বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র – প্রথম খণ্ড
শিরোনামঃ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলার প্রস্তাবিত কাঠামো
সুত্রঃ ইন রেট্রস্পেকশনঃ আবুল হাশিম। পৃষ্ঠা – ১৫৮
তারিখঃ ২৩শে মে, ১৯৪৭
নীচে শরৎ চন্দ্র বোস এবং আমার সাক্ষরকৃ্ত সম্ভাব্য চুক্তির খসড়া বিধৃত হলো-
১। বাংলা একটি স্বাধীন রাস্ট্র হবে। স্বাধীন বাংলা রাস্ট্র ভারতের অন্যান্য অংশের সাথে সম্পর্ক কেমন হবে তা নিজে সিদ্ধান্ত নেবে।
২। স্বাধীন বাংলার সংবিধানে যৌথ নির্বাচকমণ্ডলী ও প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকারের ভিত্তিতে এবং হিন্দু, মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাতে আইনসভার আসন সংরক্ষণ সাপেক্ষে আইসভা নির্বাচনের সু্যোগ থাকবে। হিন্দু এবং নিম্নবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে আসন সংখ্যার ভাগ হবে তাদের নিজ নিজ গোত্রের জনসংখ্যার অনুপাতের ভিত্তিতে অথবা দুই পক্ষের সম্মতিক্রমে অন্য কোন পদ্ধতিও অবলম্বন করা যেতে পারে। নির্বাচকমন্ডলী হবে একাধিক এবং ভোট হবে সুষম ভাবে বন্টিত। যে প্রার্থী নির্বাচনে তার নিজের জনগোষ্ঠীর সংখ্যা গরিষ্ঠ ভোট পাবে এবং অন্যান্য জনগোষ্ঠী শতকরা ২৫ ভাগ ভোট পাবে, তিনিই নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে ঘোষিত হবেন। যদি কোন প্রার্থীই এই দুই শর্ত পুরণ করতে না পারেন সেক্ষেত্রে যে প্রার্থী তার জনগোষ্ঠীর সর্বাধিক ভোট পাবে সেই নির্বাচিত হিসেবে বিবেচিত হবেন।
৩। মহামান্য সরকার এতদ্বারা ঘোষনা করছে যে, স্বাধীন বাংলা রাজ্যের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুমোদিত হলো এবং বাংলা বিভাজিত হবে না, বর্তমান বাংলার মন্ত্রীসভা বিলুপ্ত ঘোষিত হলো এবং সমান সংখ্যকমুসলমান ও হিন্দু সদস্যদের সমন্বয়ে (নিম্ন বর্ণের হিন্দু সম্প্রদায় সহ) একটি নতুন অন্তর্বর্তী মন্ত্রণালয় গঠিত হবে তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ এর মধ্যে বিবেচিত হবে না। নব গঠিত মন্ত্রণালয়ের প্রধানমন্ত্রী হবেন একজন মুসলিম ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিন্দু।
৪।নতুন সংবিধানের অধিনে পূর্ণাঙ্গ আইনসভা এবং মন্ত্রণালয়ের চুড়ান্ত বাস্তবায়ন পর্যন্ত দেশের সেনাবাহিনী এবং পুলিশ সহ অন্যান্য পরিষেবায় হিন্দু (নিম্ন বর্ণের হিন্দু সহ) এবং মুসলমানদের সমান ভাগ থাকবে। সকল পরিষেবায় লোক নিয়োগ করবে বাংগালীরা।
৫। আইনসভার মুসলিম এবং অমুসলিম সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত ৩০ সদস্যের একটি গণপরিষদ গঠিত হবে যাতে মুসলিম থাকবেন ১৬ জন, হিন্দু ১৪ জন এবং এতে কোন ইউরোপীয় থাকবেন না।
আই, উডবার্ন পার্ক (স্বাক্ষরিত)
কলকাতা শরৎ চন্দ্র বোস
২০শে মে,১৯৪৭ আবুল হাশিম
সূত্র-বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র
Posted by=শারফিন আলম