সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে দেশে ফিরে যেতে পারেন। ইতিমধ্যে, তারা যাতে খেয়ে পরে যথাযথভাবে বাঁচতে পারেন সে-ব্যাপারে বিশ্বকে সহায়তা করতে হবে।”

মুক্তিবাহিনীকে অস্ত্র দিতে হবে
শ্রীমতি ব্রাউনের দৃঢ় অভিমত, “তাদের দেশপ্রেমিক লড়াই চালিয়ে যাবার জন্য মুক্তিবাহিনীকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করতে হবে এবং বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র খাদ্য-বস্ত্র দিতে হবে।”
উনি বলরেন, ইতিপূর্বে শরণার্থীদের জন্য পৃথিবীর সকল দেশ থেকে মানবিক সহায়তা পাঠাবার ডাক দিয়েছিল আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক নারী ফেডারেশন। “আমি এখন ফেডারেশনের ব্যুরাে বৈঠকে যােগ দেবার জন্য বালিন যাচ্ছি। সেখানে বাংলাদেশ থেকেও দুজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। ঐ বৈঠকে আমি বাঙলাদেশ সম্পর্কে রিপোের্ট পেশ করব- শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রেরণের দাবি জানান, যাতে নারী সংগঠনগুলাে তাদের বিভিন্ন দেশের সরকারকে বাঙলাদেশের স্বীকৃতি সরকারকে বাঙলাদেশের স্বীকৃতি দানের বিষয়ে বাধ্য করতে পারে তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্ট করব। আমার বিশ্বাস ঐ বৈঠকের পরই বিশ্বব্যাপী নারী সমাজ মুজিবের মুক্তি বাংলাদেশ থেকে পাকবাহিনীর প্রত্যাহার এবং নিপীড়ন বন্ধ করা তথা বাঙলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সােচ্চার হয়ে উঠবেন।”
জনগণের দৃঢ় মনােবলে মুগ্ধ
শ্রীমতি ব্রাউন শরণার্থী ও মুক্তিযােদ্ধাদের মনােবলে বিশেষভাবে মুগ্ধ। “তাদের রাজনৈতিক চেতনা, যুদ্ধ করার দৃঢ়তা আমার অভিভূত করেছে। যেখানেই গিয়েছি তা সে শরণার্থী শিবিরেই হােক আর তরুণ মুক্তি যােদ্ধাদের মধ্যে হােক, সর্বত্র শুনেছি প্রতিটি বাঙলা এখন সৈনিক।

সূত্র: কালান্তর, ১.১১.১৯৭১