You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.07 | দ্যা গার্ডিয়ান,লন্ডন, ৭ই মে,১৯৭১ বিশ্বের সাম্প্রতিকতম শরনার্থী - সংগ্রামের নোটবুক

দ্যা গার্ডিয়ান,লন্ডন, ৭ই মে,১৯৭১
বিশ্বের সাম্প্রতিকতম শরনার্থী

পূর্ব পাকিস্তানে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের রুক্ষ সামরিক কর্মের প্রভাব সহ্যসীমার বাহিরে। তার সামরিক বাহিনী তারই দেশের অনেক মানুষের মৃত্যুর কারন। আর এই শক্তি প্রদর্শনের প্রভাবে শরণার্থী হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। কয়েক হাজার মানুষের জীবন বিপন্ন ক্ষুধা এবং আশ্রয়স্থলের অভাবে। ভারতীয় সুত্রমতে, নিজেদের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যাসহ প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ ভারতে চলে গিয়েছে। সন্দেহাতীতভাবেই কিছু বাংলাদেশ সৈনিক সেনাবাহিনী থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় খুঁজে যাচ্ছে। কিন্তু এদের মধ্যে বেশিরভাগ সাধারন মানুষই আশ্রয় নিচ্ছে এই আশা নিয়ে যে তারা আবার ফিরে যাবে এবং আগের মতো বসবাস করবে। এদিকে ভারত, যারা উদ্বাস্তুদের কারনে বিপাকে, রাজনৈতিক দন্দে লিপ্ত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান নিয়ে।উন্নত বিশ্বকে এই অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা নিরসনে এগিয়ে আসতে হবে এবং বন্যার আগেই খাবার এবং আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

ভারতে অবস্থানরত শরণার্থীদের জন্য সবচেয়ে বেশি করে ত্রানের প্রয়োজন। সবচেয়ে অর্থহীন হচ্ছে এই যে, যে ভারত তাদের নিজেদের বিশাল জনগোষ্ঠী এবং এই শরণার্থীদের নিয়ে বিপাকে, সেই ভঙ্গুর অর্থনীতির ভারতকেই অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। এমনকি সীমান্তের পাশেই বাড়ি থাকায় পরিস্থিতি শান্ত হলেই বাড়ি যেতে ইচ্ছুকদের ফেরত যাওয়া নিয়ে ভারত সরকারকে যাতে সেই ধকল সইতে না হয় সেই জন্য দ্রুত আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রয়োজন।

সবচেয়ে বেশি অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে পূর্ব পাকিস্তানে, যেখানে তারা সবসময় থেকে এসেছে। উদাহরন স্বরূপ যাদের পক্ষে সীমান্ত অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি। গত নভেম্বরের সাইক্লোনে যাদের ফসল ভাল হয়নি বলে পাকিস্তান সরকার সাহায্য দিবে বলেছিল, হয়তোবা তাদের অবস্থাই সবচেয়ে করুণ। তাদের এই দুরাবস্থা ছরিয়ে পড়ছে যুদ্ধের কারনে স্থানচ্যুত হবার ফলে যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অপ্রতুল। এখন যদি খাবার সরবরাহ করা কষ্টকর হয়, বৃষ্টি শুরু হলে তা আরও বেশি কষ্টকর হবে। আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ খুব দ্রুত প্রয়োজন এই ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে এবং প্রতিরোধ করতে। পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ভাগা মানুষের জন্য এই অবশ্যই খাবার এবং আশ্রয়স্থল সরবরাহ করা প্রয়োজন।